কুমারখালীতে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যে কালিমা লেপনের ছবি ফেসবুকে, মুছে দিল প্রশাসন
Published: 4th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্যে কালো রঙের কালি লাগিয়ে ঢেকে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই ভাস্কর্যের নিচে লেখা নামও বিকৃত করেছে দুর্বৃত্তরা। এমন একটি ছবি দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি নজরে আসার পর আজ শুক্রবার দুপুরে সেই কালি মুছে দিয়েছে কুমারখালী উপজেলা প্রশাসন। কালি মুছে ভাস্কর্য আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটির ভেতর দুই দিন আগে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে। আজ দুপুরে কালি রিমুভ (মুছে) করা হয়েছে।’
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে কুমারখালী উপজেলা সীমানা শুরুর স্থান সদকী ইউনিয়নের হিজলাকর এলাকায় ২০১৫ সালের দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করে উপজেলা পরিষদ। দুই দিন আগে ম্যুরালে থাকা কবির ছবির মুখমণ্ডল কালো রঙে ঢাকা দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামের বানান দুটিও বিকৃতি করা হয়। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা থাকলেও তা অকেজো। ভাস্কর্যে কালি লাগানো একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন কুমারখালীর বাসিন্দা কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক।
সদকী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মসলেম উদ্দীনের দাবি, ‘মাসখানেক আগেও এই সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে কালি লাগানো চোখে পড়েছিল।’ কুমারখালীর বাসিন্দা ও শান্তিনিকেতনের সাবেক শিক্ষার্থী রেফুল করিম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কুমারখালীতে ঢাকা-কুষ্টিয়া হাইওয়ের পাশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলির স্মারক ফলকে রবীন্দ্রনাথের মুখমণ্ডল কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। যে স্থানে বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের সিংহভাগ রচনা করেছিলেন, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন সাঁইজির চারণভূমি নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি, সেখানকার মানুষের বিকৃত মস্তিষ্ক উদ্ভাসিত হলো কীভাবে?’
কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার প্রথম আলোকে বলেন, কালি লাগানোর বিষয়টি জানার পরপরই শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। দুপুরে সেটি পরিষ্কার করা হয়েছে।
ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ভিআইপি প্রটোকলে প্রায়ই কুমারখালীর এই স্থানে যাওয়া হয়। আগে কালিমা লেপনের বিষয়টি ঘটেনি। যা তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হয়েছে ঈদের ছুটিতে দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি জানার পরপরই কালি মুছে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ স কর য ফ সব ক উপজ ল ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।
বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগেবক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।