যেখানে সহজেই মিলছে কক্সবাজারের সব যানবাহন–চালকের তথ্য
Published: 5th, April 2025 GMT
বাসে যাতায়াতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। কখনো বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়। কখনো নারী যাত্রীরা শিকার হন হয়রানির। আবার চলন্ত বাসে লুটপাট কিংবা ডাকাতির ঘটনাও ঘটে অহরহ। এসব সমস্যা সহজে সমাধান করতে ওয়েবসাইট ও মুঠোফোন অ্যাপস তৈরি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এখন সহজেই জানানো যাবে অভিযোগ। জানা যাবে নানা তথ্য।
অনলাইন বাস টার্মিনাল বা ‘www.
ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায়, কক্সবাজারে চলাচল করা সব বাসের সূচি, কাউন্টারের ফোন নম্বর, ভাড়ার তালিকা—সবই রয়েছে। বাসের টিকিটও কেনা যায় এই ওয়েবসাইট থেকে।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অনলাইন বাস টার্মিনাল ওয়েবসাইটটি দেশের সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মডেল হতে পারে। ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা ওয়েবসাইট ও অ্যাপস ঘেঁটে অচেনা ও নতুন জায়গার সন্ধান এবং নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কিংবা হয়রানির শিকার হলে তাঁরা মুঠোফোনে অভিযোগ করে প্রতিকারও পাচ্ছেন।
অনলাইন বাস টার্মিনাল ওয়েবসাইটে যুক্ত আছে ‘কক্সক্যাব’ (www.coxscab.com) নামে একটি ট্যুরিস্ট সার্ভিস। কক্সবাজার পৌঁছার আগে বাস কিংবা ট্রেনে বসে হোটেলে যাতায়াতের যানবাহন (টমটম, মাইক্রোবাস ও কার) আগাম ভাড়া নিতে পারেন। হোটেল কক্ষ বুকিংয়ের সুযোগও রাখা আছে। বিশেষ করে কক্সবাজার আইনকনিক রেলস্টেশন পৌঁছার পর (ভোর-সকাল রাতে) যাত্রীরা সাত কিলোমিটার দূরের কলাতলীর হোটেলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যানবাহন ভাড়া নিয়ে দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনায় শিকার হন। এই অ্যাপস সে ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যায়।
তাৎক্ষণিক অভিযোগ জানানোর মাধ্যমঅনলাইন বাস টার্মিনালে আছে সেবা নিয়ে রেটিং, রিভিউ ও অভিযোগ জানানোর সুযোগ। বাসে বসেই চালকের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ, বেপরোয়া গতি, যাত্রীসেবা, যাত্রী হয়রানিসহ যেকোনো নেতিবাচক কিংবা ইতিবাচক বিষয়ে জানানো যাবে। এমনকি ছবিসহ অভিযোগ জানানোর সুযোগও রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যাত্রীদের প্রদত্ত রেটিংয়ের ওপর পরিবহনের সার্বিক রেটিং নির্ধারিত হয়। যাত্রীদের প্রদত্ত অভিযোগ মুহূর্তেই ট্রাফিক পুলিশ কিংবা নিজ নিজ পরিবহন সংস্থার কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যায়। গুরুত্ব বিবেচনা করে ট্রাফিক পুলিশ অভিযোগ যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
অনলাইন বাস টার্মিনালে রয়েছে ‘ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট’। জরুরি প্রয়োজনে চলন্ত বাসের যাত্রীরা ইমার্জেন্সিতে ক্লিক করে পুলিশের সহযোগিতা চাইতে পারবেন।
ইমার্জেন্সিতে ক্লিক করলে মুঠোফোনের গুগল ম্যাপ লোকেশন চালু করার নির্দেশনা আসে। লোকেশন অন করার পর নাম ও জরুরি সহযোগিতার কারণ উল্লেখ করে ‘সাবমিট’ করলে গুগল ম্যাপে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশসহ যাত্রীর অবস্থান নির্দেশ করে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীর অবস্থান জানতে পারে। তা ছাড়া দৈনিক বাস শিডিউল থেকে ওই বাসের নম্বর, চালক ও সুপারভাইজারের নাম ও মুঠোফোন নম্বর জেনে নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়। দুর্ঘটনা, ডাকাত ও দস্যুতার কবলে পড়া কিংবা যৌন হয়রানিসহ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে বাসের যাত্রীরা এই ডিজিটাল সুবিধা কাজে লাগাতে পারবেন।
ব্যবহারকারীরা যা বলছেনগত মঙ্গলবার সকালে শহরের কলাতলী হাঙর ভাস্কর্য মোড়ে নামেন ঢাকার শ্যামলী রিং রোড এলাকার ব্যবসায়ী ছৈয়দুল মোস্তফা। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও দুই ছেলে। সেখান থেকে অটোরিকশায় উঠে চলে যান কলাতলী সৈকত–তীরের একটি হোটেলে। অটোরিকশার ওঠার আগে ছৈয়দুল মোস্তফা (৫০) প্রথম আলোকে বলেন, মুঠোফোনে অনলাইন বাস টার্মিনাল অ্যাপসটি আগেই ডাউনলোড করা ছিল। অ্যাপস কাজে লাগিয়ে তিন দিন আগে তিনি বাসের টিকিট, হোটেল কক্ষ ভাড়া করেন তিনি। পর্যটকদের জন্য অ্যাপসটি সময়োপযোগী।
সিলেটের হরিপুরের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (৪৫) প্রথম আলোকে বলেন, অনলাইন বাস টার্মিনাল ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তিনি উপকৃত হয়েছেন। কোন বাস কয়টায় ছাড়বে, কখন পৌঁছাবে, ভাড়া কত, কাউন্টারের ফোন নম্বর—এসব তথ্য খুঁজতে বেগ পেতে হয়নি।
অনলাইন বাস টার্মিনাল চালুর পর থেকে সড়কের শৃঙ্খলা কিছুটা ফিরে এসেছে জানিয়ে শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, এ বিষয়ে অনেকের জানা নেই। তবে কয়েক দিন ধরে কলাতলীর মোড়সহ সৈকতে অ্যাপসটির একাধিক সাইনবোর্ড তোলা হয়েছে।
গ্রিনলাইন পরিবহনের পরিচালক (ইনচার্জ) সুলতান আহমদ বলেন, অনলাইন বাস টার্মিনাল অ্যাপস কাজে লাগিয়ে পর্যটকেরা যেমন বহুমুখী সেবা পাচ্ছেন, তেমনি পরিবহনের মালিক-চালক-কর্মচারীরাও সতর্ক হচ্ছেন।
পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি, লুটপাটসহ নারীদের যৌন হয়রানির মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সড়ক নিরাপত্তা শাখা ‘যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের কন্ট্রোল সিস্টেমের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি গাড়িতে প্যানিক পুশ বাটন সিস্টেম চালুর’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু প্রতিটি গাড়িতে ইমার্জেন্সি প্যানিক পুশ বাটন সিস্টেম চালু করা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ছাড়া বাস দুর্ঘটনায় পতিত হলে কিংবা কোনো নারী যৌন হয়রানি ও যাত্রীরা ডাকাতির কবলে পড়লে চলন্ত বাস থেকে তাৎক্ষণিক কোনো যাত্রীর পক্ষে ইমার্জেন্সি প্যানিক বাটন ব্যবহার করা অনেকটা অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে কক্সবাজারে চালু হওয়া অনলাইন বাস টার্মিনালের অ্যাপস ও ওয়েবসাইটে ‘ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট’ কাজে লাগানো যেতে পারে। ব্যবহারও অনেক সহজ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চলন ত ব স পর বহন র ন হয়র ন ব যবহ র ব যবস র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের সঙ্গে যারা আঁতাত করছেন, তাদের ছাড় নয়: টুকু
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, “৫ আগস্টের পর যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছেন, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “বিগত ১৬ বছর অনেক নির্যাতন, খুন ও গুম করেছে তারা। আজ তারাই (আওয়ামী লীগ নেতারা) দেশ থেকে পালিয়েছেন। এটাই আল্লাহুর বিচার। তাই যতই চেষ্টা করুক, আগামী ৪০ বছরেও আ.লীগের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই।”
আরো পড়ুন:
ইশরাকের মেয়র পদের মেয়াদ নিয়ে যা জানা গেল
অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান
তিনি আরো বলেন, “দীর্ঘদিন বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মন খুলে কথা বলতে পারেনি। আমি বিশ্বাস করতে চাই, কাজিপুরের মানুষের মনে মূল্যবোধের জন্ম হয়েছে। তাই আগামীতে যার হাতে ধানের শীষ দেখবেন তাকেই ভোট দেবেন।”
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “গত ১৬ বছর বিএনপি কথা বলতে পারেনি। এই দেশে বিএনপি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জেলা বিএনপির সভাপতি বেগম রুমানা মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কণ্ঠশিল্পী কনক চাঁপা ও নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ