বেনজির রৌফি তাঁর রেস্তোরাঁয় একা দাঁড়িয়ে আছেন। লাখ লাখ আফগানকে পাকিস্তান সরকার যে আবাসন অনুমতি দিয়েছিল, তা বাতিল ঘোষণার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইছেন না।

গত মার্চের শুরুতে ইসলামাবাদ আট লাখ আফগান নাগরিকের কার্ড বা এসিসি বাতিল ঘোষণা করা হবে বলে জানায়। এটি একটি নির্বাসন কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপ, যা ইতোমধ্যে আরও আট লাখ অননুমোদিত আফগানকে সীমান্ত পেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

আফগান নারী রৌফি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ১৯৯০-এর দশকে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসার সময় আমার বয়স ছিল ১৩। এখন যদি নির্বাসিত করা হয়, তাহলে এটি আমাকে ধ্বংস করে দেবে। হয় আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে, নয়তো আমি নিজের জীবন নিয়ে নেব। পাকিস্তান আমাদের হাসি দিয়েছে। এখন সেই হাসি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

আফগানদের ফেরত পাঠাতে এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ আফগান নারীকে নিজ দেশে ফেরত যেতে বলে। তবে তারা আফগানিস্তানে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তারা আফগানিস্তানে নারীদের পড়াশোনা, চাকরি ও জনসমক্ষে সীমাবদ্ধ করে রাখার সরকারি নীতির সমালোচনা করেন। রৌফি বলেন, ‘আমার কাছে ফিরে যাওয়ার মতো কেউ নেই। তালেবান আমাদের নেবে না।’

এসিসি হোল্ডারদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার জন্য সরকারের দেওয়া সময়সীমা এপ্রিলে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কর্মীদের মতে, কর্তৃপক্ষ কয়েক মাস ধরে হয়রানি করছে। যারা পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছেন, পাকিস্তানিদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে অথবা কয়েক দশক ধরে দেশটিতে আছেন, তাদের সরকারি আবাসিক অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের বিরোধের মধ্যে এ ঘটনা ঘটল। ইসলামাবাদের দাবি, তালেবান সরকার তাদের মাটিতে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গিদের নির্মূলে ব্যর্থ। তবে তালেবান এ দাবি অস্বীকার করেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান চীন-যুক্তরাষ্ট্রের

কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে রয়েছে। সীমান্তে চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে উত্তেজনা নিরসনে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।

সংযম প্রদর্শনের আহ্বান চীনের

রোববার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই। পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান যে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে, তার প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি। 

চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে ওয়েং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘চীন একটি দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের পক্ষে এবং বিশ্বাস করে যে, এই সংঘাত পাকিস্তান ও ভারত কারো মৌলিক স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না, তা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যেও উপকারী নয়।’

দুই পক্ষই সংযম প্রদর্শন করবে এবং উত্তেজনা নিরসনে এগিয়ে আসবে, এমনটা প্রত্যাশা তার। ওয়েং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামির সঙ্গেও আলাপ করেছেন। 

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ‘ভারতের মিথ্যা দাবি, ভিত্তিহীন প্রচারণা এবং একতরফা পদক্ষেপ’ নিয়ে তারা কথা বলেছেন।

‘দায়িত্বশীল সমাধান’ চায় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর রোববার জানিয়েছে তারা ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। দুই দেশই যাতে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ নিয়ে কাজ করে সেটি চায় যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রেখেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে একটি দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।’

হামলার পরপর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিল। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার।

গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় ভারত। নিজেদের কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও। সূত্র: ডয়েচে ভেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ