জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে তাতে কোনোভাবেই দলটির পুনর্বাসনকে আমরা মেনে নেবো না। এনসিপির কোনো প্রোগ্রামে কোনোভাবেই যদি আওয়ামী লীগের কেউ যুক্ত হবার মতো সাহসও দেখায়, আমরা তাদেরকে প্রতিহত করব। আমরা মনে করি, যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছে, তারা রাজনীতি করবার নৈতিক কোনো অধিকার রাখে না।

শুক্রবার রাতে রংপুর চেম্বার ভবনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠকদের নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসেবে বাংলাদেশে আবির্ভূত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগেই জাতীয় নাগরিক পার্টির সূচনা হয়েছে। আমরা মনে করি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রত্যেকটি ভিন্ন স্বতন্ত্র সংগঠন। জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের যে কার্যক্রম আছে সেগুলো পরিচালনা করবে। একটি পলিটিক্যাল প্লাটফর্ম এবং সিভিল সোসাইটির প্লাটফর্ম হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্খা আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে। 

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যারা বর্তমানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছেন; তারা অবশ্যই তাদের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যদিয়ে তাদের সংগঠনকে পরিচালনা করছেন। আমরা মনে করি, জাতীয় নাগরিক পার্টিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির অনেকেই যুক্ত হবার মধ্যদিয়ে তাদের (হাসনাত-সারজিসরা) যে কার্যক্রম সেটার সমাপ্তি হয়েছে। আমরা বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি নিয়ে কাজ করছি।

এ সময় থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আমাদের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহম্মদ ইউনুসের বৈঠক প্রসঙ্গে এনসপির সদস্যসচিব বলেন, বাংলাদেশের জনমানুষের আকাঙ্খার কথাগুলো প্রধান উপদেষ্টা ধরেছেন। কিন্তু তা শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। ভারতের সঙ্গে অবশ্যই দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যে ধরণের পদ্ধতি এবং ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সেই বিষয়ে আশ্রয় নিতে হবে। বাংলাদেশ এবং ভারতের যে সম্পর্ক সেটা যেন কোনো দলের সঙ্গে কোনো দেশের সম্পর্ক হিসেবে বিবেচিত না হয়। অবশ্যই তিস্তা-গঙ্গা-সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায়।

বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে  যে অবস্থায় পর্যবসিত হয়েছে, তাতে করে চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচার করাটা সব থেকে জরুরি বিষয়। এই বিচার শুধুমাত্র কোনো ব্যক্তির নয়, দল হিসেবে যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে তার বিচার করতে হবে। এবং একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগ, রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের যে দাবি তার প্রতি একাত্ম হওয়া প্রয়োজন। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বদিচ্ছা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার ভিত্তিতেই বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এ সময় দেশে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে উল্লেখ করে গণপরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলকে বিতর্ক থেকে বেরিয়ে এসে গণপরিষদের পক্ষে থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি। 

এর আগে ড. মুহম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্খা তুলে ধরে ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে কথা বলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনুসকে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছর দেখার আকাঙ্খা আমার আছে এবং আজীবন থাকবে। আমি জানি না বাংলাদেশের কোনো নির্বাচিত সরকারের ততোটা উদারতা থাকবে কিনা। বিগত সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত সবশেষ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের রংপুর-৩ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হতেন বলেও মন্তব্য করেন সারজিস আলম। 

আগামীতে রংপুরে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি থাকবে না বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ফারজানা দিনাসহ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র র এনস প আখত র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যতিক্রমী চ্যাম্পিয়ন বোলোনিয়া এবং ৪৮ বছর ও ৪৮ ম্যাচ

সিরি ‘আ’ যেখানে আলাদাইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দুই বা এর বেশি দলের পয়েন্ট সমান হলে সবার আগে দেখা হয় গোল পার্থক্য। জার্মান বুন্দেসলিগা ও ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতেও আগে দেখা হয় গোল পার্থক্য। স্পেনের লা লিগায় আবার এ ক্ষেত্রে প্রথমেই দেখা হয় মুখোমুখি ম্যাচের ফল। মুখোমুখি ফলের হিসাব প্রথমে দেখা হয় ইতালির সিরি ‘আ’তেও। তবে ইতালিতে মৌসুম শেষে শীর্ষ দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে মুখোমুখি বা হেড টু হেড হিসাব করা হয় না। সেই দুই দলকে খেলতে হয় প্লে-অফ। জয়ী দল হয় চ্যাম্পিয়ন। প্লে-অফ জিতে অবশ্য একবারই সিরি ‘আ’ জিতেছে কোনো দল। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ইন্টার মিলান ও বোলোনিয়ার পয়েন্ট সমান হওয়ার পর প্লে-অফে ২-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় বোলোনিয়া। এবার ইন্টার মিলান ও নাপোলি যেভাবে সমান গতিতে এগোচ্ছে, আরেকবার প্লে-অফ দেখার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন।৪৮-৪৮অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড—টেস্ট অভিষেকের ক্রম এটা। ইতিহাসের পঞ্চম দল হিসেবে ১৯৩০ সালে টেস্ট অভিষেক নিউজিল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো নিউজিল্যান্ডেরও প্রথম টেস্টে প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চে ১০ জানুয়ারি শুরু সেই ম্যাচে ৮ উইকেটে হারে নিউজিল্যান্ড। সেই শুরু, এর পরের ৪৭ বছরে টেস্টে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড মুখোমুখি হওয়া মানেই ছিল হয় ইংল্যান্ডের জয় অথবা ড্র। কিউইরা টেস্টে ইংল্যান্ডকে প্রথম হারায় ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ওয়েলিংটনের সেই ম্যাচটা ৭২ রানে জেতে নিউজিল্যান্ড। ১৩৭ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে রিচার্ড হ্যাডলির তোপে ৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংলিশরা। ২৬ রানে ৬ উইকেট নেন টেস্ট ইতিহাসে ৪০০ উইকেটের মাইলফলকে প্রথম হ্যাডলি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলার ৪৮ বছর পর প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। মজার ব্যাপার ওয়েলিংটনে সেই টেস্ট ছিল নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড টেস্ট দ্বৈরথের ৪৮তম ম্যাচ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ