রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের একটি বাড়ির ফ্ল্যাট থেকে মাশরুর রহমান (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’–এ ফোন পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পল্লবী থানার পুলিশ বাড়িটিতে যায়। পরে তারা বাড়ির ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে মাশরুরের লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ বলেছে, মাশরুরের শরীরে কোনো আঘাত বা জখমের চিহ্ন নেই।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাশরুর মিরপুর–১১ নম্বর সেকশনের এ–ব্লকের ২ নম্বর লেনের ৯ নম্বর সড়কের বাড়িটির ষষ্ঠ তলায় একা ভাড়া থাকতেন। তাঁর সন্তানেরা অন্যত্র থাকেন। স্ত্রী আগেই মারা গেছেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে মাশরুরের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশীরা তাঁর ছেলেদের খবর দেন। মাশরুরের ছেলেরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’–এ ফোন দেন। ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে পল্লবী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢোকে। ভেতরে তাঁরা দেখতে পান, মাশরুরের অর্ধগলিত লাশ বিছানার ওপর পড়ে আছে।

পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাশরুরের ফ্ল্যাটে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। এরপর আর তাঁর সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়নি।

মাশরুরের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে তাঁর লাশ গতকাল রাতে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরের দাবি

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড উচ্চ আদালতে বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলেছে, এই শুনানি শেষে রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় রায় কার্যকর করার দাবিতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়া হবে।

আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন এমন দাবি জানিয়েছে। ‘শহীদ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপের মৃত্যুদণ্ড অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবি’ ব্যানারে তারা এই সংবাদ সম্মেলন করে।

সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলমান। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, রায় কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনো হুমকি, প্রলোভন বা রাজনৈতিক চাপ যেন আপনাদের প্রভাবিত করতে না পারে। রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।’

সংগঠনটির দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘আশা করছি, চলমান শুনানি আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এবং উচ্চ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখবেন।’

সংগঠনের সদস্যসচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার অনুরোধ করেন। প্রদীপ, লিয়াকতসহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিও জানান তিনি।

এ মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুনসিনহা হত্যা: সেদিন যা ঘটেছিল৩১ জানুয়ারি ২০২২

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান, ক্যাপ্টেন (অব.) শুভ আফ্রিদি, করপোরাল (অব.) তফসীর আহমেদ, নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য সাইদ ও সাবেক সৈনিক মো. নাইমুল ইসলাম।

আরও পড়ুনআসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে উপস্থাপন চলছে২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ