কুষ্টিয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি লাগিয়ে ছবি বিকৃতি
Published: 4th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালো রঙের কালি লাগিয়ে বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার নামের বানানও বিকৃত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কালি লাগানো একটি ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন রবীন্দ্র ভক্ত ও গবেষকরা। ম্যুরালটি কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালীর প্রবেশপথ জিলাপিতলা এলাকায় অবস্থিত।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের দক্ষিণপাশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরাল। ম্যুরালে থাকা কবির ছবির মুখমণ্ডল কালো রঙে ঢাকা। রবীন্দ্রনাথ ও ঠাকুর বানান দুটিও বিকৃতি করা।
দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ম্যুরাল চত্বরটিতে জন্মেছে আগাছা ও লতাপাতা। চটে গেছে রং। সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে সেটি অকেজো।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কে বা কারা কখন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি লাগিয়েছে সেটি জানা যায়নি। অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও দ্রুত ম্যুরালটির সংস্কার কাজ করা হবে।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় কবি ও সাহিত্যিক লিটন আব্বাস বলেন, “রবীন্দ্রনাথ নয়, এ কালি পুরো বাঙালি জাতির মুখে লেগেছে। কে বা কারা কী উদ্দেশে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি তদন্ত করে প্রকাশ্যে আনার দাবি করছি।”
কুমারখালীর রবীন্দ্র গবেষক রেফুল করিম আক্ষেপ করে বলেন, “যে স্থানে বসে রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের সিংহভাগ রচনা করেছিলেন। সেখানে মানুষের বিকৃত মস্তিষ্ক উদ্ভাসিত হলো কীভাবে?”
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম মিকাইল ইসলাম বলেন, “ঈদের ছুটিতে দুর্বৃত্তরা হয়তো এ ঘটনা ঘটাতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনইএসসিএপি) ৮১তম অধিবেশনে বাংলাদেশ একটি তাৎপর্যপূর্ণ কূটনৈতিক জয়লাভ করেছে। আঞ্চলিক সহযোগিতায় ক্রমবর্ধমান নেতৃত্ব প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ইউএনইএসসিএপির অধীন মর্যাদাবান দুটি আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেনিং সেন্টার অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (এপিসিআইসিটি) ও এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব ডিজাস্টার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের (এপিডিআইএম) গভর্নিং কাউন্সিলে তিন বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
ইউএনইএসসিএপির ৮১তম অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আর বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ভিডিও ভাষণ প্রচার করা হয়। ভাষণে তিনি সব ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণের নীতির ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন বিশ্ব গড়ার আহ্বান জানান। তিনি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচন ও বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনের বাইরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ইউএনইএসসিএপির নির্বাহী সচিবের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। বৈঠকে আইসিটি উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা জোরদারসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর আলোচনা করা হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ এই দুটি নির্বাচনী বিজয় এ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রভাবশালী নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান আস্থার প্রতিফলন। দুটি আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচনে মূল্যবান সমর্থনের জন্য সব সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।