জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সাতজন পাহারাদারকে (নৈশপ্রহরী) বেঁধে রেখে চারটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মোহনপুর বাজারে এ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছে।

২০ থেকে ২৫ জনের একটি ডাকাতদল চারটি দোকানের তালা কেটে পিকআপ ভ্যানে করে প্রায় ৩৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে জানিয়েছেন দোকানের মালিকরা। এ ঘটনায় একজন পাহারাদারের মাথায় আঘাত করেছেন ডাকাতরা। খবর পেয়ে আক্কেলপুর থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকেরা হলেন, বীজ ডিলার মেসার্স পাপড়ি ট্রেডার্সের কীটনাশক ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান, মেসার্স স্বাদ ট্রেডার্সের ছানাউল ইসলাম, মুদি ব্যবসায়ী রুহুল আমিন এবং ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর বাজারে প্রতি রাতে সাতজন পাহারাদার (নৈশপ্রহরী) দায়িত্ব পালন করেন। শুক্রবার রাতে তারা এক দোকান পরপর অবস্থান নিয়ে বসেছিলেন। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যানে ২০ থেকে ২৫ জনের ডাকাত দল মোহনপুর বাজারে আসে। একের পর এক সবাইকে বেঁধে রেখে ওই চারটি দোকানে লুটতরাজ শুরু করে। এ সময় রফিকুল ইসলাম নামের একজন প্রহরী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতরা তার মাথায় আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায়। এরমধ্যে মেহেদী হাসানের দোকান থেকে ২০ লাখ টাকার কীটনাশক, ছানাউল ইসলামের দোকান থেকে ৫ লাখ টাকার কীটনাশক, রুহুল আমিনের দোকান থেকে ৭ লাখ টাকার সয়াবিন তেল, সিগারেট, মসলা এবং জাহিদুল ইসলামের দোকান থেকে ২ লাখ টাকার ইলেকট্রিকসামগ্রী তারা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দোকান মালিকরা।

নৈশপ্রহরী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমিসহ আরও সাতজন বাজার পাহারা দিচ্ছিলাম। আমি বাজারের অন্য পাশে ডিউটি করছিলাম। এমন সময় একটি পিকআপ ভ্যানে ২০ থেকে ২৫ জনের ডাকাতদল এসে একের পর এক সকলকে বেঁধে রাখে। কয়েকজন আমাকেও বাঁধতে আসলে আমি চিৎকার দিতেই তারা অস্ত্রের মুখে আমার হাত-পা বেঁধে মাথায় আঘাত করে। সবাইকে বাজারের মধ্য একটি দোকানঘরে হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে দোকানের মালামাল লুট করে।’

বীজ ডিলার মেসার্স পাপড়ি ট্রেডার্সের স্বত্বাধীকারী মো.

মেহেদী হাসান বলেন, ভোর ৪টার দিকে খবর পেয়ে দোকানে এসে দেখি, ডাকাতরা আমার কীটনাশকের দোকান ঘরের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। তারা আরও তিনটি দোকানের মালামাল লুট করেছে। 

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ম ল ম ল ল ট কর ল ইসল ম প রহর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরের দাবি

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড উচ্চ আদালতে বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলেছে, এই শুনানি শেষে রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় রায় কার্যকর করার দাবিতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়া হবে।

আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন এমন দাবি জানিয়েছে। ‘শহীদ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপের মৃত্যুদণ্ড অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবি’ ব্যানারে তারা এই সংবাদ সম্মেলন করে।

সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলমান। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, রায় কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনো হুমকি, প্রলোভন বা রাজনৈতিক চাপ যেন আপনাদের প্রভাবিত করতে না পারে। রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।’

সংগঠনটির দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘আশা করছি, চলমান শুনানি আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এবং উচ্চ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখবেন।’

সংগঠনের সদস্যসচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার অনুরোধ করেন। প্রদীপ, লিয়াকতসহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিও জানান তিনি।

এ মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুনসিনহা হত্যা: সেদিন যা ঘটেছিল৩১ জানুয়ারি ২০২২

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান, ক্যাপ্টেন (অব.) শুভ আফ্রিদি, করপোরাল (অব.) তফসীর আহমেদ, নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য সাইদ ও সাবেক সৈনিক মো. নাইমুল ইসলাম।

আরও পড়ুনআসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে উপস্থাপন চলছে২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ