শুক্রবার মধ্য রাত থেকে বন্দরের লাঙ্গলবন্দের আদি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুইদিন ব্যাপি অষ্টমী স্নানোৎসব। শুক্রবার দিবাগত রাত  ২টা ৭ মিনিটে স্লানের লগ্ন শুরু হয়।

লগ্ন শুরুর পরই তীর্থস্থানের ২০টি স্নান ঘাটে পূর্ণ্যাথীদের ঢল নামে। হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র , হে লৌহিত্য , আমার পাপ হরণ করো”। এই মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা , ধান  দুর্বা , হরিতকি , ডাব, আমপাতা পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন তীর্থ যাত্রীরা।

এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ,নেপাল, ভূটান ও শ্রীলংকা  থেকে কয়েক লাখ পূণ্যার্থী স্নানোৎসবে অংশ নিচ্ছেন বলে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান। শনিবার রাত ১২ টা ৫১ মিনিটে বিহীত পূজার মাধ্যমে শেষ হবে অষ্টমী স্নানোৎসব। 

লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা শিখন সরকার শিপন জানান, ত্রেতা যুগে পিতার আদেশ পালনের জন্য মাকে কুঠার দিয়ে হত্যা করেন পরশুরাম। মাতৃ হত্যার পাপে পরশুরামের হাতে কুঠার লেগে থাকে। কোনোভাবেই কুঠার হাত থেকে ছাড়াতে পারছিলেন না।

তখন অশোক বনে একটি জলাধারে ডুব দিলে তার পাপ মোচন হয়। পরশুরাম সেই জলাধার লাঙ্গল দিয়ে কেটে ব্রহ্মপুত্র নদে এনে মিলিয়ে দেন।  সেই থেকে নাম হয় লাঙ্গলবন্দ। সেই থেকে মানুষ পাপ মোচনের আশায় এখানে স্নান করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে স্ত্রীসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে লাঙ্গলবন্দে এসেছেন  ফনি চন্দ্র দাস।  তিনি গন্যমাধ্যমকে  জানান, প্রতি বছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে পূণ্য লাভের আশায় তারা লাঙ্গলবন্দ স্নানে আসেন।  এখানে স্নান করলে পাপ মোচন হয়।

চট্টগ্রামের মীর সরাই থেকে পরিবারের সঙ্গে এসেছেন  ষাটোর্ধ্ব বাসন্তী রানী সরকার। তিনি জানান, লাঙ্গলবন্দের আদি ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্লা তিথিতে স্নান করলে ব্রহ্মার কৃপা লাভ করা যায়। তাই তিনি লাঙ্গলবন্দে এসেছেন।

বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান  জানান, ২০ টি স্নান ঘাটে সুষ্ঠুভাবে স্নান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে নলকুপ  ১শ’ ৬০টি অস্থায়ী  টয়লেটসহ স্নান ঘাটে  কাপড় পরিবর্তন কক্ষ নির্মাণ  করা হয়েছে।  থাকছে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ডুবুরি দল।

বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, পূর্ণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় দেড় হাজার পুলিশ ,৪শ’ ৭১ আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। স্থাপন করা হয়েছে সেনা ক্যাম্প। র‌্যাব ছাড়াও সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনীর কিছু সদস্য। তীর্থস্থানের তিন কিলোমিটার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। যানজট নিরসনে ট্রাফিক  ও নদীতে ৬৪ জন নৌপুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে ড্রোন ক্যামেরাও।

স্নান উপলক্ষে বন্দর উপজেলা বিএনপিসহ অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান পূণ্যার্থীদের মাঝে খাবার সরবরাহ ও নানা সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সেবায় রয়েছে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক মেডিকেল টিম।

এ দিকে সন্ধ্যায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।  নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিয়া, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ মজুমদার, বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, ওসি তরিকুল ইসলাম, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম ভুইয়া হিরন, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, স্নান কমিটির উপদেষ্টা শিখন সরকার শিপন, সাধারণ সম্পাদক তাপস কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল ঙ গলবন দ স ন ন ৎসব ল ইসল ম অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধের সব সূচক বাড়ছে

দেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এমন উদ্বেগের কথা শোনা যায়। পুলিশের গত তিন মাসের অপরাধবিষয়ক পরিসংখ্যান তাদের উদ্বেগকে জোরালোভাবে সমর্থন করছে। এই পরিসংখ্যান অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকেও তুলে ধরছে।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় করা মামলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়– খুন, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ছয় ধরনের অপরাধ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে। যদিও গত বছরের এই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান সময়ের বড় ধরনের পার্থক্য আছে। ফারাক আছে পুলিশের সামর্থ্যের জায়গায়ও।    

সারাদেশের সব ধরনের অপরাধের তথ্য নথিভুক্ত করে পুলিশ সদরদপ্তর। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুধু হত্যার ঘটনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে মামলা হয়েছে ২৯৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩০০টি এবং মার্চে ৩১৬টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চে সারাদেশে হত্যা মামলা নথিভুক্ত হয়েছে যথাক্রমে ২৩১, ২৪০ ও ২৩৯টি। গত বছরের মার্চের তুলনায় চলতি বছরের মার্চে হত্যা মামলা বেশি হয়েছে ৭৭টি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বেশি হয়েছে যথাক্রমে ৬৩ ও ৬০টি। 

যদিও পুলিশের ভাষ্য, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা মামলা করতে পারেননি, এমন বেশ কিছু ঘটনার মামলা নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ কারণে সংখ্যা বেড়েছে। পুলিশে দেওয়া হিসাবমতে, জানুয়ারিতে এ ধরনের পুরোনো ঘটনার মামলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ৫৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৪৮টি এবং মার্চে আগের ঘটনার ৭৭টি মামলা যুক্ত হয়েছে। 

জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ। থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সুযোগ নেয় দুর্বৃত্তরা। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। কিন্তু সরকারের আট মাস পার হয়েছে। এখন অপরাধের যে চিত্র, তাকে উদ্বেগজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পুলিশকে এখনই অপরাধ দমনের কৌশল ঠিক করতে হবে। তা না হলে সমাজে অপরাধজনিত অস্থিরতা তৈরি হবে।    

জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বাহারুল আলম গত বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, সমাজে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশের যে প্রাধান্য, তা প্রতিষ্ঠিত করতে কিছুটা সময় লাগছে। সমাজে অনেকের মধ্যে এমন ধারণা– এখন চাইলে যা ইচ্ছা তা করা যায়। পুলিশ তো শত্রু! তারা কিছু করতে পারবে না। ৫ আগস্টের পর এমন ধারণা তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে। 
আইজিপি বলেন, এখনও পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। থানায় হামলা হচ্ছে। জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১২, ফেব্রুয়ারিতে ২২ ও মার্চে ৪০টি। তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে অনুরোধ, আমাদের কাজ করতে দেন। আমাদের কাছে টেনে নেন। পুলিশ ছাড়া এই সমাজ চলবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নানা উদ্যোগ নেয়। অস্ত্র উদ্ধার, অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সারাদেশে চালানো হয় অভিযান। এর পর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ডেভিল হান্ট’ নামে আরেকটি বিশেষ অভিযানও শুরু হয়। তবে মার্চের শুরুর দিকে জানানো হয়, অপারেশনের নাম ডেভিল হান্ট না থাকলেও অভিযান চলমান থাকবে। দেশব্যাপী আভিযানিক কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় খুনোখুনি, অপহরণ, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, নারী ও শিশু নির্যাতন ঘটছে। 

গত বছরের ২০ জানুয়ারি পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মো. বাবু নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। নিহতের স্বজন ও পুলিশের দাবি, ওই হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বে দেন মুসা সিকদার। বাবু ও মুসা গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। ৫ আগস্টের পর জামিনে বেরিয়ে মুসা তার সঙ্গীদের নিয়ে বাবুকে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এই মুসা। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ওমানে পালিয়ে যান। পরে তাঁকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনে পুলিশ। 
গত ১০ জানুয়ারি ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে কম্পিউটার ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক ও ওয়াহিদুল হাসান দীপুকে ১০-১২ জনের একটি দল এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওয়াহিদুল হাসান দীপু শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অচেনা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন। 

এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মিরপুরের আব্বাস আলী, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসু। অভিযোগ আছে, কারাগারে থেকেও নানা কৌশলে তারা অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন।  

পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, অপরাধের তথ্য বিশ্লেষণ করে সংখ্যাগত হিসাব পাওয়া যায়। তাতে কোন অপরাধ কী কারণে বাড়ছে বা কমছে তার বিশ্লেষণ থাকে না। এখন থেকে অপরাধের পরিসংখ্যানের পাশাপাশি তা সংঘটিত হওয়ার পেছনের কারণ ও মোকাবিলায় করণীয় নিয়েও সুপারিশ রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। 

বিজু উৎসব উদযাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত দিন পর গত বৃহস্পতিবার তাদের মুক্তি দেয় অপহরণকারীরা। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারিতে সারাদেশে অপহরণের ঘটনা ঘটে ১০৫টি, ফেব্রুয়ারিতে ৭৮টি এবং মার্চে ৮৩টি। ২০২৪ সালের একই সময়ে অপহরণের ঘটনা ছিল যথাক্রমে ৫১, ৪৩ ও ৫১টি।  

অপরাধের পরিসংখ্যান বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের আরেক কর্মকর্তার দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঠিকঠাক মামলা ও জিডি নেওয়া হতো না। এখন যে কোনো অপরাধ ঘটলেই মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার এখন কোনো ঘটনা ঘটলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। এতে ছোটখাটো অনেক ঘটনায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। 
গত ১ মার্চ মাগুরায় শিশু আছিয়া খাতুন তার বোনজামাইয়ের বাসায় ধর্ষণের শিকার হয়। হাসপাতালে মারা যায় আছিয়া। ওই ঘটনা দেশব্যাপী তীব্র আলোড়ন তোলে। এর পরও নানা স্থানে ধর্ষণের ঘটনা ক্ষুব্ধ করে মানুষকে। 

সারাদেশে পুলিশের মামলার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চ মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৫৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৪৩০ এবং জানুয়ারিতে ১ হাজার ৪৪০টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একই ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ১ হাজার ৪৩, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৩৭১ ও মার্চে ১ হাজার ৫০৯টি।

পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট ‘আমরাই পারি’র প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক সমকালকে বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বা কমানোর কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সমাজের যে বাধাগুলো রয়েছে, তাতে নারী আঘাতপ্রাপ্ত হয়। নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা বন্ধে সরকার সংবেদনশীল– এটা দৃশ্যমান হতে হবে।   

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে অপরাধপ্রবণতা ও পরিস্থিতির বিষয় তুলে ধরা হয়। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী অপরাধের ঘটনার পেছনের কয়েকটি কারণ তারা উল্লেখ করেছে। তার মধ্যে আছে– আইনের প্রতি মানুষের মধ্যে সাময়িক অনাস্থা ভাব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে মনোবলের অভাব। অপরাধীরা একে কাজে লাগিয়ে মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি করছে।  
পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডাকাতি ও চুরির ঘটনাও বেড়ে গেছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক সমকালকে বলেন, অপরাধীর পার পেয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি যখন থাকে, তখন অপরাধ বাড়ে। আইনের দ্রুত প্রয়োগ না হলে ও আইনের শাসনের ঘাটতি থাকলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।  

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, অপরাধের কারণ মাথায় রেখে প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হবে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় তার সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয় দেখা যাবে না। যদি চিহ্নিত কোনো অপরাধীর কোনো পৃষ্ঠপোষক থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে সাজা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আইনি কাঠামোর বাইরে প্রভাব বিস্তার করে বা হুমকি-ধমকি দিয়ে যেন কোনো মামলা নিষ্পত্তি না করা হয়, সেদিকে নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি। 

এসবের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পক্ষকে আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা দিলে আস্তে আস্তে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করেন ড. তৌহিদুল হক। 

 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ