সময়টা বোধ করি ১৯৮০-এর দশকের সূচনাকাল। সন্জীদা খাতুন তখন কলকাতায়, আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন পার্ল রোডে আবু সয়ীদ আইয়ুবের বাসভবনে। গৌরী আইয়ুবের সঙ্গে দেখা করবেন মিনু আপা, এমন আটপৌরে নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন কাছের মানুষদের কাছে। গৌরী আইয়ুবের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় ১৯৫৬ সালে, যখন তিনি এমএ পড়তে এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। পিতা কাজী মোতাহার হোসেন কিছু নামের তালিকা দিয়েছিলেন, যাঁদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। সেই তালিকায় অন্নদাশঙ্কর রায়, প্রবোধচন্দ্র সেন, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ছাড়াও ছিল গৌরী দত্তের নাম। সে বছরই দার্শনিক পণ্ডিত ধীরেন্দ্রমোহন দত্তের কন্যার সঙ্গে পদার্থবিদ্যা ও দর্শনের তুখোড় ছাত্র, কলকাতার অভিজাত উর্দুভাষী পরিবারের সন্তান আবু সয়ীদ আইয়ুবের বিয়ে হয়েছিল। তবে গৌরীর বাড়ি খুঁজে পেতে সন্জীদা খাতুনের বেগ পেতে হয়েছিল, কেননা পাড়া-প্রতিবেশীরা সহায়ক হতে ছিল অনিচ্ছুক। পরে একাত্তর সালে গৌরী ও আইয়ুব উভয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নানা কাজে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন এবং কলকাতায় সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্রিয় সন্জীদা খাতুনের সঙ্গে তাঁদের নিবিড় যোগাযোগ ঘটে। আমরা যখন গিয়েছি পার্ল রোডের আবাসে, তখন আইয়ুব প্রয়াত হয়েছেন, গৌরী আইয়ুবও হাঁটুর ব্যথায় কাতর। আমাকে মিনু আপা পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এই বলে যে, ও হচ্ছে মফিদুল, আমি মারা গেলে ওরা খুব দুঃখ পাবে। বের হয়ে আমি উষ্মা প্রকাশ করেছিলাম এমন কথা বলার জন্য। তবে বুকের মধ্যে পুষে রেখেছি তাঁর কাছের মানুষ হওয়ার এই ব্যতিক্রমী স্বীকৃতি।
আমাদের জীবনের মহাসৌভাগ্য তাঁর সঙ্গে জীবনের দীর্ঘ পথচলা, তাঁর সান্নিধ্যে স্নেহচ্ছায়ায় সিক্ত হওয়া। এই সহযোগের সূচনা ১৯৬৭ সাল থেকে, যখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপানে পা রেখেছি। তরুণদের মধ্যে বামপন্থার প্রতি আকর্ষণ ছিল প্রবল, সেই সঙ্গে জাতিসত্তার প্রতি টান। বাঙালির সুকৃতি হয়ে উঠেছিল বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রেরণা। সেই বছর পয়লা বৈশাখ অভিনবভাবে পালনের জন্য রমনার অশ্বত্থতলে প্রভাতি সংগীতাসরের আয়োজন করে ছায়ানট। আমরা তরুণ ছাত্রকর্মীরা হোসেনি দালানের কার্যালয় থেকে রঙিন কাগজ ও বেলুন দিয়ে আমের ডাল সাজিয়ে মিছিল করে হাজির হই গানের আসরে। পরের বছর পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিন বেতার টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত সম্প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে প্রতিরোধ তৈরির তাগিদ দেখা দেয় ছায়ানটের পক্ষে। সমবেতভাবে গঠিত হয় ‘সাংস্কৃতিক স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা পরিষদ’, ছায়ানট, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, ঐকতান ইত্যাদি সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত হয় তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। কর্মী হিসেবে আমরা যুক্ত হই ছায়ানটের সঙ্গে মিলে। এভাবে কোন অজান্তে পৌঁছে যাই সন্জীদা খাতুন-ওয়াহিদুল হকের আজিমপুরের ফ্ল্যাটে, যেখানে আরও অনেকের প্রবেশাধিকার, ঢাকার সংগীত ও শিল্পচর্চার প্রাণবন্ত এক কেন্দ্র।
২.
কত মানুষের সঙ্গে কত রকম বন্ধনে যে জড়িয়েছেন সন্জীদা খাতুন, তার হদিস করা মুশকিল। এই সম্পর্কের যে মানবিক মাত্রা, সেটা আরেক সন্জীদা খাতুনের পরিচয় আমাদের কাছে মেলে ধরে, যে পরিচয় তাঁর আপাতকঠিন ব্যক্তিত্ব ও নিরাপস মনোভাবের আড়ালে অনেক সময় ঢাকা পড়ে থাকে। ষাটের দশকের ওই সময়টাতে আমাদের দেখা এক অবিস্মরণীয় চরিত্র শহীদ সাবের, থাকেন হেথা-হোথা, প্রেসক্লাবে তাঁর আহারের বাধা-বন্দোবস্ত, হাতে পুরোনো কোনো ডায়েরি, হেঁটে চলেছেন বংশালে সংবাদ অফিসে। অপ্রকৃতিস্থ পরিত্যক্ত এই মানুষটির সঙ্গে সন্জীদা খাতুনের সম্পর্ক অসাধারণ মানবিক এক কাহিনি। রাষ্ট্রীয় পীড়ন ও বঞ্চনার কারণে ব্যক্তিসত্তার বিনাশের প্রতীক শহীদ সাবের ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক ও বামপন্থার কর্মী। ১৯৫০ সালে গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছর কারাভোগ করেন। কারাজীবন নিয়ে লেখা তাঁর ‘আরেক দুনিয়া থেকে’ প্রকাশিত হয়েছিল পশ্চিম বাংলার নতুন সাহিত্য পত্রিকায়, আলোড়ন তুলেছিল দুই বাংলায়। কারামুক্তির পর তিনি যোগ দেন সংবাদ পত্রিকায়। আমরা শহীদ সাবেরকে দেখেছি ঢাকার রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন, কখনো প্রেসক্লাব থেকে বংশালে সংবাদ–এর দিকে, অথবা সংবাদ থেকে প্রেসক্লাবে। মানসিক বৈকল্যপীড়িত এই মানুষটির অতীত জেনে বিস্মিত হই, কিন্তু কিছু করার থাকে না কারও। অনেক পরে জেনে বিস্মিত হয়েছিলাম, এই শহীদ সাবেরের আশ্রয় হয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন, সেটা ষাটের দশকের গোড়ার দিকের কথা। বাড়িতে তিনি তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন শহীদ সাবেরকে। সন্জীদা খাতুন লিখেছেন, ‘বড় বড় নখ, খোঁচা খোঁচা দাড়ি, আর চিটচিটে ময়লা কাপড় পরা মানুষটিকে নিয়ে ভয় হতে লাগল ক্রমে। গোসল করার কথা কানেই নিতেন না। ব্যবহারের কাঁথাটি বেশ খানিকটা ছিঁড়ে গিয়েছিল। আর খানিক ছিঁড়ে তার ফাঁক দিয়ে মাথা বার করে বসে রইলেন একদিন। ওই অবস্থায় হঠাৎ হো হো করে হেসে উঠলেন। অবোধ পাগলের হাসি নয়, বিশ্বসংসারের প্রতি চরম বিদ্রূপের হাসি। সেই মুহূর্তে বিদ্রূপের লক্ষ্য ছিলাম হয়তো আমিই, আমার সাধ্য হয়নি তাকে উপযুক্ত বিছানাপত্র সরবরাহ করি।’ এমন সংবেদনশীল ও মমতাপূর্ণভাবে উণ্মাদের পাঠ কে নিতে পারে?
রমনার বটমূলে নববর্ষের প্রভাতি আয়োজনে অনেকবারই তো নবীন-নবীনাদের সমবেত কণ্ঠে এই গান পরিবেশিত হয়েছে। তেমন মুহূর্তে সন্জীদা খাতুনের মানসপটে গানের যে ছবি ভেসে ওঠে, সেটা কখনো জানার চেষ্টা করিনি, তবে বুঝতে পারি সেই ছবি স্বদেশের মুখচ্ছবি।‘সাবের ভাইয়ের অগ্নিস্নান’ শিরোনামে মিনু আপার এই লেখা আমাকে খুব টানে। সচরাচর বাইরের মানুষের কাছে তাঁর যে রূপ, কিংবা রাবীন্দ্রিক বলতে আমরা যে আটপৌরে ব্যবহার—জীর্ণ, দীর্ণ ছবি তৈরি করে নিই, তিনি যে সেই বৃত্তাবদ্ধতা ভেঙে চলেছেন জীবনভর তাঁর পরিচয় এখানে মেলে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অগ্নিদগ্ধ সংবাদ অফিসে পুড়ে কাঠকয়লা হয়ে যান শহীদ সাবের। সন্জীদা খাতুন লিখেছেন, ‘সারা জীবনে স্নানের প্রসঙ্গ এড়িয়ে চললেও শেষ পর্যন্ত দিব্যি নিঃশঙ্কায় তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন অগ্নিস্নান। অকুতোভয়ে পাল তুলে দিয়েছেন তাঁর নৌকায় জীবননদীর ওপারে পৌঁছানোর জন্য। যে যাত্রায় অক্ষয় বাঙালি পরিচয় আর সংস্কৃতি ছিল তাঁর সহযাত্রী।’ আমি তৃপ্ত বোধ করি, এই লেখা নিয়ে মুগ্ধতা আমি মিনু আপাকে জানাতে পেরেছিলাম।
মানসিক বৈকল্য সত্ত্বেও মাঝেমধ্যে দু-একটি গান বা ছোট কবিতা লিখে ফেলতেন শহীদ সাবের। তেমনি এক গানে সুর দিয়েছিলেন শেখ লুতফর রহমান। গানের কথা ছিল, ‘ওরে মাঝি দে নৌকা ছেড়ে দে/ বজ্রেরই গর্জনে দশ দিক কম্পিত ছিন্ন/ তবু তোর পথ নেই বেয়ে চলা ভিন্ন।’ এখন ভাবতে ইচ্ছা করে, রমনার বটমূলে নববর্ষের প্রভাতি আয়োজনে অনেকবারই তো নবীন-নবীনাদের সমবেত কণ্ঠে এই গান পরিবেশিত হয়েছে। তেমন মুহূর্তে সন্জীদা খাতুনের মানসপটে গানের যে ছবি ভেসে ওঠে, সেটা কখনো জানার চেষ্টা করিনি, তবে বুঝতে পারি সেই ছবি স্বদেশের মুখচ্ছবি, দুঃখভারাক্রান্ত বঞ্চিত ক্ষুব্ধ তরুণ শহীদ সাবেরের ছবি, যিনি ধারণ করে আছেন বাঙালি পরিচয় ও সংস্কৃতি।
সন্জীদা খাতুনের রাবীন্দ্রিক চেতনা ও বাঙালি সত্তার সমগ্রতায় বিশ্বাসের ভিত্তি যে অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ, তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। ১৯৫০ সালে সবে কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তখনই শুরু হয়েছিল দাঙ্গা। দেশভাগের পর বাংলার দুই অংশে, সীমান্তের এপার-ওপারজুড়ে এই দাঙ্গার নিদারুণ অভিঘাত সমাজের স্থিতি টলিয়ে দিল বড়ভাবে। সেই সময়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দাঙ্গায় আহতদের সেবা করার ডাকে ছুটে গিয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন ও আরও কয়েকজন। ট্রমা-আক্রান্ত আহত উত্পীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়ানোর সেই স্মৃতি ভোলার নয়। পরে তিনি লিখেছেন, ‘খানিকটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়া যে বুড়ি পিঠে দুটি দায়ের কোপের হাঁ-করা ক্ষত নিয়ে উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে বিছানায় বসে আছে, তার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। নার্সরা সাবধান করে দিয়েছে—ওর মুখে থার্মোমিটার দেওয়া যাবে না। কড়মড় করে চিবিয়ে ফেলবে। করেছে ও রকম। পিঠের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলে সে টান দিয়ে। খায় না। সেই বুড়িই আবার ফিডিং কাপে করে দুধ খাইয়ে দিতে গেলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মুখের ভাব যাচাই করে খেয়ে নিয়েছে দুধ। দুঃখ-শোকে হতভম্ব, হতবাক কেউ কেউ প্রশ্নের জবাবে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছে। সহানুভূতির বাক্য সাড়া জাগায়নি তাদের মনে।’
১৯৬৪ সালের দাঙ্গায় একই বর্বরতার পুনরাবৃত্তি ঘটল বাংলায়। সন্জীদা খাতুন তখন নানা কর্মে ব্যস্ত, অধ্যাপক ও সংসারী মানুষ। ছাত্রছাত্রী নিয়ে ছায়ানট ঝাঁপ দিয়েছিল দাঙ্গা প্রতিরোধ ও দুর্গত ত্রাণে। তিনি লিখেছেন, ‘ছাত্ররা হিরণ্ময়ীকে নিয়ে এসেছিল, দায়ের কোপে মাথার পিছন দিকের খানিকটা উড়ে গিয়ে শক্ত স্কাল বেরিয়ে পড়েছিল তার। রোজ ক্ষত পরিষ্কার করে ড্রেসিং করা দরকার বলে, আমার আজিমপুর কলোনির বাসাতে হিরণ্ময়ীকে রাখতে হয়েছিল কয়েক দিন। কোপ লেগেছিল বাঁ দিকের গালে, বাঁ চোখের পাতাও কেটে গিয়েছিল। গালে সেলাই করা হলেও চোখের পাতা সেলাই করাবার জন্য হিরণ্ময়ীকে রাখতে হয়েছিল কয়েক দিন।’
সন্জীদা খাতুন (বাঁয়ে), কলকাতার বন্ধু সান্ত্বনার সঙ্গে ভ্রমণেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইয় ব র হয় ছ ল ত হয় ছ র জন য ছ য় নট কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাবরকে ছাড়িয়ে গেলেন কোহলি
এই মৌসুমটা দারুণ কাটছিল রইয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরুর। তবে একটাই খুঁত ছিল, ঘরের মাঠে জিততে পারছিল না বিরাট কোহলিরা। নিজেদের ডেরায় টানা তিন ম্যাচ হারে দলটি। হতাশাজনক ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পর অবশেষে বেঙ্গালুরু চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দুইশর বেশি রান করতে সক্ষম হয় এবং এক রোমাঞ্চকর জয় পায় রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের বিনিময়ে পায় ২০৫ রানের পুঁজি। সেই রান তাড়া করতে নেমে সুবিধাজনক জায়গা থেকেও ১১ রানে ম্যাচ হারে রাজস্থান। ম্যাচে ৭০ রানের ইনিংস খেলা কোহলি এই রাতে ছাড়িয়ে গেলেন বাবর আজমের একটি রেকর্ড।
বিরাট কোহলি খেলেন ৪২ বলে ৭০ রানের ইনিংস। ৩২তম বলে ফিফটি ছুঁয়ে কোহলি গড়েন নতুন রেকর্ড। আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগসহ সব ধরনের স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে সবচেয়ে বেশি ৬২টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন কোহলি। এতদিন ৬১টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলে এই রেকর্ড ছিল বাবরের।
আরো পড়ুন:
বেঙ্গালুরুর জন্য ঘরের মাঠ বিভীষিকা
‘ভাবিনি ১৫ বছর একসাথে খেলব’
ম্যাচ শেষে কোহলি, “আমরা ঘরের মাঠে তিনটি গড়পড়তা ম্যাচ খেলেছি এবং ব্যাটিং ইউনিটে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি যে, আমাদের কী কী ঠিক করতে হবে। আজ আমরা বোর্ডে ভালো রান তুলতে পেরেছি। আমরা অনুভব করছিলাম যে পিচটা স্কোরবোর্ডে যেরকম দেখা যাচ্ছিল, ততটা সহজ ছিল না।”
ঢাকা/নাভিদ