মিরপুরে ‘সাততলা থেকে ফেলে’ যুবক হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন আসামি: পুলিশ
Published: 4th, April 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়ায় দিনমজুর সাহিদুল হাসান ওরফে জিতু হত্যায় গ্রেপ্তার যুবক সাব্বিরকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, রিমান্ডের প্রথম দিনে আজ শুক্রবার হত্যার কথা স্বীকার করলেও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন আসামি সাব্বির।
গত বুধবার বিকেলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পাইকপাড়ার ঈশা খাঁ সড়কে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দশম তলা ভবনের সপ্তম তলা থেকে সাহিদুলকে ধাক্কা দিয়ে লিফট বসানোর ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। তাঁকে উদ্ধার করে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনায় বুধবারই সাহিদুলের পূর্বপরিচিত সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাহিদুলের স্বজনেরা পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, সাহিদুল ও সাব্বির একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। সাহিদুলের বাবা শাহিন মিয়া নেশায় আসক্ত। তাঁকে একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা নিয়ে সাব্বিরের সঙ্গে সাহিদুলের কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে সাহিদুলের সঙ্গে তাঁর বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধের জেরে সাহিদুল ও তাঁর স্ত্রী রোজিনার সঙ্গে সাব্বিরের একাধিকবার ঝগড়া হয়। এই ঝগড়ার কারণে সাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমিরপুরে ‘সাততলা থেকে ফেলে’ যুবককে হত্যা, গ্রেপ্তার ১০৩ এপ্রিল ২০২৫মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মৃত্যুর আগে হাসপাতালে সাহিদুল স্বজনদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গেছেন বলে মিরপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে। সেই তথ্যের বরাতে ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জানায়, সাব্বির বুধবার সাহিদুলকে ফোন করে বিরোধ মীমাংসা করার প্রস্তাব দেন। সে জন্য সাহিদুলকে ঈশা খাঁ সড়কে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের সামনে যেতে বলা হয়। সাব্বিরের কথামতো বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সাহিদুল সেখানে যান। এরপর সাব্বির তাঁকে হাবুলের পুকুরপাড়ের পাশে ১০ তলা নির্মাণাধীন ভবনের সপ্তম তলায় নিয়ে যান। সাহিদুল সেখানে অজ্ঞাতনামা আরও দু-তিন ব্যক্তিকে দেখতে পান। তাঁরা সাহিদুলের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সাহিদুলকে সপ্তম তলা থেকে ধাক্কা দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। এতে সাহিদুলের ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ ভেঙে যায় এবং মাথার পেছনে প্রচণ্ড আঘাত লাগে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
দুয়োতে ম্যাচ হেরে কনফাকাফ থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে মেসিরা
লিওনেল মেসিকে উদ্দেশ্য করে ধেয়ে আসছিল দুয়োধ্বনি। যখনই ইন্টার মায়ামির এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা বল পাচ্ছিলেন, গ্যালারিতে শোনা যাচ্ছিল “বুঁ......” আওয়াজ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের মাঠ বিসি প্লেসে রেকর্ড সংখ্যক দর্শকরা এমনই এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল মেসি নো মায়ামির জন্য। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ভ্যাঙ্কুভার ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করে মেজর লিগের জায়ান্ট মায়ামিকে।
ভ্যাঙ্কুভারের ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচে দর্শকসংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য। স্বাগতিকরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২-০ অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে গেল। রোববার লিগ ম্যাচে মিনেসোটার বিপক্ষে খেলার পর ভ্যাঙ্কুভারের বুধবার (৩০ এপ্রিল) মায়ামিতে দ্বিতীয় লেগ খেলতে যাবে।
আরো পড়ুন:
২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন মেসি
ইয়ামালকে নিয়ে মেসি: সে এখনই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন
ভ্যাঙ্কুভার আত্মবিশ্বাস নিয়েই দ্বিতীয় লেগে যাচ্ছে। ঘরের মাঠে ৫৩,৮৩৭ জন দর্শকের উপস্থিতিতে বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি মেসিকে আতিথ্য দিয়েছিল তারা। ঘরের মাঠে অর্ধেক দর্শকই ছিল ইন্টার মায়ামির গোলাপি জার্সিবা আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সি পরিহিত। ম্যাচের আগের দিন হোয়াইটক্যাপসের অনুশীলনে কয়েকজন দর্শক ছিলেন। কিন্তু যখন মেসিরা আসেন, তখন গেটের সামনে ব্যারিকেড বসানো হয়। তবে ঘরের মাঠেই যে অল্প সংখ্যক দর্শক ভ্যাঙ্কুভারকে সমর্থন দিল তারাই যথেষ্ট ছিল মেসিদের চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য।
মায়ামি ম্যাচটি শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। এক সময় তাদের ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত বলের দখল ছিল এবং গড় দখল ছিল ৬৯ শতাংশ। ভ্যাঙ্কুভারের কোচ জেসপার সোরেনসেন বললেন, এটা তাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল না। তবে ডেনিশ কোচের দল দারুণভাবে রক্ষণ করে ২৪তম মিনিটে ব্রায়ান হোয়াইট গোল করার আগ পর্যন্ত মায়ামির আক্রমণ থামিয়ে রেখেছিল।
ম্যাচ শেষে সোরেনসেন বলেন, “এটা পরিকল্পিত ছিল না। মায়ামি বল পজেশনে খুব ভালো। আমাদেরও বল ধরে খেলার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। আজকের খেলাটা একপেশে ছিল বলা চলে। মায়ামি খেলাটা খুব বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। তবে আমরা কিছু ভালো মুহূর্ত পেয়েছি, ভালো কিছু সুযোগ তৈরি করেছি। সার্বিকভাবে আমাদের খেলায় কিছুটা ঘাটতি ছিল। তবে ফলাফল ছিল অসাধারণ।”
এদিকে ম্যাচ হেরে কনকাকাফ থেকে বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে মায়ামি। দলটির আর্জেন্টাইন কোচ হাভিয়ের মাশচেরানো বলেন, “বেশি কিছু বলার নেই। ওরা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে। জয়ের যোগ্য ছিল ওরাই।(আমাদের) হারানোর কিছু নেই। আমাদের জিততেই হবে। আমরা জানি, অন্তত দুটি গোল করতে হবে এবং কোন গোল খাওয়া যাবে না। হয়তো এখন চাপটা ভ্যাঙ্কুভারের ওপর, কারণ ওদেরই তো ফলাফল ধরে রাখতে হবে।”
ঢাকা/নাভিদ