অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা অটিজম হচ্ছে শিশুদের মস্তিষ্কের বর্ধনমূলক বা বিকাশমূলক বৈকল্যের একটি সমষ্টিগত অবস্থা, যা প্রধানত মাতৃগর্ভকালীন সৃষ্টি হয় ও জন্মের পর প্রাথমিক কিছু উপসর্গ দিয়ে এই রোগের লক্ষণের প্রকাশ ঘটে। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ভাষার সমস্যা’। ভাষা হচ্ছে যোগাযোগের অর্থাৎ মনের আবেগ ও চিন্তা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের মৌলিক আবেগ–আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ মনোগত অবস্থা, যেমন চিন্তা, অভিপ্রায়, কামনা, অভিলাষ, স্বপ্ন, কল্পনা ও ছলনা ইত্যাদি অন্যের কাছে প্রকাশ করি এবং অন্যের মনেও যে এগুলোর অস্তিত্ব আছে, তা বুঝতে পারি। যোগাযোগ ও সামাজিকতা তখনই একটি মানুষের স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অর্থবোধক হয়, যখন ভাষার বাচনিকতার সঙ্গে অবাচনিকতার বিভিন্ন উপাদান যুক্ত হয়ে অন্যের কাছে অর্থবহ রূপে প্রতিবেশ ও পরিবেশ অনুযায়ী প্রকাশ হয়।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা।

প্রকৃতির সহজাত নিয়মে যখন কোনো শিশু চিন্তা ও আবেগ অন্যের কাছে প্রকাশ করতে না পারবে, তখন তার আচরণগত সমস্যা তৈরি হবে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ভাষা বিকাশ ও প্রকাশে লক্ষণীয় ত্রুটি দেখা যায়। ফলে এই শিশুদের মধ্যে কিছু অকার্যকর বা অনুপোযোগী আচরণ, যেমন বারবার পুনরাবৃত্তি, অন্তর্ঘাতমূলক, আগ্রাসনমূলক আচরণ পরিলক্ষিত হয়, যা তার দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

এ ধরনের সমস্যা একটি শিশুর নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা থেকে শুরু করে তার সামাজিক দক্ষতা ও বুদ্ধিদীপ্ততার সার্বিক বিচ্যুতি বা বিকারের পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। আর এর মাত্রা হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন, যা নির্ভর করে একটি শিশুর ভাষা আয়ত্তকরণের উপায়গুলো অর্থাৎ ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থের ওপর।

মা–বাবার করণীয়

কোনো শিশুর মধ্যে ‘ভাষা সমস্যা’ পরিলক্ষিত হলে তার চিকিৎসা শুরুর আগে উচিত রোগ নির্ণয় করা। শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কি না, নির্ণয় করতে হবে এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি নেওয়ার উপযোগী কি না, সেটাও নির্ণয় করতে হবে। এটি নির্ণয় করবেন একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং প্রয়োজনে ওষুধও প্রদান করবেন অকার্যকর বা অনুপযোগী আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য।

একজন চিকিৎসা ভাষাবিদ একটি শিশুর মধ্যে ভাষার উপাত্তগুলোর কোনটি, কতটুকু আক্রান্ত হয়েছে, তা খুঁজে বের করেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাব্যবস্থা ‘স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি’ দিয়ে থাকেন। যত তাড়াতাড়ি একটি শিশুর এ উপাত্তগুলো খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে, তত তাড়াতাড়ি শিশুর আচরণগত অবস্থার উন্নতি হবে। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে উপাত্তগুলোর কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা, যাতে সে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বোঝা না হয়ে যায়।

ডা.

ফাহমিদা ফেরদৌস, চিকিৎসা ভাষাবিদ ও মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক (মানসিক রোগ বিভাগ), জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র কর অন য র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

এমবাপ্পে-রুদিগার-সেবালোসকে জরিমানা, রিয়ালের স্বস্তি

রিয়াল মাদ্রিদ বড় এক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাদের কয়েকজন খেলোয়াড়ের ওপর নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা থাকলেও উয়েফা কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। ফলে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালের বিপক্ষে খেলতে পারবেন।

গত সপ্তাহে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে, দানি সেবালোস, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, কিলিয়ান এমবাপে ও আন্তোনিও রুদিগার অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচে দৃষ্টিকটু আচরণ করেন। আর তাদের সে আচরণ তদন্ত করে দেখবে উয়েফা।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আর উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ চলাকালীন ও শেষের দিকে ভিনিসিউস অ্যাটলেটিকোর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিতমূলক উদযাপন করেন। এমবাপ্পে সমর্থকদের দিকে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করেন। আর রুদিগার গলা কাটার ভঙ্গি করেন। এসব আচরণে তারা শাস্তির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কেউ-ই নিষেধাজ্ঞা পাননি। কেবল জরিমানা দিয়ে পার পেয়েছেন।

আরো পড়ুন:

ট্যাক্স ফাঁকির মামলায় আদালতে রিয়াল কোচ আনচেলোত্তি

৭২ ঘণ্টার বিশ্রাম ছাড়া ম্যাচ খেলতে নামবে না রিয়াল

শাস্তির পরিমাণ ও নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতি:    
ভিনিসিউস:
কোনো শাস্তি পাননি।
সেবালোস: উয়েফার আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ২০ হাজার ইউরো জরিমানা।  
এমবাপ্পে: উয়েফার আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৩০ হাজার ইউরো জরিমানা এবং আগামী এক বছরের মধ্যে একই আচরণ করলে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।  
রুদিগার: ৪০ হাজার ইউরো জরিমানা এবং আগামী এক বছরের মধ্যে একই আচরণ করলে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।

গত বছর ইংল্যান্ডের হয়ে ইউরো ২০২৪ খেলতে গিয়ে একই ধরনের আচরণ করে জুড বেলিংহাম শাস্তি পেয়েছিলেন। তবে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এটি স্বস্তির খবর। কারণ তাদের সেরা খেলোয়াড়রা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারবেন।  

কোচ আনচেলত্তি অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন। তবে গত মঙ্গলবারের ম্যাচে রুদিগারবিহীন রিয়াল মাদ্রিদ তিনটি গোল হজম করেছিল। তাই তার উপস্থিতি দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ‘বিতর্কিত’ ওয়াক্ফ বিল মুসলমানদের প্রতি আইনি সহিংসতা: বিবৃতিতে ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়া
  • এমবাপ্পে-রুদিগার-সেবালোসকে জরিমানা, রিয়ালের স্বস্তি
  • বিখ্যাত টুরিং পরীক্ষায় পাস করল চ্যাটজিপিটির নতুন এআই মডেল
  • অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কী আচরণ করব