এক যাত্রীর ফেলে দেওয়া ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক খাইরুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি সরকারি শাহ সুলতান কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছেন। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে পার্টটাইমে অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ চালানোর পাশাপাশি সংসারে সহায়তা করে থাকেন। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়ি এলাকার শাহজাহান আলী রঞ্জুর ছেলে।
গত ২৯ মার্চ অটোরিকশা চালানোর সময় শহরতলির বনানী এলাকায় তাঁর অটোরিকশায় একটি ব্যাগ দেখতে পান। খাইরুল বুঝতে পারেন, এটি কোনো যাত্রী ভুল করে ফেলে গেছেন। ব্যাগের মালিক না পেয়ে খাইরুল ব্যাগ নিয়ে বাড়ি গিয়ে মায়ের সামনে ব্যাগ খুলে দেখেন তাতে ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১৫ হাজার টাকা আর কিছু কাপড় রয়েছে। এরপর দু’দিন ধরে মালিককে খুঁজে না পেয়ে বগুড়া সদর থানায় বিষয়টি অবগত করেন এবং স্বর্ণাংলকারসহ ব্যাগ সদর থানায় জমা রাখেন। এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাগের মালিকের নাম শাহিন আলম। তাঁর বাড়ি পাবনায়। তিনি স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঈদের দু’দিন আগে বগুড়ায় এসেছিলেন কেনাকাটা করতে। ওই সময় ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বনানী এলাকায় বাসের জন্য অটোরিকশায় যান। এর পর অটোরিকশায় ব্যাগ রেখেই বাসে উঠে পড়েন।
শাহিন আলমের সন্ধান পেয়ে খাইরুলকেও বগুড়া সদর থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেই ব্যাগ।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বাসিন্দা শফিউর রহমানের ছেলে শাহিন আলম জানান, ভুল করে স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগ ফেলে গিয়ে তিনি শাজাহানপুর ও বগুড়া সদর থানার দ্বারস্থ হন। ব্যাগ পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে খাইরুলকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন এবং তাঁকে পুরস্কৃত করেন তিনি।
চালক খাইরুল ইসলাম বলেন, ব্যাগটি মস্ত বড় এক বোঝার মতো মনে হচ্ছিল। ব্যাগটি প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে পেরে স্বস্তি পেলাম।
বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মইনুদ্দিন বলেন, এ যুগেও যে হাজারো মানুষের ভিড়ে সৎ মানুষ আছে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ খাইরুল ইসলাম। সততার জন্য আমি তাঁকে স্যালুট জানাই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সতত স বর ণ ল ক র সদর থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ দেওয়ায় রংপুরে ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত
ছবি: সংগৃহীত