কুমিল্লায় সাবেক রেলমন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর-আগুন
Published: 5th, April 2025 GMT
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিবের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গ্রামের বাড়িতে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার ৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারা গ্রামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মুজিবুল হক কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের ৫ বারের এমপি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় সংসদের হুইপ ও পরে মন্ত্রী ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি সপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই শতাধিক লোকজনের সংঘবদ্ধ একটি দল শনিবার বিকেলে সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হকের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা তিন তলা ভবনের নীচতলায় ও দোতলায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং ভবনে লুটপাট শেষে নীচতলার দরজা-জানালা ভাঙচুরসহ রক্ষিত মালামাল আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও ওই বাড়িতে মন্ত্রী মুজিবুল হকের ভাই ও ভাতিজাদের বেশ কয়েকটি ঘরে একইভাবে লুটপাটসহ ভাঙচুর করা হয়। এসময় তার এক ভাই আবদুল মতিনের ছেলে জজ আবদুস সালামের ঘরে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।
মুজিবুল হকের ভাতিজা তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের দুই শতাধিক নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা আমার চাচা মুজিবুল হকের ভবনসহ বাড়ির বেশ কয়েকটি ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দিয়েছে। তারা দুইটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। এসময় বাড়ির লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে এ হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ভিডিও চিত্র ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এছাড়া সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাহফুজুর রহমান জানান, মুজিবুল হকের ভাতিজা আহসান উল্লাহ ও তার সহযোগীরা শনিবার দুপুরের দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মহিউদ্দিন রনিকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এর জের ধরে রনির সমর্থকরা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও আসে। এর আগে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয় এবং হামলাকারীরা চলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন র লমন ত র ম জ ব ল হক র ভ ল টপ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ২
বন্দর উপজেলার আমিরাবাদ বটতলা স্ট্যান্ড এলাকায় এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় ২ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ।
ফেসবুকে এক নারীর সঙ্গে পরিচয়ের পরে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে এসে অপহরণের শিকার হয় ওই শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে বন্দরের নবীগঞ্জ ও উত্তর নোয়াদ্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় ঢাকার বংশাল থানাধীন নাজিরাবাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল হকের পুত্র শিক্ষার্থী মোঃ মাহিন উদ্দিন নাঈম (২২) বাদি হয়ে বন্দর থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীরা হলো, বন্দরের উত্তর নোয়াদ্দা ডায়াবেটিকস্ হাসপাতালের পিছনে সোহরাব মৃধার পুত্র মোঃ শান্ত হাসান (২০) ও নবীগঞ্জ কাইতাখালী এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত মাসুম রেজার পুত্র মাহমুদুল হাসান সুখন (২২)।
পলাতক আসামীরা হলো, নোয়াদ্দা বড় মসজিদ এলাকার সোহান (২৭), কাইতাখালির তাইজুল ইসলামের পুত্র পারভেজ ওরফে বাবু (২৪), উত্তর নোয়াদ্দার আলতাবের পুত্র রিহান (২০), রাহা মনি ওরফে রুহিসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন।
মামলার এজাহারে বাদি মোঃ মাহিন উদ্দিন নাঈম (২২) উল্লেখ করেন তিনি শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজে দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে বন্দরের রাহা মনি ওরফে রুহি (২২) নামের এক নারীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে শিক্ষার্থী নাঈম রাহা মনি ওরফে রুহির সঙ্গে দেখা করার জন্য গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে বন্দর থানাধীন আমিরাবাদ বটতলা ষ্ট্যান্ডে আসে।
এসময় রাহা মনি ওরফে রুহির সহযোগিতায় ১০/১২ জনের একটি অপহরণকারী চক্র শিক্ষার্থী মোঃ মাহিন উদ্দিন নাঈমকে অপহরণ করে একটি অজ্ঞাতনামা বিলে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা শিক্ষার্থী নাঈমকে আটকে তাদের হাতে থাকা কাঠের ডাসা দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাতারী বারি মেরে নিলামুলা জখম করে এবং এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।
এসময় তার মানিব্যাগে থাকা নগদ সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং একটি আইফোন (যার মূল্য ৩২ হাজার পাঁচশ টাকা) লুটে নেয়। পরে শিক্ষার্থী নাঈমের বাবার ফোনে কল করে মুক্তিপণ দাবি করলে তার বাবা বিকাশের মাধ্যমে নগদ ৫ হাজার টাকা পাঠায়।
পরে অপহরণকারীরা শিক্ষার্থী নাঈমকে ১৪ ঘন্টা আটকে রেখে ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থী নাঈম স্থানীয়দের সহযোগিতায় বন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ প্রথমে অভিযান চালিয়ে মোঃ শান্ত হাসানকে গ্রেফতার করে।
পরে শান্ত হাসানের তথ্য মতো ২নং আসামী মাহমুদুল হাসান সুখনকে গ্রেফতার করে। এসময় মাহমুদুল হাসান সুখনের কাছ থেকে শিক্ষার্থী নাঈমের আইফোন জব্দ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।