ভারতের লোকসভার পর এবার রাজ্যসভাতেও বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস হয়েছে। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার বিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে পাস হয় বিলটি। এর পক্ষে ভোট পড়ে ১২৮টি। আর বিপক্ষে ভোট দেয় ৯৫ জন সদস্য। খবর এনডিটিভি

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াকফ বিল আইনে পরিণত হতে এখন কেবল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সইয়ের অপেক্ষা। এরপরই বদলে যাবে ৭০ বছরের পুরোনো আইন। মুসলিমদের কল্যাণে দান করা জমিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলা হয়, যা বিক্রি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায় না।

বুধবার (২ এপ্রিল) মুসলিম ও বিরোধীদের আপত্তির মুখে ভারতের পার্লামেন্টে ওয়াকফ বিল পেশ করে বিজেপি সরকার। শরিকদের সমর্থন নিশ্চিত করেই পেশ করা হয় সংশোধনী বিল। তবে এই বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বিরোধী শিবির। তাদের দাবি এই বিল ভারতের সংবিধান পরিপন্থি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করা হয়েছে, এতে অমুসলিমদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে এবং কোন সম্পত্তি ওয়াকফ বলে বিবেচিত হবে ও কোনটা হবে না, তা সরকারকে নির্ধারণের এখতিয়ার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

মুসলিমরা বলছেন, নতুন আইনে ইসলামিক সম্পত্তি সরকার হস্তগত করবে সরকার। বিরোধীদের যুক্তি, এই বিল ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের পরিচয় বহন করে না।

বিলের বিতর্কিত ধারাসমূহ
১.

ওয়াকফ বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে দুইজন অমুসলিম সদস্য বাধ্যতামূলক।

২. কমপক্ষে পাঁচ বছর ইসলাম পালনকারী ব্যক্তিই কেবল ওয়াকফে সম্পত্তি দান করতে পারবেন। বিরোধীদের মতে, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংবিধানের সমতা নীতির পরিপন্থী।

৩. সরকারি জমি ওয়াকফ দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কালেক্টরের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা, যা পূর্ববর্তী ওয়াকফ ট্রাইবুনালের পরিবর্তে প্রস্তাব করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জ যসভ ল কসভ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ