ছক্কা না মারতে পারাতেই কি হারছেন ধোনিরা
Published: 5th, April 2025 GMT
টি-টোয়েন্টি মানেই ছক্কা। আইপিএলের মতো টুর্নামেন্ট হলে তো কথাই নেই—বল উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করাই এখানে ব্যাটসম্যানদের নেশা। অথচ এবার আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটসম্যানরা ছক্কাই মারতে পারছেন না—ম্যাচও হারতে হচ্ছে তাদের।
আজই এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ২৫ রানে হেরে গেছে তারা। পুরো ইনিংসে তাঁদের ব্যাটসম্যানরা মেরেছেন তিনটি ছক্কা। শুধু কী এই ম্যাচে, এবারের আইপিএলে চার ম্যাচ খেলে ফেলার পর সবচেয়ে কম ২৩টি ছক্কা চেন্নাইয়েরই, তাদের ঠিক ওপরে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ৪ ম্যাচ খেলে মেরেছে ২৬ ছক্কা। চার ম্যাচে এক জয় নিয়ে তাঁরা আছে পয়েন্ট টেবিলের ৮ নম্বরে।
আজ চেন্নাইকে জারানো দিল্লি ক্যাপিটালস বেশ সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে—তিন ম্যাচের সব কটিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলে এখন সবার ওপরে আছে দলটি। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল খেলে কোনো রান না করেই ফিরে গিয়েছিলেন ওপেনার জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্ক।
অভিষেক পোড়েলকে নিয়ে ওই পরিস্থিতি সামালে দেওয়ার চেষ্টা করেন লোকেশ রাহুল—পোড়েল ২০ বলে ৩৩, অক্ষর প্যাটেল ১৪ বলে ২১ ও সামির রিজভী ১৫ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে গেলেও একপ্রান্তে থেকে যান রাহুল।
দলকে সুবিধাজনক সংগ্রহ পাইয়ে দিয়ে শেষ ওভারের আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ বলে ৭৭ রান করেন তিনি। সব মিলিয়ে ইনিংসে ৭টি ছক্কা মারে দিল্লি ক্যাপিটালস। পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালস ৩ ম্যাচে মেরেছে ২৮ ছক্কা।
রান তাড়ায় নামা চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানরা কেউই সেভাবে রান করতে পারেননি। যার ব্যাটে কিছু রান এসেছে, তিনিও পাল্লা দিতে পারেননি গতির সঙ্গে। দুই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র (৬ বলে ৩) ও ডেভন কনওয়ে (১৩ বলে ১৪) সাজঘরে ফেরত যাওয়ার পর অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ও ৪ বলে ৫ রান করে আউট হন।
এরপর বিজয় শংকর নিজের প্রথম ৩১ বলে শুধু একটি বাউন্ডারি মারেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৫৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ২৬ বলে ১ চার ও ছক্কায় ৩০ রান করে তার সঙ্গী থাকেন মহেন্দ্র সিং ধোনিও। যদিও তাঁদের ৮৪ রানের জুটি শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক য প ট লস ব য টসম য র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’
প্রায় চারশ বছর আগে মুঘল আমলে নির্মিত হয় কুষ্টিয়ার ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’। অপূর্ব কারুকাজ থাকা ঐতিহাসিক এই নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত দর্শনার্থী ছুটে আসেন। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় দিনদিন সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে মসজিদটি।
ঐতিহাসিক এই মসজিদটি কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার মধ্যবর্তী ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত।
নির্মাণকালের সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও মসজিদটি ঘিরে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ আছে। ইতিহাস ঘেঁটে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুঘল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ইরাকের জমিদার শাহ সুফি আদানী ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আসেন। প্রায় চারশ বছর আগে ঝাউদিয়া গ্রামে তিনিই নির্মাণ করেন মসজিদটি।
আরো পড়ুন:
আড়াইশ বছরের পুরোনো ১৩ গম্বুজ মসজিদ
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিরকুট, ‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’
জনশ্রুতি আছে, অলৌকিকভাবে এক রাতেই মসজিদটি দৃশ্যমান হয়। মুঘল শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন রয়েছে মসজিদটিতে। দেয়াল জুড়ে নিপুণ আল্পনা, কারুকার্যময় অপূর্ব শিল্পের ছোঁয়া আর পাথরের খোদাই বলে দেয় এটি মুঘল আমলের স্থাপত্য নিদর্শন।
সুদৃশ্য পাঁচটি গম্বুজ আছে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে। চার কোনায় আছে চারটি নান্দনিক মিনার। প্রবেশ দরজায় দুইটি মিনার আছে। যা সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে। ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ১৯৬৯ সালে মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করা হয়।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মসজিদ তার সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে। এ ছাড়া, ঝাউদিয়া গ্রামে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল বা আবাসন সুবিধা না থাকায় নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না হওয়ায় মসজিদটির এখন বেহাল দশা। দেখলে মনে হয় জরাজীর্ণ অবস্থা। তাছাড়া তিন কাতারের বেশি নামাজ পড়ার জায়গা নেই। অথচ মসজিদের সামনে-পেছনে অনেক জায়গা আছে। নতুন করে রংসহ মসজিদটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “এই মসজিদটি মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছে। কারণ মোগল আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে এই মসজিদের নির্মাণ শৈলীতে অনেক সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। মুঘল স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ নির্মিত।”
তিনি আরো বলেন, “দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। শুক্রবারগুলোতে এই মসজিদে প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে আসেন।”
সেলিম উদ্দিন চৌধুরী নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মসজিদের বাইরের সৌন্দর্য রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে কিছুটা ম্লান হলেও ভেতরে চোখ ধাঁধানো নকশার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সম্পত্তি। সর্বশেষ ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে একবার মসজিদটির সংস্কার করা হয়।”
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল মসজিদটি সংস্কার না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত। তাই এর সংস্কার বা দেখভাল স্থানীয়ভাবে করা সম্ভব নয়। যে কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যাচ্ছে না।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ