মানুষের হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার স্পন্দিত হয়। কোনো কারণে এই গতি না থাকলে গুরুতর অসুস্থ, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। যাদের স্পন্দনজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের হৃৎপিণ্ডের সংকোচন ও প্রসারণ স্বাভাবিক রাখতে ‘পেসমেকার’ বসানো হয়। বর্তমানে বাজারে যেসব পেসমেকার প্রচলিত, সেগুলো হৃৎপিণ্ডে বসাতে প্রয়োজন হয় অস্ত্রোপচার। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এমন পেসমেকার তৈরি করেছেন, যা চালের দানার চেয়েও ছোট। এই যন্ত্র বসাতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হবে না।

সম্প্রতি ‘এক্স’ হ্যান্ডলে এক পোস্টে বিষয়টি জানিয়েছেন নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা লেখক জন এ রজার্স। জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য পেসমেকারটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। রজার্সের দাবি, তাদের জানামতে এটি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম পেসমেকার। শিশুদের পেডিয়াট্রিক হার্ট সার্জারির সময় অস্থায়ী পেসমেকার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে ছোট পেসমেকারটি সহজেই ব্যবহার করা যাবে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পেসমেকারের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৫ মিলিমিটার, প্রস্থ ১ দশমিক ৮ মিলিমিটার এবং পুরুত্ব ১ মিলিমিটার। পেসমেকারটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে হৃদপিণ্ডে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। 

বর্তমানে যেসব পেসমেকার চলছে, সেগুলো হৃৎপিণ্ডে বসানোর জন্য অস্ত্রোপচার করতে হয়। নতুন পেসমেকার বসাতে হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেলাই করে ইলেকট্রোড যুক্ত করতে হয়, যা বাইরের একটি ডিভাইসের সঙ্গে তার দিয়ে যুক্ত থাকে। পরে এই তার টেনে বের করতে হয়, যা জটিল প্রক্রিয়া। তারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুতে জড়িয়ে যেতে পারে। তাই যখন এগুলো টেনে বের করা হয়, তখন তা হৃৎপেশির ক্ষতি করতে পারে। চাঁদে পা রাখা প্রথম মানুষ নিল আর্মস্ট্রংয়ের মৃত্যুও হয়েছিল এভাবে। বাইপাস সার্জারির পর তাঁর বুকে অস্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। পরে তারগুলো সরানো হলে ২০১২ সালে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান। নতুন পেসমেকার তারহীন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর শরীরে মিশে যায়। এটি ব্যাটারি ছাড়াই চলে।

রজার্স জানিয়েছেন, নতুন পেসমেকারে একটি গ্যালভানিক সেল রয়েছে। এই সেল এক ধরনের সরল ব্যাটারি এবং রাসায়নিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরে সক্ষম। হৃৎপিণ্ডে প্রতিস্থাপনের পর চারপাশের বায়োফ্লুইডের সংস্পর্শে আসামাত্র পেসমেকারের গ্যালভানাইজিং সেল সক্রিয় হয় এবং পেসমেকার কাজ শুরু করে।

তিনি বলেন, ‘এমন অনেক রোগী আছেন, যাদের হৃৎপিণ্ডের সমস্যা রয়েছে এবং পেসমেকারও প্রয়োজন; কিন্তু অস্ত্রোপচার তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া বিশ্বের ১ শতাংশেরও বেশি শিশু হৃৎপিণ্ডের সমস্যা নিয়েই জন্ম নেয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের শরীরে পেসমেকার বসানো অসম্ভব। তাই আমরা এমন একটি যন্ত্র চাইছিলাম, যা কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই মানবদেহে প্রবেশ করানো সম্ভব। আমাদের আশা, এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

উইলিয়ামস-ওয়েলচের জুটিতে পঞ্চাশ, জুটি ভাঙতে মরিয়া বাংলাদেশ

মধ্যাহ্ন বিরতির পর শতরান পেরিয়ে এগোচ্ছে জিম্বাবুয়ে। ওয়েলচ-উইলিয়ামস জুটিও ইতোমধ্যে পঞ্চাশ পেরিয়েছে। ওয়েলচ ৪৬ ও উইলিয়ামস ২৯ রানে ব্যাট করছেন। ৪৩ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১২৬ রান। বাংলাদেশ জুটি ভাঙতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি দুই উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ