তবে কি এল ক্লাসিকোতেই লা লিগা শিরোপার মীমাংসা
Published: 6th, April 2025 GMT
জিতলেই রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকার সুযোগ। কিন্তু এমন ম্যাচে আটকে গেল বার্সেলোনা। গতকাল রাতে লা লিগায় নিজেদের মাঠে রিয়াল বেতিসের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে বার্সা। লিগ শিরোপার লড়াইয়ে রিয়াল ও বার্সার মধ্যে পার্থক্য এখন ৪ পয়েন্টের, যা বাকি আট ম্যাচের মধ্যে কমে আসা খুবই সম্ভব।
তাহলে কি ২০২৪-২৫ লা লিগা শিরোপার নিষ্পত্তি এল ক্লাসিকোই করে দেবে? এবারের লিগে রিয়াল-বার্সার একটি ম্যাচ এখনো বাকি। বার্সার জন্য ভালো দিক হচ্ছে, ম্যাচটি তাদেরই মাঠে। ১১ মে অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচে রিয়ালও মাঠে নামবে শিরোপা ধরে রাখার বড় প্রচেষ্টা নিয়েই।
গত রাতে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল রিয়ালেরও। তবে ঘরের মাঠে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যাওয়ায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের (৩০ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট)। তবে কয়েক ঘণ্টা পরই কার্লো আনচেলত্তির দলকে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেয় বেতিস। ৭ মিনিটে গাভি বার্সাকে এগিয়ে দিলেও ১৭ মিনিটে নাথান হেডে গোল করে যে সমতা আনেন, গোলকিপার আদ্রিয়ানের দৃঢ়তায় সেটি ধরে রেখেই তারা ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে (বার্সা ৩০ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট)।
বার্সেলোনা ম্যাচে আক্রমণের ধার ও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করেও যে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। সেটি নিয়ে অবশ্য বড় খেদ নেই কোচ হানসি ফ্লিকের, ‘এক ম্যাচ কম খেলে এক পয়েন্টে এগিয়ে আছি (এই মুহূর্তে সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে)। এটা ভালোই। প্রথমার্ধে বেশ কটি ভুল করেছি, আবার সুযোগও তৈরি করেছি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভালো খেলেছি। ফলটা ভালো করার চেষ্টা করেছি তখন।’
বার্সেলোনাকে এখন লিগ জেতার জন্য শেষ ৮ ম্যাচকেও ‘দ্বিতীয়ার্ধ’ হিসেবেই দেখতে হবে। বার্সা, রিয়াল দুই দলই ম্যাচ খেলেছে ৩০টি করে। যে ৮টি করে ম্যাচ বাকি দুই দলের, তাতে চারটি হোমে, চারটি অ্যাওয়ে। এর মধ্যে বার্সার প্রথম তিনটি অ্যাওয়ে প্রতিপক্ষ সহজ-লেগানেস, এস্পানিওল ও ভায়াদোলিদ। তিনটি দলই এই মুহূর্তে ১৫ নম্বরের পরে অবস্থান করছে। তবে ফ্লিকের দলের আসল চ্যালেঞ্জ হবে লিগের শেষ ম্যাচে। সেটি খেলতে হবে পয়েন্ট তালিকার চারে থাকা অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে গিয়ে। যে কারণে লিগের ৩৫তম ম্যাচে রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচের ফল বড় প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে।
রিয়ালও নিশ্চিতভাবে চোখ রাখবে এল ক্লাসিকোর দিকেই। সে ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিতে পারলে বার্সেলোনা অন্য কোনো ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ালেই কার্লো আনচেলত্তির দলের সামনে ট্রফি জয়ের সুযোগ এসে যাবে। বার্সেলোনা বাদে রিয়ালের যে তিনটি অ্যাওয়ে বাকি, সবই ১০ নম্বরের পরে থাকা দলের বিপক্ষে-আলাভেস, হেতাফে ও সেভিয়া।
লিগে রিয়ালের পরের ম্যাচ আলাভেসের মাঠে ১৩ এপ্রিল। তার আগে লেগানেসের মাঠে খেলতে যাবে বার্সেলোনা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এরপর সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। খবর বাসসের
রোববার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আরেকটি চিঠি দেওয়া হবে বাণিজ্য উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইউএসটিআর’কে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় চারজন উপদেষ্টা, চারজন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী-সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ, ১০ জন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে চারজন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে যে দুটি চিঠি দেওয়া হবে তাতে কী থাকবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত সবাই তাদের মতামত দিয়েছেন। বাংলাদেশ কী কী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে, চিঠিতে সেগুলোর উল্লেখ থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, চিঠিতে যাই থাকুক, তা হবে ব্যবসাবান্ধব। সেখানে বাংলাদেশের ব্যবসার স্বার্থ দেখা হবে। দুই দেশ যাতে সমানভাবে লাভবান হতে পারে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে আমাদের ব্যবসা আরও সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপ নিয়ে বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা চারটি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এক. যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে হবে। দুই. বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সক্ষমতা অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আরও বাড়ানো হবে, যাতে করে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ মনে করে বাংলাদেশের পণ্য অন্য দেশের তুলনায় ভালো। তিন. যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুধু পণ্য নয়, অন্য সেবাও আমদানি করা হবে। চার. যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর করা হবে। আর সেটি আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেন, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিসে কথা বলেছেন। সেখান থেকে যে সংকেত পাওয়া গেছে, তাতে বাংলাদেশের চিন্তাধারার সঙ্গে তাদের মিল রয়েছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে করণীয়গুলো চূড়ান্ত করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক যেন রক্ষা পায়, সেই চেষ্টা করা হবে জানিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকের মজুরি সর্বনিম্ন জায়গায় রয়েছে। এর চেয়ে কমানো যাবে না। শ্রমিকের দিক থেকে খরচ না কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হবে। একই সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর ও বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।’
ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ককর আরোপের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে; তাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে স্বস্তি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে, সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বাংলাদেশ আর কী কী জিনিস কিনতে পারে সেই বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
একইসঙ্গে বাংলাদেশের জন্য পোশাক খাতের বাইরে নতুন অনেক দুনিয়া আছে উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, সেসব খুঁজে বের করতে হবে।