ওয়ার্কচার্জের ২৪ কর্মীর চাকরি স্থায়ী হয়নি ২৭ বছরেও
Published: 4th, April 2025 GMT
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সালের বিভিন্ন সময়ে ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে ৩৯৬ জনকে নিয়োগ দিয়েছিল। তাদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল ১০ বছর চাকরি করার পর পর্যায়ক্রমে তাদের স্থায়ী করা হবে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ জনবল স্থায়ী হবে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে আর ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্য থেকে স্থায়ী হবেন ২৫ শতাংশ। এরপর নানা সময় ওয়ার্কচার্জ কর্মীদের মধ্যে ৩৭২ জনের চাকরি স্থায়ী হলেও বঞ্চিত রয়ে গেছেন ২৪ জন। তাদের মধ্যে তিনজন করোনা মহামারি সময়ে মারা গেছেন। বাকি ২১ জনের হয়েছে অবসরে যাওয়ার সময়।
ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মূলত তাদের কাজ অনুযায়ী নির্দিষ্ট হারে বেতন-ভাতা পান। সরকারি চাকরিজীবীদের মতো অন্যান্য সুবিধা পান না। জানা গেছে, ইতোমধ্যে ওয়ার্কচার্জের ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজউক চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সদস্যের (প্রশাসন) সঙ্গে দেখা করে চাকরি স্থায়ীকরণের আবেদন জানিয়েছেন। তবু তাদের স্থায়ী করার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। অথচ তাদের স্থায়ী করার জন্য বিপরীতে প্রায় অর্ধশত পদ শূন্য রয়েছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী না করে বরং বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কর্মীদের চাকরি স্থায়ী করার অভিযোগ উঠেছে।
রাজউক সূত্র জানায়, নিয়োগ পাওয়া ৩৯৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জাতীয় বেতন স্কেল-১৯৯৬ অনুসারে ২০০১ সালে রাজস্ব খাতভুক্ত ওয়ার্কচার্জ করা হয়। তাদের মধ্যে আব্দুল লতিফ হেলালী রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী হয়ে অবসরে গেছেন। উজ্জ্বল মল্লিকও প্রধান প্রকৌশলীর পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর সম্প্রতি তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আবু হাসান মোর্তজা ও মো.
ভুক্তভোগীরা জানান, নিয়োগ ও পদোন্নতি কোটার ৪৫টি পদ এখনও শূন্য। কিন্তু রাজউক পরিচালনা পর্ষদ কোনো নিয়ম অনুসরণ না করে একেক সময় একেকজনের চাকরি নিয়মিত করেছে। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কাজী অমিত ও নুরুল আলমকে নিয়মিত করা হয়েছে। এ দু’জনই ছিলেন প্রকল্পের কর্মচারী। ওয়ার্কচার্জভুক্ত যে ২১ জনের চাকরি নিয়মিত হয়নি, তাদের প্রত্যেকের চেয়ে এ দু’জন অনেক কনিষ্ঠ।
ভুক্তভোগী এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁর দেড় বছর চাকরি আছে। এখনও বলতে পারেন না চাকরিটি স্থায়ী হয়েছে। এ জন্য পরিবারের কাছেও লজ্জা পেতে হয়। আরেকজন বলেন, চাকরি নিয়মিত হলে অবসরে গেলে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু এ অবস্থায় অবসরে গেলে একদম নিঃস্ব হাতে বিদায় নিতে হবে।
আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, গত বছর তাদের চাকরি স্থায়ী করার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজউক বোর্ড। তখন তথাকথিত রাজউক শ্রমিক লীগের কয়েকজন নেতা এতে বাধা দেন। ওই নেতারা আমাদের কাছে কিছু আর্থিক সুবিধা দাবি করেছিলেন। কিন্তু আমরা তাতে রাজি হইনি। তখন শ্রমিক লীগের নেতারা আমাদের ২১ জনকে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে বোর্ডকে প্রভাবিত করেন। ফলে আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ থমকে যায়।
এসব প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২১ ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়টি মানবিকভাবে আমরা দেখার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে বোর্ডে দু-তিনবার তুলেছি। কিন্তু বিভিন্ন সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এমন কিছু নিয়ম করেছে যে, তাদের নতুন করে সব সনদ জমা দিতে হবে। তারা সেটা পারে না। এ কারণে রাজউকেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবে এটা বুঝতে পারছি মানবিক কারণে হলেও তাদের চাকরিটা স্থায়ী করা দরকার।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জউক দ র চ কর র জউক
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ চারজনকে উদ্ধারের আলোচনা, নিশ্চিত নয় পুলিশ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনের খোঁজ মিলেছে– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন আলোচনা থাকলেও এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। তাদের ভাষ্য, আজকালের মধ্যে এমন তথ্যের বিষয়টি আরও পরিষ্কার হতে পারে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকজনের খোঁজ মিলেছে– এমন প্রচার আছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা এখনও উদ্ধার বিষয়ে নিশ্চিত নই। আজকালের মধ্যে পরিষ্কার হতে পারব।
পাহাড়ের বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চবি ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে জেলা সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে ১৬ এপ্রিল সকালে পাঁচ শিক্ষার্থীকে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। অপহৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রিশন চাকমা, দিব্যি চাকমা ও মৈত্রীময় চাকমা রাঙামাটি এবং অন্য দু’জন লংঙি ম্রো ও অলড্রিন ত্রিপুরা বান্দরবানের বাসিন্দা। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপণ ত্রিপুরা এ অপহরণের ঘটনায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন। তবে ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
একাধিক অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে চাপের মুখে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে গত সোমবার রাতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার সর্বোসিদ্ধিপাড়া এলাকা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।