ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
Published: 6th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পর অর্থনৈতিক খাতে শোচনীয় অবস্থার পর বিক্ষোভে নেমেছেন এসব মানুষ। শনিবার জার্মানির বার্লিন ও ফ্রাঙ্কফুর্ট, ফ্রান্সের প্যারিস এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একত্র হন বিক্ষোভকারীরা।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যেও ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। এর সঙ্গে মিল রেখে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে ‘হ্যান্ডস অফ’ নামে বিক্ষোভে হয়। বিদেশে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরা এ বিক্ষোভের ডাক দেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ১ ঘণ্টা আগেজার্মানির বার্লিনে টেসলার বিক্রয়ক্রেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভকারী জড়ো হন। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিলো। প্ল্যাকার্ডে জার্মানিতে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ডেমোক্র্যাট সমর্থকেরা ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। তাঁদের হাতে ধরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন’, ‘হ্যান্ডস অফ’ বা ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’, ‘ট্রাম্প তোমার কর্মকান্ডে বিশ্ববাসী বিরক্ত, তুমি চলে যাও’।
বার্লিনে ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারী। তারা বলেছেন, ‘ইলন তোমাকে কেউ ভোট দেয়নি’।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের প্যালেস দে লা রিপাবলিকেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। এতে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী অংশ নেন। যাদের বেশিরভাগই মার্কিন নাগরিক।
এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারী ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। অনেকের হাতে ‘অত্যাচারীকে প্রতিহত করুন’, ‘আইনের শাসন’ ও ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন’ লেখা ব্যানার দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন ও পর্তুগালের রাজধানী লিসবনসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্প ও মাস্কবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
খায়রুল হক ও আসাদুজ্জামান এখনও কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না, প্রশ্ন রিজভীর
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী ফ্যাসিবাদ কায়েমের মূল দোসর বিচারপতি খায়রুল হক এবং আসাদুজ্জামান এখনও কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না?
শুক্রবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান এর নির্দেশনায়— চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের ছোট ভাই ক্যান্সার আক্রান্ত মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রিজভী বলেন, ‘যাদের কারণে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা কেন আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে? যারা বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে যারা ফ্যাসিবাদকে চিরস্থায়িত্ব দান করার জন্য নিজেদের ওপর অর্পিত যে দায়িত্ব ছিল সেই দায়িত্ব শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করে গেছেন তাদেরকে এখনও কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি? কেন জাস্টিস খায়রুল হক এখনও গ্রেপ্তার হয়নি? উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বন্ধ করে দিয়ে স্তব্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে এক ভয়ঙ্কর রাক্ষসী ফ্যাসিবাদ তৈরি করার নাৎসিবাদ তৈরি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সে কেন এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে?’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘একজন নিরীহ মানুষ, যার সঙ্গে কোনো কিছুর সম্পর্ক নেই, জনগণের অত্যন্ত সমাদৃত জনপ্রিয় একজন নেত্রী, দেশ-বিদেশে প্রশংসিত একজন নেত্রী, গণতন্ত্রের জন্য যিনি তার পরিবার সমস্ত সুখ শান্তিকে বিলীন করে দিয়ে দেশের মানুষ এবং মাটিকে ছেড়ে যিনি যাননি তাকে মিথ্যা মামলায় জাস্টিস আসাদুজ্জামান পাঁচ বছর সাজা দিয়ে দিলেন। তারপরে আবার হাইকোর্টে আরেকজন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম তিনি আরও বাড়িয়ে দিলেন পাঁচ বছর। এরা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে?এরাই তো গণতন্ত্রের হত্যাকারী। এরাই তো ফ্যাসিবাদ কায়েমের জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছেন। আমরা যদি শহীদের রক্তকে ন্যূনতম মর্যাদা দিতে পারি এরা তো কেউ গ্রেপ্তারের বাইরে থাকার কথা নয়। তাহলে কেন আজকে এই সমস্ত ফ্যাসিবাদ কায়েমকারীরা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকারীরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে? এরা যদি দেশে নাও থাকে, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই থাকুক, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা এবং ধরার দায়িত্ব হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। সেই উদ্যোগ জনগণ দেখতে চায়।’
রিজভী বলেন, ‘খায়রুল হক যে অপরাধ করেছেন নিজের স্বার্থে, এটাতো প্রমাণিত। তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করতে পারলে পুরস্কৃত হবেন, তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি চিফ জাস্টিসের মতো পদ থেকে তার চেয়ে ছোট পদে থাকার জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং তার চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন।’
যারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ধ্বংস করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার জন্য, সেই নুরুল হুদা এখনও গ্রেপ্তার হয় না কেন এমন প্রশ্নও রাখেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘সেই সিইসি কে এম নুরুল হুদা এখনও কেন গ্রেপ্তার হয় না? এরাই তো হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী, নির্বাচন ধ্বংসকারী, এরাই ভোটার বাদ দিয়ে গরু ছাগলকে দিয়ে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এই সমস্ত গণতন্ত্র বিনাশী অমানুষ দানবরা কি আজও গ্রেপ্তারের বাইরে থাকতে পারে? যারা হচ্ছে মূল অপরাধী, যাদের কারণে গত ১৫-১৬ বছর শেখ হাসিনার মতো একজন রক্ত পিপাসু নারী, যিনি ছোট মাসুম বাচ্চাদেরকে গুলি করে হত্যা করতে দ্বিধা করেননি তাকে যারা সহযোগিতা করেছে। তারা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে? এটা হতে পারে না।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনির পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কোষাধক্ষ্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, আবুল কাশেম, আলমগীর কবির, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য নাজমুল হাসান প্রমুখ।