মাস কয়েক আগে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের মধ্যে নিয়মিত বাক্‌যুদ্ধ হতো। রাজনীতিতে বন্দুকযুদ্ধের চেয়ে বাক্‌যুদ্ধ শ্রেয়তর, যদি সেটি রুচি ও সীমার মধ্যে থাকে।

সাম্প্রতিককালে বিএনপি ও  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যেই বেশি বাক্যবাণের ঘটনা ঘটছে। প্রায় প্রতিদিনই এক দলের নেতা অপর দলের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর’ অভিযোগ আনছেন। দুই দলই একে অপরের অভিযোগ খণ্ডন না করে পাল্টা অভিযোগের তির ছুড়ছেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা পরোক্ষভাবে প্রতিপক্ষের অভিযোগের ‘সত্যতা’ স্বীকার করে নিচ্ছে বলে ধারণা করি।

৩ এপ্রিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উপহারসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা ওরফে বুলু বলেছেন, ‘কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা একসময় ছাত্ররাজনীতি করতেন, হলে-মেসে থাকতেন, টিউশনি করতেন। অথচ এখন তারা পাঁচ-ছয় কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন, সঙ্গে আরও ৩০-৪০ কোটি টাকার গাড়ির বহর থাকে।'

উপদেষ্টারা যে গাড়িতে চড়েন, সেটা সরকারের। সে ক্ষেত্রে কোটি টাকার গাড়ির জন্য তাঁদের অভিযুক্ত করা যায় না। বিএনপির নেতা কিন্তু এমন কথা বলেননি যে তারা ক্ষমতায় এলে সস্তা দামের গাড়ি চড়বেন; বরং অতীতের অভিজ্ঞতা হলো প্রতিটি সরকার মন্ত্রী–উপদেষ্টাদের জন্য দামি মডেলের গাড়ি কেনেন। মন্ত্রীরা দামি গাড়িতে চড়লে সচিব, যুগ্ম সচিব, ডিসি–এসপিরাও চড়বেন। টাকা তো কারও পকেট থেকে যাবে না। যাবে জনগণের পকেট থেকে।

এনসিপি নেতাদের উদ্দেশ করে বুলু বলেন,  ‘ওনারা প্রশাসনের ওপর ফোর্স করেন—অমুককে বদলি করতে হবে, অমুকখানে অমুককে দিতে হবে। সচিবরা বলেন, তাঁরা তাঁদের ওপর ফোর্স করেন। প্রকৌশলীদের চাপ দেওয়া হয়—অমুককে এ জায়গায় দিতে হবে, অমুককে এ কাজ দিতে হবে।’

জনাব বুলুর এই অভিযোগ অসত্য নয়। আবার এ–ও সত্য, যেখানে বিএনপির ক্ষমতা আছে, সেখানে বিএনপিও পছন্দসই লোকদের বদলি ও পদোন্নতি করাচ্ছেন। জামায়াতে ইসলামীও একই কাজ করছে; হিসাব মেলালে দেখা যাবে, বিএনপির পাল্লাই ভারী।

বুলু সাহেব এই সুযোগে জামায়াতকেও একহাত নিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যাঁরা ১৯৭১-কে অস্বীকার করেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তকে অগ্রাহ্য করেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাশ কাটিয়ে কথা বলেন, তাঁরা জনগণের পক্ষে রাজনীতি করেন বলে আমরা মনে করি না। তাঁদের বাংলাদেশে ভোট চাওয়ার, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কিংবা রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’

এর এক দিন আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রায় সময় রাজনৈতিক কারণে হামলার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। অবাধ্য ও অপরাধী নেতা–কর্মীদের বিএনপি বহিষ্কার করলেও হিংস্র কার্যকলাপ চলছে। এই পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে ও অস্থির করে তুলছে।

বিএনপির অন্তঃকোন্দলের জেরে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এনসিপি বলেছে, গত ৩০ মার্চ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জে স্থানীয় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষে হামলার শিকার হন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলমের বাবা আজিজুর রহমান (বাচ্চু মোল্লা)। হামলায় তাঁর হাত ভেঙে যায় এবং তিনি গুরুতর আহত হন। উল্লেখ্য, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান।

রাজনীতির মাঠের সব খেলোয়াড়ই প্রতিপক্ষের দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাঁরা আয়নায় নিজের মুখ দেখেন না। এনসিপি নেতারা বিএনপিকে নিয়ে এত বিচলিত না হয়ে নিজেরা যদি এক মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজটি শেষ করতেন, মানুষ তাদের  নীতি–পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারতেন। একটি দল যাত্রা শুরুর এক মাস পরও গঠনতন্ত্র ও দলীয় স্লোগান ঠিক করতে পারল না, তাহলে মানুষ কীভাবে ভরসা রাখবে?

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা–কর্মীরা এনসিপির কর্মী-সংগঠকদের নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির গবেষণায় জানা যায়, গত আট মাসে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের সংঘর্ষ ও হামলায় ৭০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘নতুন বাংলাদেশ, পুরোনো বিএনপি।’

গত ৭ আগস্ট থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন খবর অনুসারে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের একটি তালিকা করা হয়েছে এবং অপরাধগুলো আর্থিক ও মৌখিক সহিংসতা (চাঁদাবাজি, হুমকি, দখল ইত্যাদি); শারীরিক সহিংসতা (ভাঙচুর, মারধর, সংঘর্ষ ইত্যাদি) এবং মৃত্যু—এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এক দফার আন্দোলনে বিএনপির সম্ভবত ২২ কিংবা ২৭ জন নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনসংস্কার কিংবা স্রেফ ‘ব্যালট পেপার হওয়ার’ স্বপ্ন২০ ঘণ্টা আগে

অথচ গত আট মাসে অনুকূল পরিবেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের সদস্যদের দ্বারা ৭০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা রীতিমতো ভাবনার বিষয়। গত ২৪ মার্চ হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। পরদিন তাঁর সমর্থকেরা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, মাসউদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা হামলা করেছেন।

সম্প্রতি শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজের জেলায় নির্বাচনী প্রচারাভিযানে গিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। বিএনপির নেতারা তারও সমালোচনা করছেন। তবে এনসিপির মধ্যে কিছুটা হলেও অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা আছে। সারজিস আলমের বিরাট গাড়িবহর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলেরই এক নেত্রী। সারজিস আলম জবাবও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে এতটুকু গণতন্ত্র চর্চা আছে বলে মনে হয় না।

ধারণা করি, জাতীয় নাগরিক কমিটির গবেষণা ও এনসিপির বিবৃতির জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। দুই দলের নেতাদের এই পাল্টাপাল্টির কারণ ভোটের হিসাব–নিকাশ।

এনসিপি নেতারা বলে থাকেন, বিএনপি সংস্কার চায় না বলে নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করছেন। কিন্তু ভেতরে–ভেতরে তাঁরাও নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। ঈদে বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকায় গেছেন।

তবে বিএনপি নেতারাও নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ করেছেন। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপির সামনে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে এনসিপি ও জামায়াতকে। তাদের ভয়, এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে যদি কোনো নির্বাচনী বোঝাপড়া হলে ভোটের হিসেব নিকেশ বদলে যেতে পারে।

এনসিপি নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছেন। রাজনীতিতে নতুন ধারা তৈরি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু দলের অনেক নেতার কণ্ঠে কিন্তু পুরোনো সুরই বাজছে। গত শুক্রবার কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিগত দিনে শুনেছি, কুমিল্লা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি; কিন্তু আমরা বলতে চাই, কুমিল্লায় যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানেই গণধোলাই।’

রাজনীতির মাঠের সব খেলোয়াড়ই প্রতিপক্ষের দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাঁরা আয়নায় নিজের মুখ দেখেন না। এনসিপি নেতারা বিএনপিকে নিয়ে এত বিচলিত না হয়ে নিজেরা যদি এক মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজটি শেষ করতেন, মানুষ তাদের  নীতি–পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারতেন। একটি দল যাত্রা শুরুর এক মাস পরও গঠনতন্ত্র ও দলীয় স্লোগান ঠিক করতে পারল না, তাহলে মানুষ কীভাবে ভরসা রাখবে?

সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্মসম্পাদক ও কবি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গঠনতন ত র এনস প র ব এনপ র উপদ ষ ট এক ম স র জন ত আওয় ম করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

কেন্দ্রীয় দুই নেতার জেলা কমিটিতে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক

ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আসন্ন কাউন্সিল ঘিরে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। কারণ, কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতা জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি দলীয় গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন জেলার নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৮ এপ্রিল ঝালকাঠি জেলা বিএনপির কাউন্সিল হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ প্রস্তাব করা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাউন্সিলে ভার্চুয়ালি উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে। আসন্ন কাউন্সিলে জেলা বিএনপির সভাপতি পদে আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। গত সোমবার সভাপতি পদে দলের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মাহাবুবুল হক নান্নুর নাম ঘোষণায় দলের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে।

বিএনপির দলীয় গঠনতন্ত্রের ১৫ (খ) ধারায় উল্লেখ আছে, জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোনো কর্মকর্তা এবং দলীয় অঙ্গদল বা সংগঠনের কোনো সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক অন্য কোনো পর্যায়ের কমিটিতে কর্মকর্তা নির্বাচিত হতে পারবেন না।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় পদে থেকে আসন্ন কাউন্সিলে দুই নেতার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর বলেন, ‘বিষয়টি রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে। এটা তারা কীভাবে কী মনে করে ঘোষণা করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদে থেকে বরিশাল বিভাগীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন মাহাবুবুল হক নান্নু। তিনি আবার কীভাবে কাউন্সিলের সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।’
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেনের ভাষ্য, সহসাংগঠনিক সম্পাদককে ৫ আগস্টের আগে দু-একটি ছাড়া দলীয় কর্মসূচিতে পাওয়া যায়নি। তাঁকে দাওয়াত দিলে বলতেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, আসা যাবে না। আবার একই সময়ে এলাকার বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা যেত তাঁকে। এখন তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন বলে দাবি করেন তিনি। কারণ দলীয় গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে পরিষ্কার উল্লেখ আছে। তাছাড়া তারা যাদের নিয়ে সভা করে এ ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের কাউন্সিলে ভোটাধিকার নেই। তারা বিগত দিনে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে থাকার ছবি দেখাতে পারবেন না। ৫ আগস্টের আগে কোথায় ছিলেন তারা?

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, ‘আজ (২১ এপ্রিল) বিএনপির নেতাকর্মীকে নিয়ে সভার আয়োজন করি। এতে সর্বসম্মতিক্রমে জেলা কাউন্সিলে আমাকে সভাপতি এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নুকে সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’ সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা তো কাউন্সিলের ভোটার না। তাদের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় পদে থেকে প্রার্থী হতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা কমিটিতে প্রার্থী হতে বাধা নেই। গঠনতন্ত্রে এ রকম কোনো বাধা আছে বলে মনে হয় না।
বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু জানান, বিগত পকেট কমিটি নিয়ে দ্বিমত আছে। অনেকেই বঞ্চিত। তাই সবার মতামতের ভিত্তিতে ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিল হবে। বিগত কমিটি একতরফা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের নিয়েই কমিটি করতে কাজ করছেন ঝালকাঠির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক হায়দার আলী লেলিন ভাই।’ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং বিভাগীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হয়ে আপনি জেলা কাউন্সিলের প্রার্থী হতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নান্নু বলেন, ‘একাধিক প্রার্থী, বহুত্ববাদ থাকবেই। এটাই গণতন্ত্র। দল কোনো ব্যক্তি ইচ্ছায় চলে না। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হায়দার আলী লেলিনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বিগত কমিটিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তাই নিয়ে কিছু দ্বন্দ্ব মতবিরোধ সৃষ্টি হতেই পারে। এসব সমাধান করেই এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল ও মাহাবুবুল হক নান্নুর কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার কোনো সংবাদ জানা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন্দ্রীয় দুই নেতার জেলা কমিটিতে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক