চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ৫০ বছর বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে একাধিকবার ধর্ষণের  অভিযোগে মো. দেলোয়ার হোসেন নামের ২২ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। 

শুক্রবার রাতে উপজেলার চরতি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতুলি বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দেলোয়ার চরতি ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া এলাকার জলিয়ার বড় বাড়ির আব্দুর রশিদের ছেলে। এ ঘটনায় চরতি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মো.

নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে দেলোয়ারকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক দুইটার দিকে ওই মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর বসতঘরে হানা দেয় দেলোয়ার হোসেন। এ সময় ৫০ বছর বয়সী মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর চিৎকার শুনতে পেয়ে ঘরের পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে আসলে এক যুবককে অন্ধকারে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। ওই প্রতিবন্ধী নারীর ইশারা ইঙ্গিতে এলাকাবাসী বুঝতে পারে, পালিয়ে যাওয়া যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে। তবে এলাকার লোকজন তাৎক্ষণিক পালিয়ে যাওয়া যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। গত ৪ এপ্রিল আনুমানিক দুইটার দিকে একই যুবক ওই প্রতিবন্ধী নারীর ঝুপড়ি ঘরে প্রবেশ করলে আগের ন্যায় ওই নারী চিৎকার শুরু করে। চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেয়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে দেলোয়ারকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। দেলোয়ার একাধিকবার ওই নারীকে ধর্ষণের বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছে স্বীকার করে। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

মামলার বাদী গ্রাম পুলিশ মো. নাছির উদ্দিন বলেন, পাগল বলে কি ওই নারী বিচার পাবে না? তাই বিবেকের তাড়নায় এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের কারণে আমি মামলার বাদী হয়েছি। দেলোয়ার একজন কসাই। সৃষ্টিকর্তা ও বিচারকদের নিকট আবেদন, যেন তিনি ন্যায়বিচার পান।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার যুবক দেলোয়ার মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারীকে একাধিকবার ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় এক গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা করেন। আজ শনিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের দুর্ভাগ্য, পেহেলগামের ঘটনায় সবর্দলীয় সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকলেন না: কংগ্রেস সভাপতি

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামের হামলা ‘কাশ্মীরিয়ৎ’–এর ওপর আক্রমণ। জম্মু–কাশ্মীর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে আজ সোমবার সর্বসম্মতিক্রমে পাস করা এক প্রস্তাবে এ কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবে এ কথাও বলা হয়েছে, ওই ঘৃণ্য ও জঘন্য আক্রমণের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার কূটনৈতিক স্তরে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকার তা অনুমোদন ও পূর্ণ সমর্থন করছে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বদলীয় বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার অধিবেশনে প্রস্তাবটি পেশ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী সুরেন্দ্র চৌধুরী। পেহেলগামের ঘটনায় নিহতদের স্মৃতিতে কিছু সময় নীরবতা পালন করা হয়। ওই হামলায় নিহত স্থানীয় ঘোড়াওয়ালা সৈয়দ আদিল হুসেন শাহর সাহসিকতা ও মানসিকতার বিশেষ উল্লেখ করে বলা হয়, সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরীহ পর্যটকদের বাঁচাতে তিনি বীরের মতো প্রাণ দিয়েছেন। দেশের সংবিধানে যে মূল্যবোধের কথা বলা হয়েছে, ওই হামলা ছিল তার প্রতি আক্রমণ। কাশ্মীরি জনতার যাবতীয় মূল্যবোধ, মানবিকতা, সৌভ্রাতৃত্ববোধ, শালীনতা—এককথায় যা ‘কাশ্মীরিয়ৎ’ বলে পরিচিত, ওই আক্রমণের লক্ষ্য ছিল তাতে আঘাত করা। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা।

পেহেলগামের হামলার পরদিন ভারত যা কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যেমন সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখা, ভিসা বাতিল করা ও অন্যান্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ, প্রস্তাবে তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়।

পেহেলগামের সন্ত্রাসী হানার পর কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত সব বিরোধী নেতা এই সন্ধিক্ষণে সরকারের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর কথাও জানিয়েছিলেন। প্রত্যেকেই বলেছিলেন, পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার যা উপযুক্ত মনে করবে, বিরোধীদের তাতে সম্মতি থাকবে।

কিন্তু সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর সেই অনুপস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। সোমবার রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে এক অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশের দুর্ভাগ্য, সব দলের নেতারা পেহেলগাম নিয়ে ডাকা সভায় উপস্থিত থাকলেও প্রধানমন্ত্রী অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি ব্যস্ত ছিলেন বিহারে ভাষণ দিতে।

খাড়গে বলেন, দেশ সবার আগে। তারপর দল বা ধর্ম। দেশের জন্য সবার জোটবদ্ধ থাকা জরুরি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যখনই দেশ এগোতে থাকে, এ ধরনের লোকজন চেষ্টা করে তাদের পিছু টানতে। কংগ্রেসকে ওইভাবে দমানো সম্ভবপর নয়।

বিজেপির সমালোচনা করে খাড়গে বলেন, কংগ্রেস ঐকবদ্ধতার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে, ওরা দেশকে ভাঙার চেষ্টা করে। কংগ্রেস সংবিধান রক্ষার কথা বলে, ওরা অমান্য করতে চায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ