রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশি ইয়াসিন মিয়া শেখ (২২) নিহত হয়েছেন বলে খবর এসেছে। এর পর থেকে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম। ইয়াসিন গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তার শেখের ছেলে। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছর কোম্পানি ভিসায় রাশিয়া যান ইয়াসিন। কাজের ভালো সুযোগ না পেয়ে যোগ দেন রুশ সেনাবাহিনীতে। শর্ত ছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সম্মুখসারিতে থাকার। যুদ্ধ চলাকালে নিয়মিত যোগাযোগ হলেও ঈদের আগের দিন থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইয়াসিনের। রাশিয়ায় অবস্থানরত পরিচিতজনরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এর পরই খবর আসে, যুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর গুলিতে ইয়াসিন নিহত হয়েছেন।

মামা আবুল হাসিম জানান, রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের প্রতিবেশীরা ফোন করে বড় ভাই রুহুল আমিনকে বলেছেন, যুদ্ধে যাওয়ার পর থেকে ইয়াসিনের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তারা। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ। ইয়াসিনের ইউনিটের কয়েক সেনাসদস্য গুলিতে মারা গেছেন। এ থেকে ইয়াসিনের পরিণতিও একই হয়েছে বলে তাদের ধারণা।

গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিনের বাল্যবন্ধু মো.

আরিফ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি এবং ভিডিও নিয়মিত নিজের ফেসবুকে দিত ইয়াসিন। কিন্তু ঈদের দিন থেকে আমরা তাঁর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর পাচ্ছি। ইয়াসিনের পরিবারও খবরকে সত্যি ধরে নিয়েছে।

তিনি বলেন, ইয়াসিনের বাবা মারা গেছেন ২০১৬ সালে। বড় ভাই তাঁর বিদেশে যাওয়ার জন্য ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। একটি কোম্পানিতে কাজের কথা থাকলেও গত ২২ ডিসেম্বর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ইয়াসিন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন ইয়াসিনের বাড়িতে গিয়ে লোকের ভিড় দেখা যায়। ছেলের মৃত্যুর খবরে মা ফিরোজা খাতুন বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজন তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। জ্ঞান ফেরার পর ফিরোজা খাতুন বিলাপ করে বলছেন, বিদেশে যাওয়ার পর ইয়াসিন কোনো টাকা পাঠায়নি। 

আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি। কয়েক দিনের মধ্যে টাকা পাঠাবে বলেছিল। ইয়াসিন সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধে যাবে জানলে বিদেশে পাঠাতাম না। সরকারের কাছে দাবি, ছেলের লাশ যেন আমার কাছে ফেরত দেওয়া হয়। দেশের মাটিতে তাকে যেন দাফন দিতে পারি!

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বোয়ালখালীতে অস্ত্র-গুলিসহ ৪ জন আটক

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১৪ রাউন্ড এ্যামোনিশন (গুলি), দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও নগদ টাকাসহ ৪ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সালাহ উদ্দিন আল মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বোয়ালখালী সেনা ক্যাম্প কমান্ডার মেজর রাসেল জানান, অভিযান চালিয়ে শ্রীপুর-খরণদ্বীপ এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে শহিদুল আলম (৩৮), মো. জানে আলম নান্নু (৪০), জুবায়েদ আকবর (২৬) ও মো. মোর্শেদকে (৪৭) আটক করা হয়। 

তাদের কাছ থেকে ৪ রাউন্ড রাইফেল এ্যামোনিশন (গুলি), ১০ রাউন্ড শটগান এ্যামোনিশন (গুলি), ২১টি দেশীয় অস্ত্র, নগদ ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪২৫ টাকা, ২৫টি মোবাইল সেট ও ৩টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

জব্দ মালামালসহ আটকদের বোয়ালখালী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, এ বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ