বাসচালক বলছেন, ডাকাতির চেষ্টা, পুলিশের ভিন্ন কথা
Published: 5th, April 2025 GMT
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে একুশে পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ধাওয়া করে ইট ছুড়ে চালককে আহত করার ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। আহত বাসচালক বলছেন, সেদিন (গত সোমবার) রাতে এক দল তরুণ মোটরসাইকেল নিয়ে বাসটিতে ডাকাতির চেষ্টা করেছিলেন।
আর পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেলকে সাইড না দেওয়ায় ওই তরুণরা বাসচালকের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জেনেছে তারা।
গত সোমবার রাত ২টার দিকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজার সেতুর ওপর বাসে হামলার ঘটনা ঘটে। আহত বাসচালক রাকিব হোসেন সোহেল নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ইটের আঘাতে তাঁর নিচের মাড়ির সব দাঁত ও ডান কলার বোন ভেঙে গেছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন একুশে পরিবহনের মালিক জহিরুল ইসলাম তারেক।
সেদিন বাসটিতে থাকা সুপারভাইজার মো.
রাহাত জানান, রাত ২টার দিকে বাসটি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজার সেতুতে পৌঁছায়। তখন মোটরসাইকেল আরোহীরা চালককে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন। এক পর্যায়ে বাসের কাচ ভেঙে চালকের মুখ ও দাঁতে আঘাত লাগে। ইটের আঘাতে তাঁর মুখমণ্ডল রক্তাক্ত হয়। এরপরও চালক বাস চালিয়ে সুধারাম মডেল থানার সামনে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাসচালক সোহেল বলেন, ‘মোটরসাইকেল আরোহীরা ডাকাতির উদ্দেশে বাস অনুসরণ করছিল। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে যাত্রীদের জানমাল রক্ষার্থে বাস চালিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে পৌঁছে দিই। ঈদের রাত হওয়ায় সড়কের আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। এই সুযোগে ডাকাত দল ডাকাতির চেষ্টা করে।’
এ বিষয়ে একুশে পরিবহনের মালিক জহিরুল বলেন, ‘ওরা নিশ্চিত ডাকাত দল। কারণ মোটরসাইকেল আরোহীরা হেলমেট পরিহিত ছিল এবং মোটরসাইকেলগুলোতে নম্বর প্লেট ছিল না। অল্পের জন্য যাত্রীদের জানমাল রক্ষা হয়েছে। এ ঘটনায় জিডি করব।’
এদিকে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের এসপি খায়রুল আলম বলেন, ‘সোমবার রাতে একদল তরুণ বা যুবক মোটরসাইকেলে যাচ্ছিল। এ সময় তারা একুশে পরিবহনের বাসচালককে সাইড দেওয়ার জন্য সংকেত দেয়। কিন্তু চালক ভয়ে মোটরসাইকেল সাইড দেননি। এতে তরুণরা ধাওয়া করে তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে জেনেছি। এটি ডাকাতির চেষ্টা বলে মনে হয়নি। এ নিয়ে লালমাই, লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ এবং কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনা তদন্তে হাইওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।’
নোয়াখালীর এসপি আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর বহন র স মব র চ লকক
এছাড়াও পড়ুন:
সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করল প্রশাসন
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লম্বাশিয়া পাহাড় ধ্বংস করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। লম্বাশিয়া পাহাড়টি বালু প্রকৃতির, যার ফলে এ পাহাড় ঘেঁষে যাওয়া সাতগরিয়া ছড়ার পানির পথ পরিবর্তন করে দেয় বালুখেকোরা। আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ে পাহাড়। শ্যালো মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হয় বালু। এভাবেই চলছে দেড় যুগ ধরে।
এ ছড়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। রোববার দৈনিক সমকালে ‘লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের এক দিন পর রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর ঢিবি নষ্ট করে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত অবৈধভাবে মজুদ করা পানি কেটে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাস্তা কেটে গর্ত তৈরি করে দেওয়া হয়, রাস্তার মাঝে পিলার পুঁতে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়।
লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সঙ্গে ছিলেন চুনতির রেঞ্জ অফিসার মো. আবীর হাসান, সাতগড় বিটের বিট অফিসার মহসিন আলী ইমরানসহ থানা পুলিশ ও বনবিভাগের সদস্যরা।
২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটার জুড়ে ক্ষতচিহৃ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পরও বনবিভাগ ও প্রশাসন রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আরেক দল দূর্বৃত্ত কাঁটাতার তুলে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন করে।