ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বড় পতন
Published: 4th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ঘোষণার একদিন পরই বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড়সড় ধস দেখা গেছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের শেয়ারবাজার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পতনের মুখে পড়েছে। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০-তে ২০২০ সালের কোভিড সংকটের পর সবচেয়ে খারাপ দিন পার করেছে। খবর বিবিসি
নাইক, অ্যাপল এবং টার্গেটের মতো বড় ভোক্তা পণ্য নির্মাতা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ৯ শতাংশের বেশি কমে গেছে।
এর আগে বুধবার হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, আমদানিকৃত পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়বে এবং দেশীয় শিল্পে নতুন গতি আসবে।
যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির আওতায় চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। চীনের ওপর গড়ে ৫৪ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।
উত্তরে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিনিয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
আমদানি শুল্ক মূলত বিদেশ থেকে আনা পণ্যের ওপর আরোপিত কর, এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন হার গত ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, এই পদক্ষেপের ফলে চলতি বছরে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১ শতাংশ কমে যেতে পারে।
বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।
শুক্রবার দিনের শুরুতেই এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে বড়সড় পতন দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.
এর আগে বৃহস্পতিবার, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস নামে। দেশটির শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির শেয়ার মূল্য পর্যবেক্ষণকারী এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৪.৮ শতাংশ পড়ে যায়, যার ফলে বাজার থেকে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হারিয়ে যায়।
ডাও জোন্স সূচক ৪ শতাংশ এবং প্রযুক্তিনির্ভর নাসডাক প্রায় ৬ শতাংশ কমে যায়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ারবাজারে বিক্রির ঢল নামতে শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক ১.৫ শতাংশ এবং ইউরোপের অন্যান্য বাজারগুলোও পতনের মুখে পড়েছে, জাপান থেকে শুরু করে হংকং পর্যন্ত প্রতিফলিত হয়েছে এই ধসের প্রভাব।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতি বৈশ্বিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার সূচনা করতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য রব জ র রব জ র ইউর প র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
মে দিবসে মঞ্চে ‘মার্ক্স ইন সোহো’
আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এবং ৫মে কার্ল মার্ক্স এর ২০৮তম জয়ন্তী উদযাপনকল্পে নাট্য সংগঠন বটতলা এবং যাত্রিক-এর যৌথ প্রযোজনা ‘মার্ক্স ইন সোহো’ নিয়ে আবার মঞ্চে আসছে। টানা তিন দিন তিনটি প্রদর্শনী থাকছে এই আয়োজনে।
প্রখ্যাত আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও তাত্ত্বিক হাওয়ার্ড জিন রচিত, জাভেদ হুসেন অনুদিত এবং নায়লা আজাদ নির্দেশিত এই নাটকটি প্রথম মঞ্চে আসে ২০২১ সালের অক্টোবরে।
মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর পরে কার্ল মার্ক্স কি সত্যি সোহোতে বা পৃথিবীতে ফিরেছেন? ফেরার প্রয়োজনীয়তাও কি আছে? এই যে পৃথিবীতে বাস করছি আমরা যেখানে নানা বৈষম্য বিদ্যমান, শ্রমিক তাঁর ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত, তাঁর জীবন যেখানে মূল্যহীন, যেখানে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা এবং ভেতরে ভেতরে চিৎকার- রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা হঠাৎ হঠাৎ বাইরে বেরিয়ে আসা দু-একটি চিৎকারেরও টুটি চেপে ধরা- এমন অস্থির সময়ে মানুষের মুক্তি কোথায়? গোটা বিশ্ব যেখানে পুঁজিবাদের দাস, সেখানে কার্ল মার্ক্স কি ফিরছেন এসব থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে নাকি তাঁর নামে চালু বদনামগুলো পরিস্কার করতে? এসবই জানা যাবে নাটকের নানা স্তরে, বোঝা যাবে শুধু একজন দার্শনিক নন, এক ব্যক্তি কার্ল মার্ক্সকেও।
দুনিয়ার অন্যতম জরুরি দার্শনিক কার্ল মার্ক্স, যিনি উনবিংশ শতাব্দী থেকে আজও মানুষের সমাজের ইতিহাস ও রাজনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছেন তাকে নিয়ে নাটক মার্ক্স ইন সোহো বা সোহোতে মার্ক্স! হাওয়ার্ড জিন তাঁর সোহোতে মার্ক্স নাটকে দুনিয়া কাঁপানো চিন্তক মানুষটির দৈনন্দিন প্রেম বা খেদের ভেতর দিয়ে সত্যিকারের একজন মানবিক স্বাপ্নিক দ্রষ্টার ছবি এঁকেছেন। এর পেছনে জিনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মার্ক্স নন, বরং মার্ক্সের চিন্তা বা বিশ্লেষণ। দেড়শো বছর পেরিয়ে এসেও কী অসামান্য প্রাসঙ্গিক এবং জরুরি সেসব চিন্তা সেটা দেখানোই জিনের উদ্দেশ্য। নাটকটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বটতলার সাথে যুক্ত হয় যাত্রিক।
বটতলা এবং যাত্রিক-এর এই যৌথতা জিনের দেখা মানবিক মার্ক্সকে এবং তাঁর অসামান্য বিস্ফোরক বিপ্লবী চিন্তাকে আরও বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে এটুকুই প্রত্যাশা।