অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা একটি ছবি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। 

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শেষে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় দুই প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ দুই নেতা বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া উপহারের ছবি আজ দুপুরে ফেসবুকে শেয়ার করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

সেখানে তিনি লেখেন, “প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূস শুক্রবার ব্যাংককে তাদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে একটি ছবি উপস্থাপন করছেন। ছবিটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে ৩ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে স্বর্ণ পদক উপহার দেবার।”

ছবিতে দুজনকেই হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। 

এছাড়া, বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি অত্যন্ত গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। আমাদের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।” 

প্রেসসচিব বলেন, “শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এবং ভারতে বসে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া, সীমান্তে হত্যা, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।”
 

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপহ র ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না।”

জুলাই আগষ্টের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার মোহাম্মদপুর বসিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর আ‌য়ো‌জিত গণসমাবেশে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

নুর ব‌লেন, “জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণেই অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার করা সম্ভব হয় নাই।”

আরো পড়ুন:

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দা‌বি গণঅধিকার প‌রিষ‌দের

“প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে। ২/১ টি দলের সাথে সখ্যতা গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাচ্ছে। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা দলবাজি করবে তাদের পরিণতি হারুন-বেনজীরদের মতো হবে।”

তি‌নি ব‌লেন, “সড়ক-পরিবহন, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে। কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দিচ্ছে, জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না।এদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, অধিকার আদায়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক-শ্রমিক জীবন দেয় আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ ভাঁওতাবাজ ও ভণ্ড নেতারা, ওপর তলার কিছু লোকেরা। তাই সাধারণ এখন নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে হবে।”

রাষ্ট্রের সংস্কার করে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার আহ্বান জা‌নি‌য়ে নুর ব‌লেন, “ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলসমূহকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানাই।”

“জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে চিরতের উৎখাত করতে জুলাই আন্দোলনের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।”

নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমান রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে দেশের সংষ্কার প্রয়োজন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ কোন বক্তব্য দেয় নাই। তবে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, যারা ফ্যাসিবাদ হটাতে সক্রিয় ছিলেন, আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

এ সময়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ঢাকা-১৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত নেতাকর্মী-জনতার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক।

গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরে সহ-সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, যুগ্ম সাধারণ মো. ইমরান প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ