ঈদে মায়ের সঙ্গে নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল তাবাসসুম (৯) ও রাফি (৭)। পুকুরে গোসলেও নেমেছিল মায়ের সঙ্গে। সেখানেই ডুবে প্রাণ গেছে এই দুই শিশুর। শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার  আমিরাবাদ ইউনিয়নের শাইরা পাড়ায় ঘটে এ দুর্ঘটনাটি। একই দিন বগুড়ার শেরপুরের বাঙ্গালী নদীতে ডুবে এক স্কুলছাত্র ও কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে আরেক নদীতে মৃত্যু হয়েছে এক গৃহবধূর।

লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউপির সদস্য এরশাদুল হক এলাকাবাসীর বরাতে জানিয়েছেন, তাবাসসুম বিনতে তানজুম ও তানজিমুল ইসলাম রাফির বাড়ি উপজেলার একই ইউনিয়নের সুখছড়ি কামার দিঘীর পাড়ের নতুন পাড়ায়। তাদের বাবা মুহাম্মদ পারভেজ সৌদি আরব প্রবাসী। ঈদের জন্য মা মোছাম্মৎ তানজিমার সঙ্গে শাইরাপাড়ার নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল শিশু দুটি। 

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মায়ের সঙ্গে পুকুরে গোসলে নেমেছিল তাবাসসুম ও রাফি। সেখানে মুহূর্তের মধ্যেই মায়ের চোখের আড়ালে চলে যায় তারা। তাদের দেখতে না পেয়ে তানজিমা চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পুকুর থেকে ভাই-বোনকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক শিশু দুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মুহাম্মদ সোহেল বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে। 
বগুড়ার শেরপুরে মারা যাওয়া আবু সাদাত ইকবাল (১৩) জেলার ধুনট উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আরডিএ) প্রভাষক ইকবাল হোসেনের ছেলে। একই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো ইকবাল। তাঁর মা সানজিদা পারভীন রিতা সূত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে শেরপুরের সূত্রাপুর গ্রামের নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল ইকবাল। শুক্রবার সকালে একই এলাকার বেলগাছি ব্রিজ-সংলগ্ন ‘মিনি জাফলং’ নামক জায়গায় ঘুরতে যায়। সেখানে বাঙ্গালী নদীতে নেমে নিখোঁজ হয় ইকবাল। এলাকাবাসী প্রায় আধা ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিঠামইনে নদীতে গোসলে নেমে ডুবে মারা গেছে তানিশা আক্তার (২০)। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের সাবাসপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তানিশা আক্তার ওই গ্রামের আমির হামজার স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সব কাজ শেষে পাশের নদীতে গোসলে যান তানিশা। দীর্ঘক্ষণও না ফেরায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোরে যুবকের দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন 

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ইসরাফিল নামে এক যুবককে কুপিয়ে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইসরাফিল ওই এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইসরাফিলের বাবা তাইজুল ইসলাম বহুদিন পূর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ এলাকায় এসে বাড়ি করেন। তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী ইসরাফিলের চিৎকারে এগিয়ে গিয়ে তাকে রাস্তার ধারে দুই হাত কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. সুব্রত বলেন, “রোগীর দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলে মনে হলো। সকাল ৭টার দিকে রোগীকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।”

সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, “রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে ঘটনাটি ঘটেনি। পরকীয়া সংক্রান্ত একটা বিষয় থাকতে পারে, সেই বিষয়টাও যাচাই-বাছাই করছি। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদেরকে শনাক্তসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।”

ঢাকা/আরিফুল/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ