চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এহসান-এ খানের মায়ের জানাজা শেষে শোক ব্যানার টানানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ডাকপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, আজ দুপুরে কর্ণফুলী ডাকপাড়া এলাকায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এহসান-এ খানের মায়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়া, সদস্যসচিব মুহাম্মদ ওসমানসহ কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা শেষে ডাকপাড়া এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামের পক্ষ থেকে তাঁর সমর্থকেরা একটি শোক ব্যানার টানিয়ে দিলে কিছুক্ষণ পরে ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন কয়েকজন যুবক। ওই সময় ব্যানার নামানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে উত্তেজনা ও পরে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিনের সমর্থক যুবদল কর্মী মির্জা আতাউল্লাহ, ছাত্রদল কর্মী মো.

রাকিব ও মো. আরফাত এবং সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামের সমর্থক যুবদল কর্মী আহমদ নুর, আবদুল হালিম, আবদুল আজিজ ও লোকমান আহত হন। দুই পক্ষের মারামারির সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পিএবি সড়কে কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে কর্ণফুলী থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার সময় ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন মো. মহিউদ্দিন নামের স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ শরিফ বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি, ততক্ষণে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে পড়ে। ওই সময় আহত সাংবাদিকের ঘরেও গিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, এখনো কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিনের অনুসারী ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মুহাম্মদ ওসমান বলেন, ‘জানাজা পড়তে এসে হামলা চালানো হলে আমাদের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়ার ব্যানার রেখে আমার ব্যানার ছিঁড়ে ফেললে বাগ্‌বিতণ্ডা ও সংঘর্ষ হয়। এতে আমার কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স স ঘর ষ এল ক য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘এই টাকা দিলে মান-সম্মান থাকে?’ বলা সেই ওসিকে বদলি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় ‘ঘুষ’ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওসি এনায়েত হোসেনকে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে।

বদলি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওসির টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্টেপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তিকে বলছেন, ‘এই টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ এ সময় ওসির সামনে আরও দুই-তিনজনকে বসে থাকতে দেখা যায়।

জানা গেছে, উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে ওসির কথোপকথনের ভিডিওটি কেউ ধারণ করেন। কোনো ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল দিনব্যাপী কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপরই তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হলো।

এর আগে গত বুধবার ওসি এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে ডাকযোগে অভিযোগ দেন যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সম্পাদক সালাউদ্দিন মোল্লা ও ভূক্তভোগী এক নারী। অভিযোগপত্রে সালাউদ্দিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে গত ১১ এপ্রিল শ্যামলদী গ্রামে অনুমোদনহীন বাউল গানের আসর টাকার বিনিময়ে চলার অনুমতি দেন।

এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সরে যান ওসি এনায়েত হোসেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা মুখে পড়েন ওসি। এ ছাড়া অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় জিসাসে’র সহসাংগঠনিক রিয়াজুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী আনোয়ারা আক্তার বেবী।

অভিযোগে আনোয়ারা উল্লেখ করেন, তার স্বামী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের অনুসারী। দুপ্তারা বাজারে তার ছবি সংবলিত ব্যানার টানাতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এর প্রতিবাদ করলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। রাতে তোরণটি ভেঙে অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালান। ফাঁকা গুলি ছুড়ে ঘণ্টাব্যাপী এলাকায় তাণ্ডব চালান হামলাকারীরা। 

এ ঘটনার পর আড়াইহাজার থানায় অভিযোগ দিতে গেলে না নিয়ে উল্টো টাকা দাবি করেন ওসি এনায়েত হোসেন। পরবর্তীতে থানার সহযোগিতা না পেয়ে এলাকা ছেড়ে স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আনোয়ারা আক্তার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ