রামনবমী উপলক্ষে  আগামীকাল রোববার বিজেপির ডাকা শোভাযাত্রাকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এ শোভাযাত্রাকে ঘিরে সেখানে গোলযোগের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তবে রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনো শোভাযাত্রা বের হতে পারবে না।

গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জানা গেছে, রামনবমীর ২ হাজার ৫২৫টি শোভাযাত্রার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কলকাতা থেকে ১ হাজার ৬০০ অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। শুধু তা–ই নয়, ২৯ জন শীর্ষ আইপিএস পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে।

পুলিশ আরও নির্দেশ দিয়েছে,  রামনবমীর শোভাযাত্রায় মোটরসাইকেল থাকবে না , বাজানো যাবে না ডিজে। শোভাযাত্রায় কোনো অস্ত্র নেওয়া যাবে না। অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা করা যাবে না। আইন ভাঙলেই কড়া শাস্তির ব্যবস্থা থাকছে এদিন।

কাল সবচেয়ে বড় শোভাযাত্রা হওয়ার কথা রয়েছে কাশীপুরে দুটি, বড়বাজার, এন্টালি, ক্রিস্টোফার রোড, খিদিরপুর, পিকনিক গার্ডেন, হাওড়া থেকে একটি করে। পুলিশ আগামীকাল দুপুর থেকে কলকাতায় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মিছিলের পথে বহুতল বাড়ির ছাদেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেউ যাতে মিছিলের ওপর ইটপাটকেল বা বোমা ছুড়তে না পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। শোভাযাত্রার ভিডিও করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা দিয়েছেন, কাল কলকাতাসহ এই রাজ্যজুড়ে রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশ নেবে দেড় কোটি ভক্ত।

কাল যাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ উসকানিমূলক পোস্ট দিতে না পারে, সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে খবর রয়েছে, ভুয়া পোস্ট দিয়ে উসকানি দেওয়ার পাশাপাশি অশান্তি ছড়ানোর কেউ কেউ চেষ্টা করতে পারে, সেদিকে পুলিশকে কড়া নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, আসানসোল, শিলিগুড়িসহ আটটি জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয়েছে নারী পুলিশ সদস্য।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাল সবচেয়ে বেশি রামনবমীর শোভাযাত্রা বের হবে পুরুলিয়ায়। শোভাযাত্রার সংখ্যা ২৯২। এরপর বীরভূমে ২২২টি, ইসলামপুরে ১৮০টি, আসানসোলে ১৮৮টি শোভাযাত্রা বের করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।

কয়েক বছর ধরে যেসব জেলায় গোলোযোগ হয়েছিল বেশি, সেসব বিবেচনা করে এবার হাওড়া, আসানসোল, বারাকপুর, চন্দননগরের মতো পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বেশি। একই সঙ্গে কোচবিহার, মালদহ, ইসলামপুর, হাওড়া, শিলিগুড়ি, চন্দননগর ও বারাকপুরের বিভিন্ন এলাকায় আজ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন নিয়োজিত আইপিএস কর্মকর্তাদের।

আর কলকাতায় কাল ৬০–এর বেশি রামনবমীর শোভাযাত্রা বের হওয়ার কথা রয়েছে। পুলিশও কলকাতার নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। পর্যবেক্ষণে রাখা থাকবে ড্রোনও।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে: নুরুল হক

প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। প্রশাসন নিয়ে তিনি বলেছেন, দু–একটি দলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাচ্ছে। যারা দলবাজি করবে, তাদের পরিণতি বেনজীর–হারুনের মতো হবে।

জুলাই আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক এসব কথা বলেন। শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা।

গণ–অভ্যুত্থানের আট মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন নুরুল হক। গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, এসব কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুংকার দিচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সে কারণেই অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও তাদের বিচার করা সম্ভব হয়নি।

ফ্যাসিবাদ নির্মূলে শুক্রবার থেকে গণ অধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তিনি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে, যা মোটেও কাম্য নয়।

সড়ক-পরিবহন, কলকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে বলে অভিযোগ করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা আশ্রয়–প্রশয় দিচ্ছেন। জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান। দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি রকিবুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ