বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার দুপুরে স্থানীয় শহীদ টিটু মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী, সাথী ও সদস্যদের প্রীতি সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে প্রার্থী করা হয়েছে অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিনকে, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে অধ্যক্ষ শাহাদাতুজ্জামান, বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাচিয়া) আসনে নূর মোহাম্মদ আবু তাহের, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে অধ্যক্ষ মাওলানা তায়েব আলী, বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে দবিবুর রহমান, বগুড়া-৬ (সদর) আসনে আবিদুর রহমান সোহেল এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে প্রার্থী করা হয়েছে গোলাম রব্বানীকে। 

জামায়াতে ইসলামীর বগুড়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার বাস্তবায়ন হবে না। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, যারা জামায়াত-শিবিরের দিকে চোখ রাঙানোর চেষ্টা করছেন তারা সাবধান হয়ে যান। এই দেশ কারও পারিবারিক সম্পত্তি নয়, এটি ১৮ কোটি মানুষের। দেশের মানুষ যাকে চাইবে, তারাই দেশ পরিচালনা করবে।

সরকার ও বিরোধীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায়, তারা মূলত শেখ হাসিনার দুঃশাসনকেই ফিরিয়ে আনতে চায়। যারা নেত্রীর বাড়ির সামনে থেকে বালুর ট্রাক সরাতে সাহস পায়নি, তারাই এখন গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে। সরকারের ভেতরে-বাইরে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। পলাতক নেত্রীর কথায় উঁকি-ঝুঁকি মারলেও লাভ হবে না। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা দেশে ফিরবেন শুধু ফাঁসির আসামি হিসেবেই।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী এবং আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব ফেডারেশন (ইফসু)’র সেক্রেটারি জেনারেল ড.

মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ।
এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহীম ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠান শেষে একটি র‌্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না।”

জুলাই আগষ্টের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার মোহাম্মদপুর বসিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর আ‌য়ো‌জিত গণসমাবেশে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

নুর ব‌লেন, “জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণেই অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার করা সম্ভব হয় নাই।”

আরো পড়ুন:

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দা‌বি গণঅধিকার প‌রিষ‌দের

“প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে। ২/১ টি দলের সাথে সখ্যতা গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাচ্ছে। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা দলবাজি করবে তাদের পরিণতি হারুন-বেনজীরদের মতো হবে।”

তি‌নি ব‌লেন, “সড়ক-পরিবহন, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে। কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দিচ্ছে, জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না।এদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, অধিকার আদায়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক-শ্রমিক জীবন দেয় আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ ভাঁওতাবাজ ও ভণ্ড নেতারা, ওপর তলার কিছু লোকেরা। তাই সাধারণ এখন নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে হবে।”

রাষ্ট্রের সংস্কার করে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার আহ্বান জা‌নি‌য়ে নুর ব‌লেন, “ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলসমূহকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানাই।”

“জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে চিরতের উৎখাত করতে জুলাই আন্দোলনের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।”

নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমান রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে দেশের সংষ্কার প্রয়োজন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ কোন বক্তব্য দেয় নাই। তবে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, যারা ফ্যাসিবাদ হটাতে সক্রিয় ছিলেন, আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

এ সময়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ঢাকা-১৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত নেতাকর্মী-জনতার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক।

গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরে সহ-সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, যুগ্ম সাধারণ মো. ইমরান প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর
  • অন্তর্বর্তী সরকার যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন হয়নি: ফরহাদ মজহার
  • মতপার্থক্যের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান সাইফুল হকের 
  • আন্দোলন মনে হয় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে: তাহির জামান প্রিয়র মা