বিয়ের তিন মাসেই জীবন প্রদীপ নিভল নবদম্পতির
Published: 6th, April 2025 GMT
হৃদয় প্রামাণিক ও মেহজাবিন মৌয়ের বিয়ে হয়েছিল তিন মাস আগে। আনন্দ-উল্লাসে, ঘোরাঘুরি করে সুখেই দিন কাটছিল মেধাবী এ দম্পতির। কিন্তু ছোট একটি দমকা হাওয়া থামিয়ে দিয়েছে তাদের। নৌকাডুবিতে নিভে গেছে জীবনপ্রদীপ। তাদের বাড়িতে এখন শুধুই শোকের মাতম। মাত্র তিন মাসেই দুই পরিবারের আনন্দ পরিণত হয়েছে বিষাদে।
পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর কোলচোরি গ্রামের দুলাল প্রামাণিকের ছেলে হৃদয় প্রামাণিক (২২)। তাঁর স্ত্রী আতাইকুলা থানার বনগ্রামের মনিরুজ্জামান মানিকের মেয়ে মাসুদা মেহজাবিন মৌ (১৯)। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ঈদের ছুটিতে গত শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে পদ্মা নদীতে নৌকা ভ্রমণে যান এ দম্পতি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কাঞ্চন পার্ক এলাকায় হঠাৎ দমকা হাওয়ায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠলেও সাঁতার না জানা হৃদয় ও মৌ নিখোঁজ হন।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের চেষ্টায় ১৬ ঘণ্টা পর গত শনিবার সাতবাড়িয়ায় পদ্মা নদীর চর থেকে দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, হৃদয় খান এবং মেহজাবিন মৌ দু’জনই অত্যন্ত মেধাবী। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের সম্মতিতে তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছে।
হৃদয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। মৌ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। স্থানীয় স্কয়ার হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ খতিব শাহনাজ সুলতানা নাজলী ফেসবুকে লিখেছেন, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মৌ এবং তাঁর স্বামীর ইন্তেকালে তারা মর্মাহত। তাদের পরিবারকে এ শোক সইবার ধৈর্য দিন।
পাবনার নাজিরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জয়ন্ত চন্দ্র দে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জেলেদের মাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়েছে। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নবদম্পতি নিহত
রাজধানীর উত্তরায় রেললাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নবদম্পতি নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোর্টবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মাসুম মিয়া (২৫) ও ইতি খাতুন (১৯)।
মুমূর্ষু অবস্থায় মাসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ৮টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। আর ঘটনাস্থলেই মারা যান ইতি।
আরো পড়ুন:
সড়ক দুর্ঘটনায় ঝালকাঠি জেলা পরিষদের প্রকৌশলী নিহত
রাঙামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ৬
মাসুম মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শুভ নামে নামের এক ব্যক্তি জানান, উত্তরা পূর্ব থানার আট নম্বর সেক্টরের শেষ মাথায় রেল ক্রসিংয়ে তারা রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলন। এ সময় একটি ট্রেন ঢাকার দিকে এবং একটি ট্রেন টঙ্গীর দিকে যাচ্ছিল। ওই ট্রেন দুটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্রসিং করার সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ইতি মারা যান। আর গুরুতর আহত অবস্থায় মাসুম মিয়াকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা রেলওয়ের বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে উত্তরা কোর্টবাড়ি এলাকার রেললাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন ওই নবদম্পতি। তখন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে ধাক্কা লাগে তাদের। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন স্ত্রী। আর পথচারীরা তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি জানান, নববধূর মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। মাসুম মিয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, তার পরিবার এলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জানান, কয়েকদিন আগে তারা প্রেমের সম্পর্ক করে পরিবারের অমতে বিয়ে করে। মাসুম মিয়ার বাড়ি নেত্রকোনা এলাকায় এবং ইতির বাড়ি ময়মনসিংহ এলাকায়। তারা দুজনে ঢাকায় এসে বিয়ে করে এবং দক্ষিণখান থানা এলাকায় ভাড়া থাকত।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. ফারুক জানান, কয়েকজন পথচারী মাসুম মিয়া নামের এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা/এসবি