অন্যরা কমাতে পারলে আমরা কেন পারি না
Published: 4th, April 2025 GMT
বাংলাদেশে যেকোনো এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে হলে ক্রেতাকে অন্যান্য দেশ থেকে বেশি টাকা গুনতে হয়। এর কারণ হিসেবে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাত্রাতিরিক্ত ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, সিভিল এভিয়েশনের বর্ধিত ল্যান্ডিং-পার্কিং ভাড়া ও অতিরিক্ত গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং মাশুলের দোহাই দিয়ে থাকে।
পত্রিকার খবর থেকে জানা যায়, ওমানপ্রবাসী এক যাত্রী চার মাস আগে দেশে আসার জন্য সিঙ্গেল টিকিট কিনেছিলেন ২০ হাজার টাকায়। ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ থেকে তাঁকে সেই টিকিট কিনতে হয়েছে ৩২ হাজার টাকায়। মালয়েশিয়াগামী আরেক যাত্রীর ভাষ্য, তিন মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে এক হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (২৫ হাজার টাকা) দিয়ে সিঙ্গেল টিকিট কেটে দেশে আসেন তিনি। ফিরতি টিকিটের জন্য তাঁর কাছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এরপর মালয়েশিয়ায় থাকা এক বন্ধুর মাধ্যমে কম দামে টিকিট কেটে এয়ার এশিয়ার ফ্লাইটে কর্মস্থলে ফিরে যান।
উল্লেখ্য, উড়োজাহাজ যাত্রায় টিকিটের দাম কমানো এবং এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ দফা নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। এতে টিকিট বুকিংয়ের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা বরাদ্দ করা না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুকিং বাতিল করতে বলা হয়। পাশাপাশি গ্রুপ বুকিংয়ের নামে কোনো এয়ারলাইনসের অনেক টিকিট একসঙ্গে ব্লক করা হলে পরে সাত দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ তা বিক্রি নিশ্চিত করার তথ্য দিতে বলা হয়।
এর ফলে বিমানের টিকিটের ক্ষেত্রে যে সিন্ডিকেট ছিল, সেটা ভেঙেছে। কিন্তু এনবিআরের করসহ অন্যান্য মাশুল বেশি থাকায় টিকিটের দাম অন্যান্য দেশ থেকে এখনো বেশি। এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারের মনিটরিং থাকা প্রয়োজন। টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম থাকলে আইন প্রয়োগ করে তা সমাধান করতে হবে।
এয়ারলাইনসগুলো বলছে, বাংলাদেশ থেকে একটি প্লেনের টিকিটে এনবিআর থেকে যে পরিমাণ ভ্রমণ কর ও আবগারি শুল্ক নেয়, তা দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিমানবন্দর থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি। ঢাকা থেকে বর্তমানে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ওমান, শারজাহ, কুয়ালালামপুর—এই পাঁচ রুটের টিকিট কাটলে যাত্রীপ্রতি বাংলাদেশ সরকার ৯ হাজার ৮৯০ ট্যাক্স আদায় করে। অথচ একই রুটে মালয়েশিয়ার সরকার কর নেয় ২ হাজার ৫৬৮ টাকা, সিঙ্গাপুর ৫ হাজার ৮৭৮, ওমান ৩ হাজার ৮৭৯, দুবাই ও শারজাহ নেয় ৪ হাজার ৩৩২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে একজন যাত্রী এই পাঁচ রুটে যাত্রা করলে তাঁকে ৭ হাজার টাকা বেশি কর দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া ভ্রমণ কর তো আছেই। সার্কভুক্ত দেশে প্রত্যেক যাত্রীকে দুই হাজার ও অন্যান্য দেশের জন্য চার হাজার টাকা ভ্রমণ কর দিতে হয়।
বাংলাদেশে উড়োজাহাজের যাত্রীদের ৮০ শতাংশই প্রবাসী শ্রমিক। টিকিটের দাম বেশি হলে তাঁদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপে, কম হলে তাঁদের কিছুটা সাশ্রয় হয়। সরকার রাজস্ব আয় বাড়াতে বিমান টিকিটের ওপর বেশি কর আরোপ করেছে, কিন্তু যাত্রীরা যদি বিদেশ থেকে টিকিট কেনেন, তাহলে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে? যাত্রীরা যেখান থেকে কম দামে পাবেন, সেখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করবেন।
এ অবস্থায় বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূল্যে যাতে যাত্রীরা উড়োজাহাজের টিকিট পেতে পারেন, সে জন্য করহার পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রিশাদকে বাংলায় অভ্যর্থনা, রাজা বললেন ‘তুমি আমার বন্ধু হবে?’
পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানে পৌঁছেছেন বাংলাদেশি লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। আসন্ন আসরে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলবেন তিনি। আর পাকিস্তানে পা রাখতেই পেয়েছেন হৃদয়ছোঁয়া এক অভ্যর্থনা, তাও আবার বাংলায়!
নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, লাহোর কালান্দার্সের অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি, দলের স্বত্বাধিকারী সামিন রানা ও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা রিশাদকে স্বাগত জানাতে হাজির হন তার হোটেল রুমে। দরজা খুলতেই সিকান্দার রাজা ভাঙা বাংলায় হেসে বলেন, ‘তুমি আমার বন্ধু হবে? শাহিন ভাইয়ের?’
দরজার বাইরে রিশাদের সঙ্গে পরিচিত হন সামিন রানাও। জিজ্ঞেস করেন, ‘উর্দু বলতে পারো তো?’ উত্তরে রিশাদ মাথা নেড়ে সম্মতি জানালে সামিন বলেন, ‘তাহলে তো অনেক মজা হবে।’
এই মুহূর্তটি নিয়ে রিশাদ লেখেন, ‘চমৎকার এক অভ্যর্থনা! লাহোর কালান্দার্স পরিবারের অংশ হতে পেরে গর্বিত।’ মূল ভিডিওটি প্রকাশ করা হয় লাহোর কালান্দার্সের ফেসবুক পেজে, যেখানে রিশাদ ছাড়াও দলটির অন্যান্য বিদেশি তারকা ডেভিড ভিসা, স্যাম বিলিংস ও কুশল পেরেরাকেও বরণ করে নিতে দেখা গেছে।
আগামী ১১ এপ্রিল শুরু হচ্ছে পিএসএল। প্রথম দিনেই মাঠে নামবে রিশাদের লাহোর কালান্দার্স, তাদের প্রতিপক্ষ ইসলামাবাদ ইউনাইটেড।