Samakal:
2025-04-25@04:52:44 GMT

তিন রাজু তিন রকম

Published: 5th, April 2025 GMT

তিন রাজু তিন রকম

ধ্রু ব অরণ্য বয়সে ছোট হলে কী হবে, বড় ভাই আরিয়ান তূর্য তার সঙ্গে পেরে ওঠে না। অনেক কিছুই ধ্রুব আগেভাগে বুঝে ফেলে। আরিয়ান তখন গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খায়। বই পড়ার কথাই ধরা যাক না কেন! ধ্রুব এলোমেলোভাবে বইয়ের পাঁচ থেকে সাতটা পৃষ্ঠা খুললেই বলতে পারে, ভেতরে ছবি আছে কী নেই। অন্যদিকে এটি বোঝার জন্য আরিয়ানকে একটা একটা করে পুরো বইয়ের পাতা ওল্টাতে হয়। বোকা না আরিয়ানটা!

আব্বু ছোট-বড় সবার বই-ই পড়েন। যখন তিনি পড়েন দুই ভাইয়ের চেষ্টা থাকে, বইয়ের ভেতরটা উল্টেপাল্টে দেখা। বইয়ে ছবি থাকলে সেটিই ভালো, না থাকলে পচা। সেদিন আব্বু ভালো একটি বই পড়ছিলেন। বইটার নামটাও ভারী সুন্দর– রাজুর ভূতুড়ে ম্যাজিক। লেখকের নাম মুহসীন মোসাদ্দেক। ধ্রুব যথারীতি বই উল্টেপাল্টে দেখে বললো, ‘আব্বু, এই বইয়ের নাম কী?’
‘রাজুর ভূতুড়ে ম্যাজিক।’
‘কিন্তু এটা তো রাজু না!’
প্রচ্ছদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বললো সে। আব্বু যেন কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করলেন। একটু ভেবে বললেন, ‘এটাই রাজু। বইয়ের ভেতরে নামগল্পেও রাজুর ছবি আঁকা হয়েছে।’
আরিয়ান তূর্য এবার বিপুল বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে বললো, ‘এটা রাজু হলে মীনা কই?’
আব্বু এতোক্ষণে বুঝতে পারলেন বিষয়টা। ওরা বইয়ে ছবি আর টেলিভিশনে কার্টুন দেখতে দেখতে রাজুকে ভালোভাবেই চিনে গেছে। তাই অন্য রাজুকে সন্দেহ করে!
আব্বু দুই ভাইকেই বোঝানোর চেষ্টা করেন, এটা হচ্ছে আরেক রাজু। 

সেটা দুজনের একজনও মানলে তো! রাজুর চেহারা এমন নয়। আর রাজু ম্যাজিকও দেখায় না। আব্বু বুঝে গেলেন কার্টুনের রাজু-মীনার বাইরে যে এই নামে আরও কেউ থাকতে পারে, ওরা মেনে নেবে না। অবশ্য আরিয়ান ধ্রুব’র বয়সী হলে তিনিও নিশ্চয়ই আপত্তি জানাতেন। 

বোঝাতে না পেরে আব্বু আবার পড়ায় মনোযোগ দিলেন। এই বইয়ে মজার ভূতের গল্প আছে। অন্যান্য গল্পের বইয়ে ভূতগুলো ভয়ংকর হলেও এটাতে ভূতগুলো যথেষ্ট ভালো ও মিষ্টি। মানুষকে ভয় দেখায় না। এটা ওটা কেড়ে নিয়ে খেতে চায় না।

আব্বু বেশিক্ষণ পড়ায় মনোযোগ রাখতে পারলেন না। কিছুক্ষণ পরে বেজে উঠল কলিং বেল। যে কেউই বেল বাজাক, দুই ভাই আনন্দ নিয়ে দরজার কাছে চলে যাবেই। এখনো গেলো। আব্বু দরজা খুলতেই দেখলেন, একজন চাচি আর একটা বাবু দাঁড়িয়ে আছে। চাচি আব্বুকে পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমরা উপরের ফ্ল্যাটে এসেছি। পরিচিত হতে এলাম।’
‘খুব ভালো। আসুন।’
আব্বু ভেতরে নিয়ে এলেন তাদের। আম্মুর সঙ্গে বোধহয় আরও আগেই পরিচয় হয়ে গিয়েছিলো, তিনি মেহমান দেখে বলে উঠলেন– ‘আরে আপা, আপনি! এদিকে আসুন। আপনাকে একটা জিনিস দেখাই।’
কী দেখানো হচ্ছে, সেদিকে গেলো না ওরা। আব্বু বাবুকে আদর করে জিজ্ঞেস করলেন- ‘তোমার নাম কী?’
‘আমার নাম রাজু।’
এমন জবাবে আরিয়ান-ধ্রুব দুজনেই চমকালো। সমস্বরে বললো, ‘হতেই পারে না! ও মিথ্যা বলছে, আব্বু!’
আব্বু হেসে বললেন, ‘ছোটরা কখনো মিথ্যা বলে না। ওর নাম রাজু।’
দুজন মাথা চুলকাল একসঙ্গে- ‘কিন্তু.

..!’ 
‘কোনো কিন্তু নয়। ও আজ থেকে তোমাদের বন্ধু।’
ধ্রুব প্রশ্ন করলো, ‘ওকে আমরা কী ডাকবো?’
‘রাজু। রাজু ভাইয়া।’
এবার আরিয়ান বললো, ‘আচ্ছা রাজু, তোমার নাম কি আসলেই রাজু?’
‘হ্যাঁ। র আকার রা, বর্গীয় জ হ্রস্ব উকার জু।’
‘তাহলে টেলিভিশনে তোমাকে দেখি না কেন? আরেকজন রাজুকে দেখায় কেন!’
‘কার্টুনের রাজু আর মানুষ রাজু কিন্তু এক নয়!’
‘তুমি তো দেখছি বড়দের মতো অনেক কিছু জানো!’
‘হ্যাঁ। জানি। যতো বড় হবো, আরও জানতেই থাকবো।’
ধ্রুব বললো এবার– ‘তুমি যে রাজু, এটা আমরা অন্যদের বিশ্বাস করাবে কীভাবে?’
‘খুব সহজ। তোমরা চাইলে আমার ছবি আঁকতে পারো। তারপর এই বিল্ডিংয়ে সবাইকে, বাইরের মানুষজনকে দেখিয়ে বলতে পারো এটা রাজুর ছবি!’
‘এতেই হবে?’
‘হয়ে যাবে। এই ছবি অন্যরা দেখতে দেখতেই চিনে যাবে এই এলাকার রাজু আসলে কে!’ 
আব্বু সায় দিয়ে বললেন, ‘রাজু ঠিক কথা বলেছে। প্রচার ও বিজ্ঞাপনের একটা শক্তি আছে। সহজেই পরিচিত করানো। ঠিক এই কারণেই তোমরা কার্টুনের মীনা-রাজুকে ভালোভাবে চিনলেও বাস্তবের এই রাজুকে মেনে নিতে পারছো না।’
আরিয়ান বললো, ‘না, আব্বু। বিশ্বাস করেছি তো! এই রাজু আমাদের বন্ধু! আমরা এখন একত্রে খেলবো। ট্রেনের উপরে ঘোড়ার গাড়ি বসিয়ে দিলে কীভাবে টগবগ করে দৌড়ায়!’
রাজু বললো, ‘কই বন্ধু, দেখি তোমাদের ট্রেন আর ঘোড়ার গাড়ি!’
সাবধান বাণী দিয়ে ধ্রুব বললো, ‘বের করছি। কিন্তু খবরদার, ঘোড়ার উপরে ট্রেন বসাবে না। তাহলে ঘোড়া কাটা পড়ে মারা যাবে!’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর য় ন বইয় র বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোরে যুবকের দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন 

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ইসরাফিল নামে এক যুবককে কুপিয়ে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইসরাফিল ওই এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইসরাফিলের বাবা তাইজুল ইসলাম বহুদিন পূর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ এলাকায় এসে বাড়ি করেন। তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী ইসরাফিলের চিৎকারে এগিয়ে গিয়ে তাকে রাস্তার ধারে দুই হাত কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. সুব্রত বলেন, “রোগীর দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলে মনে হলো। সকাল ৭টার দিকে রোগীকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।”

সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, “রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে ঘটনাটি ঘটেনি। পরকীয়া সংক্রান্ত একটা বিষয় থাকতে পারে, সেই বিষয়টাও যাচাই-বাছাই করছি। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদেরকে শনাক্তসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।”

ঢাকা/আরিফুল/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ