৬ দিনে সালমান-রাশ্মিকার সিনেমার আয় কত?
Published: 5th, April 2025 GMT
প্রায় দেড় বছর বিরতি নিয়ে বক্স অফিসে ফিরেছেন সালমান খান। এবারের ঈদে মুক্তি পায় সালমান খান এবং রাশ্মিকা মান্দানা অভিনীত সিনেমা ‘সিকান্দার’। এটি পরিচালনা করেছেন এ আর মুরুগাদোস।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে গত রবিবার (৩০ মার্চ) মুক্তি পাওয়া ‘সিকান্দার’ সিনেমাটি বক্স অফিসে আশানুরূপ পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়েছে। বক্স অফিস বিশ্লেষক স্যাকনিলকের মতে, ৬ দিনে সিনেমাটি ভারতে ৯৩.
সিকান্দার প্রথম সপ্তাহের শুক্র-শনিবারের কালেকশন মিস করে। কারণ, মুক্তি পায় রবিবার ৩০ মার্চে। স্যাকনিল্ক জানিয়েছে, সিনেমাটি প্রথম শুক্রবারে (ষষ্ঠ দিনে) মাত্র ৩.৫ কোটি রুপি আয় করেছে। সালমান খানের সিনেমার যে এমন হাল হতে পারে, তা হয়তো অনেকে কল্পনাতেও আনেনি। সালমান খানের শেষ সিনেমা ‘টাইগার থ্রি’ ষষ্ঠ দিনে ১৩.২৫ কোটি রুপি আয় করেছিল।
আরো পড়ুন:
কত টাকা আয় করল সালমান-রাশমিকার সিনেমা?
বুলেট প্রুফ গ্লাসের ওপার থেকে দেখা দিলেন সালমান
অনেকেই ভেবেছিলেন, ঈদের সিনেমা দিয়ে অন্তত ৫০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করবেন সালমান খান। যেখানে ইতিমধ্যেই বিরাজমান শাহরুখ খান, সানি দেওল, ভিকি কৌশল, রণবীর কাপুররা।
স্যাকনিলক জানিয়েছে, ভারতে ২৬ কোটি টাকা দিয়ে খাতাখোলার পর সিকান্দার সিনেমাটি গত ৬ দিনে ৯৪ কোটির কাছাকাছি আয় করেছে, আর বিদেশের মাটিতে আয় করেছে ৪২ কোটি। তবে সিনেমাটির টিম দাবি করেছে যে, ৫ দিনে ১৬৯.৭৮ কোটি রুপি আয় করেছে সিকান্দার। এবার দেখার বিষয় ভারতীয় বক্স অফিসে শনিবার ও রবিবার অর্থাৎ সপ্তাহান্তে কেমন পারফর্ম ‘সিকান্দার’। বদলায় কি না, সালমান খানের সিনেমার ভাগ্য।
সালমান খান ও রাশ্মিকা মান্দনা ছাড়াও ‘সিকান্দার’-এ অভিনয় করেছেন সত্যরাজ, কাজল আগরওয়াল, শারমান যোশি, প্রতীক বব্বর, কিশোর, যতীন সরনা ও সঞ্জয় কাপুর। এটি সঞ্জয় রাজকোট ওরফে সিকান্দার নামে এক ব্যক্তির গল্প বলে, যিনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ এবং এই নিয়ে নিজের ছেলেরই মুখোমুখি হন। সিনেমায় রাশ্মিকা তার স্ত্রী সাইসরি-র চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
মুক্তির আগেই পাইরেসির শিকার হয়েছিল ‘সিকান্দার’। একাধিক ওয়েবসাইটে ফাঁস হয়ে যায় ‘সিকান্দার’। ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইএমপিপিএ) এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নবীজি (সা.) নিজে ধ্বংস করেন যে মসজিদ
তাবুক যুদ্ধে যাওয়ার পথে এক ঘণ্টা পথ চলে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুআওয়ান নামক স্থানে থামলেন। কোবা মহল্লায় নতুন একটি মসজিদ হয়েছে। নির্মাণকারীরা নবীজির (সা.) কাছে এসে বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, কোবার বর্তমান মসজিদটি আমাদের থেকে বেশ দূরে। দুর্বলদের জন্য কিংবা বৃষ্টির রাতে নামাজ পড়ার জন্য আমরা একটি মসজিদ নির্মাণ করেছি। আপনি আসবেন এবং নামাজ পড়ে মসজিদটি উদ্বোধন করে দেবেন। এতে আমাদের কল্যাণ হবে।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘আমি সফরে যাচ্ছি। ফেরার পথে ওখানে যাব, ইনশাআল্লাহ।’ (তাফসিরে মারেফুল কোরআন, মুফতি মুহাম্মাদ শফি, অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, পৃ. ৫৯২)
তাবুক থেকে ফেরার পথে নবীজি (সা.)কে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা মসজিদ তৈরি করেছে ক্ষতিসাধন, কুফুরি এবং মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, আর যে ব্যক্তি আগে থেকেই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের নিমিত্তে, তারা অবশ্যই শপথ করবে যে আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ছাড়া নয়। আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তারা নিশ্চিত মিথ্যাবাদী। তুমি ওর ভেতরে কখনো দাঁড়াবে না। প্রথম দিন থেকেই যে মসজিদের ভিত্তি তাকওয়ার (খোদাভীতি) ওপর প্রতিষ্ঠিত, তোমার দাঁড়ানোর জন্য সেটাই অধিক উপযুক্ত, সেখানে এমন সব লোক আছে যারা পবিত্রতা লাভ করতে ভালোবাসে, আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।
আরও পড়ুনকুরাইশ নেতার সঙ্গে মহানবীর (সা.) ঐতিহাসিক সংলাপ১৯ এপ্রিল ২০২৫কে উত্তম? যে তার ভিত্তি আল্লাহ ভীরুতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপর স্থাপন করে সে, নাকি ওই ব্যক্তি যে তার ভিত্তি স্থাপন করে পতনোন্মুখ একটি ধসের কিনারায় যা তাকে নিয়ে জাহান্নামের আগুনে ধসে পড়বে? আল্লাহ অত্যাচারীদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। তাদের তৈরি ঘরটি তাদের অন্তরে সব সময় সন্দেহের উদ্রেক করে যাবে, যে পর্যন্ত না তাদের হৃদয়গুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, মহা প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ১০৭-১১০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন একদল সাহাবিকে এই কথিত মসজিদটি ভাঙতে পাঠালেন। তিনি মদিনায় পৌঁছার আগেই স্থাপনাটি একেবারে ধ্বংস করে দেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির, ৫/৪৪)
তাফসিরুল মুনিরে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) মালিক বিন দুখশুম, মাআন বিন আদি, আমের বিন সাকান ও ওহশিকে ডেকে এই মসজিদ জ্বালিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তাঁরা সেটি জ্বালিয়ে দেন এবং ধ্বংস করে ফেলেন। অবিশ্বাসের বিস্তার ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ব্যক্তিদের ঘাঁটি হিসেবে এ মসজিদ বানানো হয়েছিল। সেখানে তারা লোক দেখানো নামাজ পড়ত আর অশান্তি সৃষ্টি এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে বহিঃশত্রুর আক্রমণের সুযোগ তৈরিসহ নানা রকম ষড়যন্ত্র করত। খ্রিষ্টান পাদরি আবু আমেরের উসকানিতে এটি গড়ে তোলা হয়েছিল। আবু আমের ছিল পথভ্রষ্ট ও অবিশ্বাসী। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার পর আবু আমের একবার তাঁর কাছে এসে ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করল। নবীজি (সা.) উত্তর দিলেন। কিন্তু সে সন্তুষ্ট হলো না। বলল, ‘আমাদের মধ্যে যে মিথ্যুক, সে যেন অভিশপ্ত ও আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মারা যায়। আর আমি আপনার প্রতিপক্ষের সাহায্য করব।’ সে প্রতিটি যুদ্ধে মুসলমানদের বিরোধিতা করে চলল। হাওয়াজেনরা মুসলমানদের কাছে পরাজিত হলে সে সিরিয়ায় চলে যায়। সিরিয়া ছিল সেসময় খ্রিষ্টানদের কেন্দ্র। সেখানে আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনকীভাবে জিন জাতির সৃষ্টি হলো১৮ এপ্রিল ২০২৫এর আগে রোম সম্রাটকে মদিনায় আক্রমণের প্ররোচনা দিয়েছিল আবু আমের। তখন সে মদিনার মুনাফিকদের কাছে চিঠি লিখেছিল, ‘রোম সম্রাটকে দিয়ে মদিনায় আক্রমণের চেষ্টা আমি করছি। সম্রাটের সাহায্যের জন্য সম্মিলিত শক্তি গড়ে তোল। সে জন্য মসজিদের নাম দিয়ে তোমরা একটি ঘর বানাও। সে ঘরে সংগঠিত হও, যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম রাখো। পরস্পরে কর্মপন্থা ঠিক করো।’ মদিনার ১২ জন মুনাফিক তাই করল। মদিনার অদূরে কোবা এলাকায় একটি মসজিদ করল। এটি ‘মসজিদে জিরার’ নামে পরিচিত। (তাফসিরে মারেফুল কোরআন, মুফতি মুহাম্মাদ শফি, অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, পৃষ্ঠা: ৫৯২-৫৯৩)
আল্লাহ মানুষকে মসজিদ নির্মাণে উৎসাহিত করেছেন। নবীজি (সা.) তাগিদ করেছেন। জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তবে মসজিদ নির্মাণ হতে হবে তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। মুসলমানদের কল্যাণের জন্য। লোক দেখানো, লৌকিকতা প্রদর্শন, আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বা ইসলামের ক্ষতিসাধন হয়—এমন মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না।
লেখক: আলেম
আরও পড়ুনউত্তম ব্যবহার হৃদয়ের জান্নাত১৮ এপ্রিল ২০২৫