যুক্তরাজ্য গ্রেট স্কলারশিপ, আবেদনে মেনে চলুন ৬ পরামর্শ
Published: 6th, April 2025 GMT
গ্রেট স্কলারশিপের আবেদন চলছে। যুক্তরাজ্য সরকারের গ্রেট ব্রিটেন ক্যাম্পেইন—দ্য গ্রেট স্কলারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ পাবেন। ফাইন্যান্স, মার্কেটিং, বিজনেস, সাইকোলজি ডিজাইন, হিউম্যানিটিজ, ডান্সসহ অন্য বিষয়ে এ বছর যুক্তরাজ্যের ৭১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর করার সুযোগ আছে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এক বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে টিউশন ফি হিসেবে প্রতিটি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড অনুদান দেওয়া হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অর্জন উদ্যাপনের লক্ষ্যে কাজ করে গ্রেট স্কলারশিপ ক্যাম্পেইন। এ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের পছন্দমতো বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সুযোগ প্রদান করে।
২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষে ভারতের ডিওনা গ্রেট স্কলারশিপ পেয়ে পড়াশোনা করেছেন। ডিওনা যুক্তরাজ্যর ইউনিভার্সিটি অব হাল থেকে ‘এডুকেশন, ইনক্লুশন অ্যান্ড স্পেশ্যাল নিডস’–এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। গ্রেট স্কলারশিপে আবেদনের পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন। আপনি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার কথা ভেবে থাকলে ছয় পরামর্শ আপনার জন্য।
১.আবেদনে যোগ্য কি না, যাছাই করে শব্দসীমায় নজর দিন
অ্যাপ্লিকেশনের প্রথম পর্যায়ে বা শুরুতেই আপনাকে অবশ্যই দুটো সাধারণ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। আপনার স্কলারশিপে আবেদনের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড থাকতে হবে। এরপরই শব্দসীমার মধ্য আবেদন পূরণ করতে পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরের ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।
২. যোগ্যতা প্রমাণে নিজের অর্জনগুলো শেয়ার করুনআপনি যদি আবেদন করার সময়ে নিজের নানা অর্জনের কথাগুলো তুলে না ধরেন, তবে যাঁরা আবেদন বাছাইয়ের কাছে থাকবেন, তাঁরা আপনার অর্জনের কথা বা আপনার মূল্য সম্পর্কে জানবেন না। ‘নিজের সম্পর্কে খুব বেশি কথা বলা’ নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনি বৃত্তি পাবেন কি না বা আপনাকে বৃত্তি দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাঁরা নেন, তাঁরা আপনার অর্জনগুলো জানতে চান। এ জন্য অর্জন জানাতে হবে।
এ ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি অব হাল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা ডিওনা বলছেন, ‘আপনার সমস্ত অর্জন এবং গত কয়েক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপনি যে যে সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো করেছেন বা যুক্ত ছিলেন বা আছেন—সে সম্পর্কে বলতে লজ্জা পাবেন না। আমি স্কুলে পড়ার সময়ের বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমের কথা আবেদনে তুলে ধরেছিলাম। প্রথমে ভাবছিলাম এগুলো লেখা উচিত হবে কি না। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি যা যা করেছি, তা শেয়ার করায় কোনো ক্ষতি তো নেই। আমি লিখেছি। আমি স্কুল নাট্য সমিতির অংশ ছিলাম। আপনি আবদনের এসব বিষয় তুলে ধরার সময়ে শুধু এটি নিশ্চিত করুন যে সহশিক্ষা কার্যক্রমে কীভাবে নিজের উপকার হয়েছে। কীভাবে সহশিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকায় আপনার বিভিন্ন দক্ষতার উন্নয়ন হয়েছে।
টিউশন ফি হিসেবে প্রতিটি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড অনুদান দেওয়া হবেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহশ ক ষ র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যের ওপর হামলা
ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এবার ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের রানি কমলাপতি রেলস্টেশনে (পুরোনো নাম হাবিবগঞ্জ স্টেশন) রেলওয়ে পুলিশের এক উর্দিধারী কর্মীর ওপরে হামলা হয়েছে।
পুলিশের সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা জানিয়েছে, তিনজন তরুণ একজন রেলওয়ে পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই তরুণেরা তাঁর ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেছেন। তরুণেরা তাঁকে গালিগালাজ এবং আপত্তিকর ধর্মীয় মন্তব্য করেন। ওই পুলিশ সদস্যের নাম নজর দৌলত খান।
গত শনিবার দিবাগত রাত দুটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত তরুণদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি দুজন এখনো পলাতক। তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানায়, হেড কনস্টেবল নজর দৌলত এবং তাঁর দল দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে স্টেশন চত্বরে গিয়েছিলেন। তাঁরা যখন এ কাজ করছিলেন তখন নজর দৌলত একটি থেমে থাকা গাড়ির মধ্যে একদল তরুণকে মদ্যপান করতে দেখেন। তিনি তাঁদের চলে যেতে বললে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণেরা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালায়।
গতকাল রোববার ঘটনার একটি ভিডিও ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিও পুলিশের কাছেও স্বাভাবিকভাবে পৌঁছায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণেরা শুধু নজর দৌলতকে মারধরই করেননি, তাঁর ধর্ম উল্লেখ করে অবমাননাকর মন্তব্যও করেছেন।
সন্দীপ ও কমল রঘুবংশী নামের নজর দৌলতের অন্য দুই সঙ্গী কনস্টেবল তাঁকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্ত তরুণদের একজন তাঁদের বলে, ‘তোমরা হিন্দু ভাই, তোমরা এখান থেকে সরে যাও।’
ওই তরুণ আরও বলেন, ‘হিন্দু ভাইয়েরা বুদ্ধিমান আর এই লোক (দৌলত খান) তাদেরই বক্তৃতা দিচ্ছে।’
রেলওয়ে স্টেশনে আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মদ্যপ তরুণেরা পুলিশের জিপের দরজা জোর করে খুলছেন এবং কনস্টেবলকে গাড়ির ভেতরে ঢুকে মারধর করছেন।
উপপরিদর্শক (এসআই) রামদয়ালকে উদ্ধৃত করে দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত তিন তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জিতেন্দ্র যাদব নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর দুই পলাতক সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস থেকে এখন পর্যন্ত মুসলিম সমাজের ওপরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কখনো ধর্মীয় সম্পত্তি, কখনো মাদ্রাসা বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সমাজের স্কুল, কখনো তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সাধারণ মানুষের ওপরে হামলার ঘটনা প্রবলভাবে বেড়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
তবে একজন পুলিশ কর্মীকে বেছে নিয়ে নির্দিষ্টভাবে হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভবত এই প্রথম ঘটল।