বিশ্বকাপে ৬৪ দল? উয়েফা সভাপতি বললেন ‘বাজে পরিকল্পনা’
Published: 4th, April 2025 GMT
গত ৬ মার্চ অনলাইনে সভা করে ফিফা কাউন্সিল। সেখানে উরুগুয়ের এক প্রতিনিধি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপ ৬৪ দল নিয়ে আয়োজনের প্রস্তাব দেন, যা শুনে সভার অনেকেই রীতিমতো তাজ্জব বনে যান। তাঁদেরই একজন উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন। সে দিনের সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফিফার এই সহসভাপতি।
সম্প্রতি সার্বিয়ার বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত হয়েছে উয়েফার বার্ষিক সাধারণ সভা। সেই সভার পর সংবাদ সম্মেলনে ৬৪ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সেফেরিন বলেন, ‘আমি মনে করি এটা বাজে পরিকল্পনা। এই প্রস্তাব আপনাদের চেয়ে আমার কাছে বেশি বিস্ময়কর।’
শুধু উরুগুয়ের ওই প্রতিনিধিই নন, স্বয়ং ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ২০৩০ বিশ্বকাপ ৬৪ দল নিয়ে আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ নিয়ে তাঁর যুক্তি, প্রতিযোগিতার পরিধি বিস্তৃত হলে ফিফা আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী খেলার উন্নয়নেও দলের সংখ্যা বাড়ানো দরকার।
ইনফান্তিনোর এমন যুক্তিকে সমর্থন না জানিয়ে উল্টো কড়া সমালোচনা করলেন সেফেরিন। ৪৮ দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হবে ২০২৬ বিশ্বকাপ। পরের আসর বসবে মরক্কো, পর্তুগাল ও স্পেন। সেই আসরেই ৬৪ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ভাবছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
সেফেরিন কিছুতেই এভাবে দল বাড়ানোর পক্ষে নন। তিনি বলেন, ৬৪ দলের বিশ্বকাপ ধারণাটা বাছাইপর্বের জন্যও সুখকর হবে না, ‘এটা বিশ্বকাপের জন্য ভালো ধারণা নয়। এমনকি আমাদের বাছাইপর্বের জন্যও ভালো ধারণা নয়। ’
২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জটিলতা নিয়ে এমনিতেই আলোচনা হচ্ছে। তিনটি ভিন্ন মহাদেশে আয়োজিত হবে এই বিশ্বকাপ। মূল আয়োজক স্পেন, পর্তুগাল ও মরোক্কা হলেও সে বছর বিশ্বকাপের শতবছর পূর্তি উপলক্ষে উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে খেলা হবে একটি করে ম্যাচ। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয় উরুগুয়েতে।
সেফেরিন ৬৪ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের ধারণার উৎস নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন, ‘এটা অদ্ভুত যে ফিফা কাউন্সিলে এই প্রস্তাব ওঠার আগে আমরা এ নিয়ে কিছুই জানতাম না। আমি জানি না, এটার উৎস কী।’
উয়েফা প্রধানের এমন সমালোচনার পর ফিফা শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে তামাকের ব্যবহার কমেছে
বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে তামাকের ব্যবহার কমেছে ৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে এমন অগ্রগতি থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
আজ বুধবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিএমইউর জার্নালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অধ্যাপক ড. এম মোস্তফা জামান। সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫-৬৯ বছর বয়সী বাংলাদেশীদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ এ মেনেছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহুরে অঞ্চলে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।
এম মোস্তফা জামান বলেন, বর্তমান যে হারে তামাক ব্যবহার কমছে, এই গতিতে এগোলে ২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) প্রতিরোধ রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে।
গবেষণায় সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করে বর্তমান হ্রাসের হার ত্বরান্বিত করতে হবে। ব্যবহারিক গবেষণা পরিচালনা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নীতি ও আইনের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে, যাতে অপর্যাপ্ত হ্রাসের কারণ চিহ্নিত করা যায়।
ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তামাক ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির জন্য দায়ী এবং উদ্বেগজনক। এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গণমানুষকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে হবে। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তামাক ব্যবহারের মাত্রা ও ঝুঁকি শহর ও গ্রাম পর্যায়ে আলাদাভাবে তুলে ধরা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়, তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কঠোর নীতি ও সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।