পাপমোচনের বাসনায় বিভিন্ন স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল
Published: 5th, April 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমী স্নানোৎসবে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিটে মহা অষ্টমী স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়। এই লগ্ন শেষ হবে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিটে। পাপমোচনের বাসনায় এই আয়োজনে শামিল হয়েছেন পুণ্যার্থীরা।
নারায়ণগঞ্জ
আজ ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সড়ক ও নৌপথে আসা পুণ্যার্থীদের ঢল নামে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে। ব্রহ্মপুত্র নদের তিন কিলোমিটার এলাকা পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখর। স্নানোৎসবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সহস্রাধিক সদস্য কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। আয়োজকদের দাবি, এবার দেশ-বিদেশ থেকে ৮ থেকে ১০ লাখ পুণ্যার্থী স্নানোৎসবে অংশ নেবেন।
এই আয়োজন ঘিরে সড়কের দুই পাশে মেলা বসেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থীদের পদচারণ বাড়তে থাকে। অনেক পুণ্যার্থী আগের দিন থেকে আসা শুরু করেন। রক্ষাকালী মন্দিরের স্নানঘাটে পরিবারসহ স্নানে অংশ নিতে এসেছেন কুমিল্লার দেবীদ্বার এলাকার মনীষা রানী দাস। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘পুণ্য লাভের বাসনায় স্নানে এসেছি। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ও দেশের মঙ্গলের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি।’
এবার ২০টি ঘাটে পুণ্যার্থীদের জন্য স্নানোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ১০ বছর ধরে স্নান উৎসবে পুরোহিতের কাজ করছেন পবিত্র চক্রবর্তী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, পুণ্য লাভের আশায় পুণ্যার্থীরা তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী ধান-দূর্বাসহ উপকরণ দিয়ে মন্ত্রপাঠ করে তর্পণ করেন। গত বছরের তুলনায় এবার পুণ্যার্থী বেশি এসেছে বলে তিনি জানান।
স্নানোৎসবে অংশ নিতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী এসেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তিনি বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে স্নানোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে স্নানোৎসব চলছে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি, কাপড় বদলানোর জায়গাসহ সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ও স্নানোৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, স্নান ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্নানোৎসব পরিদর্শনে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার প্রচুর পুণ্যার্থী এসেছেন। এখানে স্নান করার পর পবিত্র হয়ে যান। আপনারা স্নান করার পর এটা বজায় রাখবেন। আপনারা যেন সব সময় পবিত্র থাকতে পারেন।’
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসব পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষার্থে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে নদী ভাবনা
শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষার্থে নদী তীরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে নদী ভাবনা আয়োজন করেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি এবং বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সংলগ্ন নদী তীরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি কবি জামান ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল খায়ের মুন্সী, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, জাকির হোসেন, মোশাররফ হোসেন।
এসময় বক্তারা বলেন, আমাদের যেমন বলা হয়ে থাকে মাছে ভাতে বাঙালি! নদীমাতৃক বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য মাছ ও ভাত। তাই বাঙালিকে বলা হয় ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’।
তেমনি বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ; আমাদের দেশ বিশ্বে নদ-নদীর দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও, এখানে প্রতি বছরই নদ-নদীর সংখ্যা কমছে। দখল, দূষণে শুধু নদী-খালই মরছে না, এখন দেশও ধ্বংসের পথে।
বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে দেশের নদ-নদী রক্ষা করতে হবে। নদ-নদী বেঁচে না থাকলে, দেশও ধ্বংস হতে বাধ্য।