কুমিল্লার সেই মুক্তিযোদ্ধা কানুর বাড়িতে গভীর রাতে হামলা
Published: 4th, April 2025 GMT
একাধিকবার হামলা ও হেনস্থার শিকার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ভূঁইয়া কানুর বাড়িতে ফের হামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ১২টা ৫৫ মিনিটে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ও তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের বাড়ির দরজা ও জানালায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপোয় হামলাকারীরা।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে ছাত্র আন্দোলনে হামলা: আ.
সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা
হামলার ঘটনার বিষয়ে অবহিত চৌদ্দগ্রাম থানার হিলাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে তিনি নিজেই ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানে দরজায় বেশ কয়েকটি কোপের চিহ্ন পান। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি গ্রামে এসেছিলেন। রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে করে আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ জন অস্ত্রধারী তার বাড়িতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা জামায়াত-শিবির কর্মী বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে দরজা, জানালা ও টিনের চালায় আঘাত করতে থাকে এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
আব্দুল হাইয়ের অভিযোগ, ভয়ে তার পরিবার চিৎকার করলেও আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে পারেননি। পরে স্থানীয়রা চৌদ্দগ্রাম থানায় ফোন করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ আসার পর হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
এই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, “হামলাকারীরা এতটাই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল যে, আমি আমার স্বামী ও নাতিদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। আমরা কেউই নিরাপদ নই।”
ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, “হামলাকারীরা মূলত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে থাকে এবং সুযোগ বুঝে ফিরে এসে হামলা চালায়। এবারো তারা ঈদের ছুটিতে এসে হামলা করে গা ঢাকা দিয়েছে।”
অভিযোগের বিষয় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ।”
এর আগেও আব্দুল হাইয়ের ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে।
গত বছর ২২ ডিসেম্বর স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেম মজুমদারের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে লাঞ্ছিত করে এবং জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। এরপর তিনি পাশের জেলায় তার ছেলে বিপ্লবের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন করেন।
আবদুল হাইয় কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ওই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি।
জুতার মামলা পরিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, জুতার মালা পরানোয় ১০০ কোটি টাকার মানহানি এবং মারধরের অভিযোগে ২৫ ডিসেম্বর আবদুল হাই থানায় মামলা করেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছিল।
ওই ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছিল। তাদের মধ্যে চারজন জামিনে মুক্তি পান।
মামলার ১ ও ২ নম্বর আসামি জামায়াতের কর্মী আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমানকে ওই ঘটনার পর জামায়াত থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আসামিদের জামিনের পর জানুয়ারি মাসে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই গণমাধ্যমকে তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তার অভাবের কথা বলেছিলেন।
আবদুল হাই তখনই আসামিদের এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলেন, আসামিদের আর ধরা হবে না। তিনি বিচারও পাবেন না।
অবশ্য নিরাপত্তার সেই শঙ্কাই সত্যি হলো; ৩ এপ্রিল রাতে আবার হামলার হলো আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে।
ঢাকা/রুবেল/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল হ ই
এছাড়াও পড়ুন:
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের ২৯৪তম সভা অনুষ্ঠিত
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবি) পরিচালনা পর্ষদের ২৯৪তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
সভায় এফএসআইবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল কুদ্দুছ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আলম এফসিএমএ এবং অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. রাগিব আহসান এফসিএ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, অন্যদের মধ্যে ছিলেন ব্যাংকের এমডি (চলতি দায়িত্ব) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া এবং কোম্পানি সচিব (চলতি দায়িত্ব) নিজাম কাজী এসিএস।
ঢাকা/রাজীব