ট্রাক-অটোভ্যান সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ২, আহত ৫
Published: 5th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে মুরগীবাহী ট্রাক ও অটোভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ভূঁইয়াগাঁতী পল্লীবিদ্যুতের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় আরও ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুইজন নারী ও তিনজন পুরুষ।
নিহত শিশু উল্লাপাড়া উপজেলার দেঘলবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মেরাজুল ইসলাম ও অপরজন সলঙ্গা থানার ঘুড়কা দাসপাড়া গ্রামের সুবল দাসের ছেলে সুশান্ত কুমার দাস।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মুরগীবাহী ট্রাক দ্রুত গতিতে বগুড়ার দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে ভূঁইয়াগাঁতী বাস স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে অটোভ্যানটি মহাসড়ক দিয়ে ঘুড়কার দিকে যাচ্ছিল। ভূঁইয়াগাঁতী পল্লীবিদ্যুৎ এলাকা অতিক্রম করার সময় ট্রাক ও অটোভ্যানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোভ্যানে থাকা শিশুসহ ২ যাত্রী নিহত হয়। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীয়রা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন শ শ সহ
এছাড়াও পড়ুন:
জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’
প্রায় চারশ বছর আগে মুঘল আমলে নির্মিত হয় কুষ্টিয়ার ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’। অপূর্ব কারুকাজ থাকা ঐতিহাসিক এই নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত দর্শনার্থী ছুটে আসেন। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় দিনদিন সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে মসজিদটি।
ঐতিহাসিক এই মসজিদটি কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার মধ্যবর্তী ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত।
নির্মাণকালের সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও মসজিদটি ঘিরে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ আছে। ইতিহাস ঘেঁটে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুঘল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ইরাকের জমিদার শাহ সুফি আদানী ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আসেন। প্রায় চারশ বছর আগে ঝাউদিয়া গ্রামে তিনিই নির্মাণ করেন মসজিদটি।
আরো পড়ুন:
আড়াইশ বছরের পুরোনো ১৩ গম্বুজ মসজিদ
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিরকুট, ‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’
জনশ্রুতি আছে, অলৌকিকভাবে এক রাতেই মসজিদটি দৃশ্যমান হয়। মুঘল শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন রয়েছে মসজিদটিতে। দেয়াল জুড়ে নিপুণ আল্পনা, কারুকার্যময় অপূর্ব শিল্পের ছোঁয়া আর পাথরের খোদাই বলে দেয় এটি মুঘল আমলের স্থাপত্য নিদর্শন।
সুদৃশ্য পাঁচটি গম্বুজ আছে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে। চার কোনায় আছে চারটি নান্দনিক মিনার। প্রবেশ দরজায় দুইটি মিনার আছে। যা সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে। ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ১৯৬৯ সালে মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করা হয়।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মসজিদ তার সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে। এ ছাড়া, ঝাউদিয়া গ্রামে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল বা আবাসন সুবিধা না থাকায় নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না হওয়ায় মসজিদটির এখন বেহাল দশা। দেখলে মনে হয় জরাজীর্ণ অবস্থা। তাছাড়া তিন কাতারের বেশি নামাজ পড়ার জায়গা নেই। অথচ মসজিদের সামনে-পেছনে অনেক জায়গা আছে। নতুন করে রংসহ মসজিদটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “এই মসজিদটি মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছে। কারণ মোগল আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে এই মসজিদের নির্মাণ শৈলীতে অনেক সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। মুঘল স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ নির্মিত।”
তিনি আরো বলেন, “দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। শুক্রবারগুলোতে এই মসজিদে প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে আসেন।”
সেলিম উদ্দিন চৌধুরী নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মসজিদের বাইরের সৌন্দর্য রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে কিছুটা ম্লান হলেও ভেতরে চোখ ধাঁধানো নকশার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সম্পত্তি। সর্বশেষ ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে একবার মসজিদটির সংস্কার করা হয়।”
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল মসজিদটি সংস্কার না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত। তাই এর সংস্কার বা দেখভাল স্থানীয়ভাবে করা সম্ভব নয়। যে কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যাচ্ছে না।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ