যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান টিমোথিকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প
Published: 4th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) প্রধানকে গতকাল বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করা হয়েছে। দুজন বর্তমান ও একজন সাবেক কর্মকর্তার বরাতে ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানিয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া এই কর্মকর্তা হলেন টিমোথি হাফ। তিনি ‘ইউএস সাইবার কমান্ড’–এরও প্রধান। টিমোথির পাশাপাশি তাঁর সহকারী এবং এনএসএর উপপরিচালক ওয়েন্ডি নোবেলকেও নিজের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রভাবশালী সংবাদপত্রটি জানিয়েছে।
বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে পত্রিকাটি বলেছে, এনএসএর পরিচালক টিমোথিকে কেন বরখাস্ত করা হলো ও তাঁর সহকারী ওয়েন্ডিকেই-বা কেন নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো, সে বিষয়ে তাঁরা জানেন না।ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, ওয়েন্ডি নোবেলকে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের অফিস অব দ্য আন্ডারসেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর ইন্টেলিজেন্সের একটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এনএসএ প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি অংশ।
বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বরাতে পত্রিকাটি বলেছে, এনএসএর পরিচালক টিমোথিকে কেন বরখাস্ত করা হলো ও তাঁর সহকারী ওয়েন্ডিকেই–বা কেন নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো, সে বিষয়ে তাঁরা জানেন না।
এনএসএর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে মার্কিন সাইবার কমান্ডের উপপ্রধান উইলিয়াম হার্টম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর ভারপ্রাপ্ত সহকারী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে শেইলা থমাসের। তিনি এনএসএর নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
টিমোথির মতো এনএসএর একজন দলনিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বরখাস্ত করার ঘটনা বিস্ময়কর।মার্ক ওয়ার্নার, ডেমোক্র্যাট সিনেটরএ বিষয়ে পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউসের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক পার্মানেন্ট সিলেক্ট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্য জিম হাইমস ও সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির ডেমোক্রেটিক ভাইস চেয়ার সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার এনএসএর পরিচালক টিমোথিকে বরখাস্ত করার নিন্দা জানিয়েছেন।
কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির এক শুনানিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর জেনারেল ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) পরিচালক টিমোথি হাফ। ক্যাপিটল হিল, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র, ২৬ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্লভ হীরা চুরি, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা
রেহান একজন সাধারণ মানুষ; যার জীবনে কোনো নিয়ম নেই। আছে কেবল লক্ষ্য আর প্রতারণার কৌশল। তাঁর চোখে-মুখে যেমন স্মার্টনেস, তেমনি ভয়ংকর ঠান্ডা হিসেবি হিমশীতলতা। ভারতের অপরাধ জগতের এক নীরব শাসক রাজন আউলাখ তাঁকে একটি অসম্ভব মিশনের জন্য নিয়োগ করেন। তা হলো ‘আফ্রিকান রেড সান’ নামে এক দুর্লভ হীরা চুরি করতে হবে। এটি করলেই রেহান পাবেন প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। রেহান বিভিন্ন ছদ্মবেশে হীরা চুরির পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী না হওয়ায় শুরু হয় প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা।
এমনই গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বলিউডের নতুন সিনেমা ‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’। নেটফ্লিক্সের এ সিনেমার মাধ্যমে বেশ কয়েক মাসের বিরতি শেষে ফিরছেন বলিউডের ছোট নবাব সাইফ আলি খান। এবার তাঁকে দেখা যাবে একদম ভিন্ন ধরনের এক চোরের ভূমিকায়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সাইফ আলি খান বলেন, ‘‘রেহান চরিত্রটি আমার কাছে শুধু এক চোর নয়; সে এক দার্শনিক। সে জানে কীভাবে মানুষকে পড়তে হয়, আর নিজের অস্তিত্বকে প্রতারণার চাদরে মুড়িয়ে ফেলতে হয়। ‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি এক অভিজ্ঞতা। চোরের চোখ দিয়ে বিশ্ব দেখার এক সুযোগ। যেখানে নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ, এবং বিশ্বাস একটি খেলনা মাত্র।’’
সিনেমাটির শুটিং হয়েছিল মুম্বাই ও বুদাপেস্ট শহরে। পরিচালক কুকি গুলাটি ও রব্বি গ্রেওয়াল গল্প বলার ধরনে আধুনিকতা এনেছেন। টানটান থ্রিলার ফর্মুলাটিকে হারাননি। প্রযোজক সিদ্ধার্থ আনন্দ জানিয়েছেন, ‘এই সিনেমা শুধু হীরার চুরির গল্প না, এটি একজন মানুষের নিজেকে খুঁজে পাওয়ারও গল্প।’
এ সিনেমার মাধ্যমে ১৭ বছর পর আবারও একসঙ্গে কাজ করলেন সাইফ আলি খান ও সিদ্ধার্থ আনন্দ।
আবারও তাঁর সঙ্গে কাজ প্রসঙ্গে সাইফ আলি খান বলেন, ‘সিদ্ধার্থ আনন্দের সঙ্গে পুনরায় কাজ করার ক্ষেত্রে সবসময় ঘরে ফিরে আসার মতো অনুভূত হয়। সিদ্ধার্থ যেভাবে অ্যাকশন, স্টাইল ও গল্প বলার ক্ষেত্রে একটা সুন্দর সংযোগ তৈরি করে তা সত্যিই বিশেষ। জুয়েল থিফ-এ আমরা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছি এবং কাজ করে অনেক আনন্দ পেয়েছি। জয়দীপ আহলাওয়াতের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাও দারুণ। তাঁর অভিনয়ে অনেক গভীরতা রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতাটিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে।’
অন্যদিকে, জয়দীপ আহলাওয়াত জানান, ‘রাজন এমন এক চরিত্র, যে সব নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যখন সে রেহানের মতো কাউকে পায়, তখন সংঘর্ষটা হয় ব্যক্তিত্ব আর বুদ্ধির। সেটিই দর্শকের সবচেয়ে বড় উপভোগ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি এমন এক নতুন মহাবিশ্বে প্রবেশের অভিজ্ঞতা, যেখানে অনেক মানুষ আপনার মতোই উত্তম কিছু উপহার দেওয়ার জন্য উৎসাহিত। এটি এমন একটা ছবি যেমনটা আমি সবসময় করতে চেয়েছিলাম। সাইফ ও সিদ্ধার্থের মতো সেরা সহ-অভিনেতা ও নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।’
গত ১৪ এপ্রিল প্রকাশ হয় সিনেমার ট্রেলার। বুদাপেস্ট থেকে মুম্বাই, হেলিকপ্টার থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ভল্ট–যেখানে যেখানে ট্রেলার ছুটে গিয়েছে, সেখানে ছড়িয়েছে রোমাঞ্চ। পেছনে বাজছে রহস্যময় সাউন্ডট্র্যাক, ক্যামেরার খেলায় ধরা পড়ে দুর্দান্ত অ্যাকশন, রোমাঞ্চ আর ভয়ের গল্পগুলো। এ থ্রিলারে শুধু পাঞ্চ আর প্ল্যানিং নেই, আছে আবেগও। কিছুদিন আগে সিনেমার প্রথম গান ‘জাদু’ প্রকাশ হয়েছে। সেখানে রেহান ও ফারাহর (নিকিতা দত্ত) সম্পর্কের সূক্ষ্ম ছায়া দেখা যায়। এরপর প্রকাশ হয় ‘ইলজাম’ শিরোনামের আরও একটি গান। যেখানে দেখা যায় রেহানের অতীতের আক্ষেপের কাহিনি।
‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন রহস্যময় ফারাহ (নিকিতা দত্ত), প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আবিদ (কুনাল কাপুর) এবং প্রবীণ অপরাধবিশারদ ব্রিজ মোহন সিংহ (কুলভূষণ খারবান্দা)। প্রতিটি চরিত্রই যেমন রহস্যে মোড়া, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ গল্পের বাঁকে। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রতিটি শিল্পী নিজেকে ভেঙে আবার গড়েছেন। প্রকাশ হওয়া ট্রেলারে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো লোকেশন, একের পর এক ধোঁয়াশা আর অ্যাকশন দৃশ্য মিলিয়ে এটি যেন ভারতীয় হাইয়েস্ট ঘরানার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা; যা দেখে একজন দর্শক লিখেছেন, ‘‘এটি যেন ইন্ডিয়ার ‘মানি হায়েস্ট’ কিন্তু অনেক বেশি স্টাইলিশ আর সাসপেন্স ভরা।”
ফলে বলা যায় ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের এই সিনেমায় শুধু থ্রিল নয় ধরা দেবে একটি অনুভবের গল্প। বলা যায়, যারা থ্রিলার ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উপহার। আগামীকাল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এই সিনেমার হাত ধরে নির্মাতা সিদ্ধার্থ আনন্দ ও তাঁর স্ত্রী মমতা আনন্দের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ম্যাটরিক্স পিকচার্সের ওটিটি অভিষেক হচ্ছে।