কম্পিউটারবিজ্ঞানী অ্যালান টুরিং ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, কম্পিউটার একদিন মানুষের বুদ্ধিমত্তার সমান ক্ষমতা অর্জন করবে। কম্পিউটার চিন্তা করতে সক্ষম কি না, তা জানতে বিশেষ ধরনের পরীক্ষার প্রস্তাবও করেন টুরিং। এরপর ১৯৫০ সাল থেকে টুরিং পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো যন্ত্র বা প্রযুক্তি বুদ্ধিমান হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ওপেনএআইয়ের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ‘জিপিটি ৪.

৫’ মডেল টুরিং পরীক্ষায় পাস করেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, জিপিটি ৪.৫ এআই মডেল খুবই ভালোভাবে টুরিং পরীক্ষায় পাস করেছে। পরীক্ষা চলাকালে এআই মডেলটি ৭৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই মানুষের মতো আচরণ করেছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া স্যান ডিয়েগোর বিজ্ঞানী ক্যামেরন জোনস জানিয়েছেন, জিপিটি ৪.৫ মডেলকে মানুষের চেয়ে আলাদা করা যায়নি। কোনো কিছু না বললেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি সামাজিক আচরণও করতে পারে মডেলটি।

সাধারণত কথোপকথন, গেম খেলায় যন্ত্র বা কম্পিউটার কতটা বুদ্ধিমান আচরণ প্রদর্শন করে তার ওপর যন্ত্রটির বুদ্ধিমত্তা বিচার করা হয়। এআই মডেলের সক্ষমতা জানতে পরিচালিত টুরিং পরীক্ষায় প্রায় ৩০০ ব্যক্তি এআই মডেলকে বিভিন্ন কমান্ডের মাধ্যমে প্রশ্ন করেন। এআই মডেলকে দুটি প্রম্পট দেওয়া হয়েছিল। প্রথম প্রম্পটে বলা হয়, ‘আপনি টুরিং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চলেছেন। আপনার লক্ষ্য হলো প্রশ্নকর্তাকে বোঝানো যে আপনি একজন মানুষ।’ দ্বিতীয় প্রম্পটে মডেলটিকে তরুণ ব্যক্তির মতো আচরণ করতে বলা হয়।

প্রথম প্রম্পটে ৩৬ শতাংশ সাফল্য পেলেও দ্বিতীয় প্রম্পটে ৭৩ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে জিপিটি ৪.৫ মডেল। তাই পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে যন্ত্র মানুষের চেয়ে ভালো হয়ে উঠেছে।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুন মাসে ‘জিপিটি-৪’ নামের এআই মডেল প্রথমবারের মতো টুরিং পরীক্ষায় পাস করেছিল।

সূত্র: এনডিটিভি

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। 

সেখানে তিনি লেখেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসনমূলক আচরণ করার পরিণতি কী হতে পারে, তা চব্বিশের জুলাইয়ে দেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও আমরা এমন ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখতে চাই না।”

কুয়েটের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।”

সোমবার (২১ এপ্রিল) পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৩২ জন আমরণ অনশন শুরু করেন। বিকেল ৩টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দার পূর্বদিকে অবস্থান নেন। এরপর সেখানে বিভিন্ন বিভাগের ৩২ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন শুরু করেন।  অনশনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।


১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।

আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে, আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে।

গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আদায়, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
  • রাজশাহীতে রাস্তায় অশালীন অঙ্গভঙ্গি, দুই ‘বখাটে’ গ্রেপ্তার
  • ভারতের আচরণ শিশুসুলভ: পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে: শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার
  • বিসিবির চাকরিতে ফিরছেন না আম্পায়ার সৈকত
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর
  • কর্মস্থলে আচরণ কেমন হলে ভালো