আঁধার কাটিয়ে আলোর পথে যাত্রার আহ্বান নিয়ে এবারও নতুন বছরের শুরুতে রমনার বটমূলে হবে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের অনুষ্ঠান। এবার অনুষ্ঠানের মূলভাব নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট বাংলা নববর্ষের সকালে এই অনুষ্ঠানের প্রথম আয়োজন করেছিল ১৯৬৭ সালে। বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সুচারু করে তুলতে দীর্ঘ প্রস্তুতি থাকে ছায়ানটের। অনুষ্ঠানের মূলভাব নির্ধারণ করা হয় প্রথমে। তারপর সেই ভাবনাকে পরিস্ফুটিত করে তুলতে চলে গান, আবৃত্তির জন্য কবিতা ও পাঠের জন্য লেখা নির্বাচন পর্ব। এরপর শুরু হয় মহড়া। এবারেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রতিপাদ্য নির্ধারণ, গান কবিতার বাছাই সব শেষ, চলছে নিয়মিত মহড়া।

আজ শনিবার বিকেলে ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবনে গিয়ে দেখা গেল রমেশ চন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলনায়তনে পুরোদমে চলছে সম্মেলক গানের মহড়া। মেঝেতে মাদুর পাতা। সম্মেলক দলের শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা বসে একের পর গেয়ে যাচ্ছিল, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, ‘মোরা সত্যের পরে মন আজি করিব সমর্পণ,’ ‘জয় হোক তব জয়’ গানগুলো। পরিচালনা করছিলেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী লাইসা আহমদ লিসা। সুরে, তালে বা উচ্চারণে ভুল হলে শুধরে দিচ্ছিলেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এবারের অনুষ্ঠানের মহড়া শুরু হয়েছিল তিন মাস আগে। তখন সপ্তাহে দুই দিন মহড়া হতো। ঈদের ছুটির পর থেকে প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহড়া চলছে। মহড়ায় আরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, রেজাউল করিম ও সত্যম কুমার দেবনাথ।

এবার অনুষ্ঠানে শতাধিক শিল্পী অংশ নেবেন। তাঁদের মধ্যে শিশু-কিশোরের সংখ্যাই থাকবে বেশি। বিশিষ্ট শিল্পীদের কণ্ঠে থাকবে একক গান, পাঠ ও আবৃত্তি। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টির মতো পরিবেশনা থাকবে। তবে সংখ্যা চূড়ান্ত করা হয়নি। যুগ্ম সম্পাদক পার্থ তানভীর নভেদ জানালেন, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীত ও গণসংগীত থাকবে অনুষ্ঠানে। সম্মেলক গানের মধ্যে ‘ও আলোর পথযাত্রী’, ‘এই বাংলা রবি ঠাকুরের, এই বাংলা নজরুলের’, ‘আজ আইল বছর ঘুরে’ এই গানগুলো থাকবে।

রমনার বটমূলে নববর্ষের সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠান শুরু হবে সুপ্রিয়া দাসের পরিবেশনায় ভোরের রাগসংগীত দিয়ে। একক শিল্পীদের মধ্যে থাকবেন খায়রুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, লাইসা আহমদ লিসা, আবুল কালাম আজাদ, সেঁজুতি বড়ুয়া, সুমন মজুমদার প্রমুখ। আবৃত্তি করবেন জয়ন্ত রায়। অনুষ্ঠান বিরতিহীনভাবে চলবে দুই ঘণ্টা।

রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হবে ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে। মঞ্চে চূড়ান্ত মহড়া হবে ১৩ এপ্রিল রোববার বিকেলে। এবার অনুষ্ঠানে পুরুষের পোশাক থাকবে সাদা পায়জামা ও মেরুন পাঞ্জাবি আর নারীদের মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়ি।

রমনার বটমূলে এবারও ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হবে। এই অনুষ্ঠানের জন্য ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবনে চলছে মহড়া। ঢাকা, ৫ এপ্রিল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন অন ষ ঠ ন র ছ য় নট র

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষা ক্ষেত্রে ঢাবির সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে চায় কসোভো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভোর রাষ্ট্রদূত মি. লুলযিম প্লানা।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাক্ষাতে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কসোভোর প্রিশটিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কর্মসূচি গ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কসোভোর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষক বিনিময়ের বিষয়েও আলোচনা করে তারা দ্রুতই এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

আরো পড়ুন:

৫ দাবিতে উপাচার্যকে ঢাবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে ঢাবিতে সেমিনার

কসোভো’র রাষ্ট্রদূত মি. লুলযিম প্লানা সমাজকে আরো এগিয়ে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কসোভোর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপরও জোর দেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় ঢাকাস্থ কসোভো দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মি. এনিস শেমাইলি উপস্থিত ছিলেন। 

সাক্ষাৎ শেষে মি. লুলযিম প্লানা ঢাবির অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘দ্য রিপাবলিক অব কসোভো টুওয়ার্ডস ইউরো-আটলান্টিক ইন্টিগ্রেশন: রিলেশনস উইথ বাংলাদেশ, এশিয়া, অ্যান্ড দ্য প্রসপেক্টস ফর কো-অপারেশন উইথ বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক বিশেষ বক্তৃতা প্রদান করেন। ঢাবির অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাব এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাবের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মি. লুলযিম প্লানা বলেন, “বাংলাদেশ এবং কসোভোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক, একটি সাধারণ সমঝোতা স্মারক এবং কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের চুক্তি। এসব চুক্তি দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।”

তিনি বলেন, “বাণিজ্য ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে যৌথ সহযোগিতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দ্বৈত কর পরিহারের ব্যাপারে আরো চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি আলোচনাধীন রয়েছে। কসোভোর কূটনৈতিক একাডেমি জুনিয়র বাংলাদেশী কূটনীতিকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।”

কসোভো বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য কসোভো স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করেছে। এর মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দু’দেশের মধ্যে স্থায়ী সংযোগ গড়ে তোলা হবে। সব স্তরে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ১০ লাখ টাকা প্রদান
  • ফ্লোরিডায়  বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের  বর্ষবরণ 
  • ‘দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা তরুণদের সহায়তা করা হবে’
  • ইন্টারনেট ট্রান্সমিশনে মূল্য হ্রাসের ঘোষণা বাহন লিমিটেডের
  • উচ্চশিক্ষা সহায়তায় ঢাবিতে স্টাডি অ্যাব্রোড এক্সপো
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে ঢাবির সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে চায় কসোভো