আরাধ্যের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে, আজ পায়ের সার্জারি
Published: 6th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বাস ও মাইক্রোবাসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ছয় বছর বয়সী শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের আজ পায়েরঅস্ত্রোপচার হবে। দুর্ঘটনায় মা বাবাকে হারানো শিশুটির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে বলে সমকালকে জানিয়েছেন তার স্বজন ও চিকিৎসকরা। বর্তমানে সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা আরাধ্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে তার।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে আরাধ্যের সাথে থাকা আত্মীয় অসিত কুমার বাড়ই সমকালকে বলেন, ‘আগের চেয়ে আরাধ্যের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। রোববার তার পায়ের সার্জারি করবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আপাতত তাকে মুখে খাবার দেওয়া হচ্ছে না। সবাই আরাধ্যের জন্য আশীর্বাদ-দোয়া করবেন। যাতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সে নতুন জীবন পায়।’
বুধবারের দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আরাধ্যের বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মন্ডল। দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচলেও আরাধ্যের দুই পায়ের হাঁড় ভেঙ্গে গেছে। আঘাত পেয়েছে মাথা, হাত, বুকসহ বিভিন্ন অংশে। রক্ত জমাটও বেধেছে নানা অংশে। ঘটনার পর প্রথমে তাকে চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ও পরে অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার তাকে স্থানান্তর করা হয় আইসিইউতে। তার মা-বাবা যে বেঁচে নেই তা এখনও জানে না এই অবুজ শিশুটি। বৃহস্পতিবার মা-বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও শেষবারের মতো মা-বাবাকে দেখাও কপালে ধরেনি না তার।
আরাধ্যের বাবা দিলীপ বিশ্বাস ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকার গাজীপুরের পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ছিলেন। মা-বাবার মৃত্যুর কারণে একেবারে এতিম হয়ে গেছে আরাধ্য। কারণ সে ছিল মা-বাবার একমাত্র সন্তান। এ পর্যন্ত এই সড়ক দুর্ঘটনায় আরাধ্যের মা-বাবাসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কলেজ ছাত্রী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমার। এ ঘটনায় ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা প্রেমার বাবা রফিকুল ইসলাম শামীম, মা লুৎফুন নাহার এবং তাদের দুই মেয়ে আনীসা আক্তার (১৪) ও লিয়ানা (৮) ঘটনার দিনই মারা যান। এক দুর্ঘটনায় পরিবারটির একে একে ৫ জনের মৃত্যু হওয়ায় পরিবারটির আর কেউ বেঁচে রইল না।
আরাধ্যের পাশে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন
মা-বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন আরাধ্যের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় চমেক হাসপাতালে এবং বর্তমানে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা দিন-রাত আরাধ্যের চিকিৎসা, সেবায় পাশে রয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবীরা স্কয়ার হাসপাতালের ফ্লোরে শুয়ে নিস্বার্থভাবে আরাধ্যের পাশে থেকে তার সুস্থতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের বিভাগীয় টিমের সদস্যরা। গত কয়েকদিন ধরে আরাধ্যকে নিয়ে টানা পরিশ্রম করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন পিংকি দে নামের এক স্বেচ্ছাসেবক। পরে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেওয়া হয় স্যালাইনও।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন য় আর ধ য র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
কাঁচা ডিমের মেয়োনিজ নিষিদ্ধের আহ্বান কর্ণাটকের চিকিৎসকদের
ভারতের তামিলনাড়ুর রাজ্য সরকার কাঁচা ডিম দিয়ে তৈরি মেয়োনিজের উৎপাদন ও বিক্রি এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার পর কর্ণাটকের চিকিৎসকরা এটিকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাবার’ উল্লেখ করে রাজ্য সরকারকে নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলেন, কাঁচা ডিমের মেয়োনিজে সালমোনেলা টাইফিমিউরিয়াম, সালমোনেলা এন্টারিটিডিস, ইশেরিকিয়া কোলাই এবং লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনেস জাতীয় জীবাণু পাওয়া গেছে। যাতে বমি, পেটের সমস্যা এবং জ্বরের মতো রোগ হতে পারে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তে সংক্রমণ ঘটিয়ে এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
এর আগে ২০০৬ সালের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্টের ধারার ৩০(২)(ক)-এর অধীনে গত ৮ এপ্রিল থেকে তামিলনাড়ু সরকার কাঁচা ডিম দিয়ে তৈরি মেয়োনিজের উৎপাদন ও বিক্রি এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে।
ওই ধারায় বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে খাদ্য নিরাপত্তা কমিশনার কোনো খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ বা বিক্রয় এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে পারবেন।
আইন অনুযায়ী, খাদ্য ব্যবসায়ীদের নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপাদানসমূহ নিরাপদ। উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিক্রয় বা বিতরণের সময় কোনো অসম্পূর্ণ, ভুল লেবেলযুক্ত বা নিম্নমানের খাবার বিক্রি করা যাবে না এবং খাদ্যের মধ্যে কোনো বিদেশি পদার্থ থাকাও চলবে না।
গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. মানস কুমার মণ্ডল বলেন, কাঁচা ডিম কখনওই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। রান্না করেই ডিম খাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ডিমের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। তখন আর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস