ভারতের পার্লামেন্টে সংশোধিত ওয়াক্‌ফ বিল পাসের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটি এই বিল বাতিল এবং আন্তর্জাতিক মহলকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর শিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াক্‌ফ সংশোধনী বিলটি মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার হরণের একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। এ আইন বিজেপি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী অবস্থানকে আবারও স্পষ্টভাবে উন্মোচন করেছে। এই বিলের মাধ্যমে মুসলমানদের দানকৃত ধর্মীয় সম্পদ যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি হস্তক্ষেপ এবং দখলের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কাইয়ুম বলেন, ভারতে বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা মুসলমানদের হত্যা করেছে। ভারতে ওয়াক্‌ফ বোর্ডে মসজিদ, এতিমখানা এবং হেরিটেজসহ প্রায় ১০ লাখ একর ওয়াক্‌ফকৃত সম্পত্তি রয়েছে। সেখানে অবৈধভাবে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ট নিয়োগ করে মুসলমানদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুনভারতের নতুন ওয়াক্‌ফ বিল মুসলমানদের জন্য যে সমস্যা ডেকে আনবে৫ ঘণ্টা আগে

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রশিবিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম ও ব্যবসায়িক শিক্ষা সম্পাদক মো.

শহীদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিবির সভাপতি মহিব উল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি আনিসুর রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুনওয়াক্‌ফ নিয়ে আদালতে মুসলিম সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নীতীশের দল ছাড়ছেন মুসলিম নেতারা৭ ঘণ্টা আগে

এর আগে গতকাল শুক্রবার শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতে ভারতের সংশোধিত ওয়াক্‌ফ বিলের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াক্‌ফ বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ওয়াক্‌ফ কাউন্সিলে মুসলিম নয় এমন দুজন সদস্য রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা ওয়াক্‌ফের ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যকে নস্যাৎ করার শামিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এসময় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জনতার বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অনেকে কাফনের কাপড় পরে আত্মাহুতির ঘোষণা দেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাহিনীর অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে গত ২৬ আগস্ট ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর ভেঙে যায়। এতে লোনা পানি ঢুকে এ অঞ্চলের এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ফলানো যাচ্ছে না। উপরন্তু আশপাশের শত শত বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’’

ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘‘গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করব, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।’’

কাফনের কাপড় পরে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বাড়িঘর, ফসলি জমি হারিয়ে আমি কাফনের কাপড় পরে ফেলেছি। আমার বেঁচে থাকার আর স্বাদ নেই। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয় পরিবারসহ আমরা আত্মাহুতি দেব।’’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সাবেক কৃষি কর্মকর্তা পুষ্পেন্দু বড়ুয়া বলেন, ‘‘রেগুলেটরটি বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলের কাছাকাছি ছোট ফেনী নদী হয়ে বড় ডাকাতিয়া নদীর মুখে অবস্থিত। কুমিল্লা জেলার ছয়টি উপজেলা- কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম; ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা- এই দশটি উপজেলার বৃষ্টির পানি এই মুছাপুর রেগুলেটর হয়েই যেত। আবার বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম এ মুছাপুর ক্লোজারের জমানো মিষ্টি পানির মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। এ তিন জেলার দশটি উপজেলার আনুমানিক এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি এ রেগুলেটরের ক্যাচমেন্ট এরিয়াতে পড়ে। এটা ভাঙার ফলে রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মুছাপুর রেগুলেটরটি ভাঙার অন্যতম দুটি কারণ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা রেগুলেটরের ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে বালু তুলে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন। ফলে এই রেগুলেটরের গোড়ার ভিত্তি দুর্বল হয়েছে এবং ভাঙার মতো এই ভয়ানক পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। এই রেগুলেটরের মাধ্যমে তিন জেলার দশটি উপজেলার প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হতো। এ বছর মিঠা পানি না থাকার কারণে এই এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সুতরাং, এই ১০ উপজেলার মানুষের বাস্তু নিরাপত্তা, কৃষিসহ সর্বোপরি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অতি দ্রুত এ রেগুলেটরের পুনর্নির্মাণ জরুরি।’’

ঢাকা/সুজন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ
  • ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন
  • সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: শামীম ওসমান পালালেও তারা দোসরা বিশৃঙ্খলায়
  • পদ্মার খেয়াঘাট ইজারা বন্ধ দাবি চরের বাসিন্দাদের
  • সোনারগাঁয়ে ব্যাটারি কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন 
  • ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্ম বাতিল চায় ছাত্রদল
  • মানিকগঞ্জে জামানতের টাকা ফেরত না পেয়ে এনজিওর মালিকের বাড়িতে ভাঙচুর
  • ফেরি সার্ভিস বন্ধে চক্রান্তের অভিযোগ
  • নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন
  • জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানি