২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ফেরত দিলেন অটোরিকশাচালক খাইরুল
Published: 5th, April 2025 GMT
এক যাত্রীর ফেলে দেওয়া ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণাংলকার ফিরিয়ে দিয়েছেন কলেজশিক্ষার্থী ও অটোরিকশাচালক খাইরুল ইসলাম। স্থানীয়রা তাকে নিয়ে এখন গর্ব করছেন, প্রশংসা করছেন তার সততার।
খাইরুল বগুড়ার শাজাহানুপর উপজেলার বেতগাড়ি এলাকার শাহজাহান আলীর ছেলে। তিনি সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারে অভাব অনটনের কারণে অটোরিকশা চালান।
গত ২৯ মার্চ অটোরিকশা চালানোর সময় শহরতলীর বনানী এলাকায় তার অটোরিকশায় একটি ব্যাগ দেখতে পান। খাইরুল বুঝতে পারেন, এটি কোনো যাত্রী ভুল করে ফেলে গেছেন। ব্যাগের মালিক না পেয়ে খাইরুল ব্যাগটি নিয়ে বাড়ি গিয়ে মায়ের সামনে খুলে দেখেন, ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১৫ হাজার টাকা ও কিছু কাপড়।
মা ফাতেমা খাতুন ছেলেকে বলেন, ব্যাগটি মালিকের কাছে ফেরত দিতে। মায়ের কথায় তিনি মালিককে খুঁজতে থাকেন। দু’দিন মালিককে খুঁজে না পেয়ে বগুড়া সদর থানায় বিষয়টি জানান এবং ব্যাগটি সেখানে জমা রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাগের মালিকের নাম শাহিন আলম। তার বাড়ি পাবনায়। তিনি একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঈদের দুদিন আগে বগুড়ায় এসেছিলেন কেনাকাটা করতে। ওই সময় স্বর্ণালংকার কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বনানী এলাকায় বাসের জন্য অটোরিকশায় যান। এরপর বাস দেখে দ্রুত উঠে পড়েন, এ সময় অটোরিকশায় ব্যাগ ফেলে যান।
পুলিশ পরে শাহিন আলমের সন্ধান পেয়ে তাকে বগুড়া সদর থানায় ডেকে পাঠান। ৪ মার্চ রাত ১১টার দিকে বগুড়া সদর থানায় আসেন তিনি। সেখানে ডাকা হয় অটোরিকশাচালক খাইরুলকে। সেখানে পুলিশের সামনে প্রকৃত মালিক হারোনো জিনিসপত্রের সঠিক বর্ণনা দিলে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ব্যাগটি।
খাইরুল ইসলাম বলেন, 'অন্যের ব্যাগটি আমার কাজে মস্তবড় বোঝার মতো মনে হচ্ছিল। ব্যাগটি প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে পেরে স্বস্তি পেলাম।' খাইরুলের এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, 'স্বর্ণালংকারসহ খাইরুল ব্যাগ মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তাতে আমরা এলাকাবাসীও গর্বিত।'
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মইনুদ্দিন বলেন, 'হাজারো মানুষের ভিড়ে যে সৎ মানুষ আছে, তার উদাহরণ সিএনজিচালক খাইরুল ইসলাম। সততার জন্য তাকে স্যালুট জানাই।'
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র সদর থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের কর্মচারী নিহত, নারী সহকর্মীসহ আহত ২
রূপগঞ্জে বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) নামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন।
এসময় আহত হয়েছেন তার এক নারী সহকর্মী সাদিয়া (২৬) ও সিফাত (১২) নামে এক শিশু সহ ২জন। আহতদের মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার তারাব পৌরসভার তারাব সুলতানা কামাল সেতুতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর আলম জামালপুরের সরিষাবাড়ির দোয়াইল এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের ফটোকপি অপারেটর ও সাবিহা চৌধুরী অফিস সহায়ক হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে চাকরি করেন। তারা দুজনে সহকর্মী।
শনিবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় বিকেলে জাহাঙ্গীর ও সাবিহা চৌধুরী তার শিশুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে রাজধানীর নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এসময় তারা তারাব সুলতানা কামাল সেতুতে পৌছাঁলে বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাউছিয়া এক্সপ্রেস নামে একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব ১৫৮৩৯৯) মোটরসাইকেলটিকে (ঢাকা মেট্রো ল ৬১০২০৫) ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর নিহত হয়।
এসময় স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় সাবিহা চৌধুরী ও শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে আটক করা গেলেও তার চালক হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।