অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এই আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়ে সারজিসের দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্ট নানা আলোচনা তৈরি করেছে। কিন্তু সারজিস আলমের এই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে কি তাঁর দল এনসিপি একমত?

এ বিষয়ে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ছয়জন নেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে সারজিস ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছেন, সেটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এটি এনসিপির দলীয় অবস্থান নয়। দলের নেতৃত্বের জায়গা থেকে সারজিসের এ ধরনের পোস্ট করা অনুচিত বলেও তাঁদের কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন।

ঈদুল ফিতরের এক দিন আগে গত ২৯ মার্চ দুপুরে এনসিপি নেতা সারজিস আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রফেসর ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন স্টেটসম্যানকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার আজীবন থাকবে।’

আজ শনিবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬১ হাজারের বেশি ব্যবহারকারী এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১ লাখ ৬৭ হাজার ব্যবহারকারী ‘লাভ’ ও ৩০ হাজারের বেশি ‘কেয়ার’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন। অর্থাৎ, প্রতিক্রিয়া দেওয়া অধিকাংশ ব্যবহারকারী বিষয়টিকে সমর্থন করছেন। এর পাশাপাশি সারজিসের ওই পোস্টে পক্ষে–বিপক্ষে ৩৯ হাজারের বেশি মন্তব্যও এসেছে।

সারজিস আলমের এই পোস্ট নানা আলোচনা তৈরি করেছে। সারজিসের পোস্টের পর ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আরও অনেকেই এ বিষয়ে ফেসবুকে পক্ষে–বিপক্ষে পোস্ট দেন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা হচ্ছে।

সারজিসের এই পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারজিস যা লিখেছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত চাওয়া। এটা এনসিপির দলীয় অবস্থান নয়।’ একই কথা বলেছেন এনসিপির আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দলের নেতৃত্বের জায়গা থেকে সারজিসের এ ধরনের পোস্ট করা অনুচিত।’
এই বিষয়ে সারজিস আলমের সঙ্গে শনিবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে তাঁর আকাঙ্ক্ষাটা ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ‘আমি নির্বাচিত সরকারের কথা বলেছি, বর্তমান সরকারের কথা বলিনি। অন্তর্বর্তী সরকার যত দিন থাকা যৌক্তিক বলে সব অংশীজন মনে করবে, সেটা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। অধ্যাপক ইউনূস একজন বৈশ্বিক নেতা। সেই জায়গা থেকে আমি আমার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার কথা ফেসবুকে লিখেছি। এটা এনসিপির দলীয় অবস্থান নয়।’

গাড়িবহরের সমালোচনা নিয়ে সারজিস যা বললেনগত ২৪ মার্চ বিকেলে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে পঞ্চগড় শহর পার হন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র অবস থ ন সরক র র ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

আড়িয়াল বিলের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় চেষ্টা চলছে: উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি  উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আড়িয়াল বিলের প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে খালখনন করা হবে এবং বিলের মাটিলুট বন্ধে আলমপুর সেতু পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পুলিশ চেকপোস্ট থাকবে। সার্বক্ষণিক চেক পোস্টের জন্য ১২ জন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যকে শ্রীনগর থানায় পদায়ন করা হবে।’’

শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে ধান কাটা ও মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন ও বাড়ৈখালীর শ্রীধরপুর ধানখেতে মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, এটা আমার মায়ের জন্মস্থান। এটা আমার নানির বাড়ির এলাকা। এই এলাকার প্রতি আমার আলাদা একটা নাড়ির টান রয়ে গেছে। আর আদিলুর রহমান খান (উপদেষ্টা) ভাইয়ের বাড়ি তো এই শ্রীনগরে। এ জন্য আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব, ততটা করবো। আড়িয়াল বিলের একটা বৈচিত্র্য আছে। এটা যেন কোনো অবস্থায় নষ্ট না হয়, সেদিকে আমরা চেষ্টা করবে। এখানে ছোটখাট যত সমস্যা আছে, এটা আমার অবশ্যই সমাধান করবো।’’ 

আরো পড়ুন:

শীতে গরম পানিতে গোসল, অজান্তেই ডেকে আনছেন ক্ষতি

ভাত খেয়ে ওজন কমানোর উপায়

আড়িয়ল বিলের ভেকু ও অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করতে আলমপুর খালের প্রবেশমুখে পুলিশ পোস্ট স্থাপনসহ দুটি কৃষি হিমাগার চালু করা হবে বলে তিনি এ সময়ে সাংবাদিকদের জানান।

এ সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানান, বিল সুরক্ষায় ৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিলের প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় সকলকে সচেতন থাকতে হবে। 

এই দুই উপদেষ্টা স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তারা স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগের কথা শোনেন এবং সেগুলো দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ধান মাড়াই কার্যক্রম ও কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আরো অংশ নেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত প্রমুখ।

ঢাকা/রতন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ