কোরিয়ান ড্রামা বা কে-ড্রামা সারা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার আকর্ষণীয় কাহিনি ও চরিত্রের কারণে। কে-ড্রামা ওটিটি মাধ্যমের কারণেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ভারতেও কম জনপ্রিয় নয়। ওটিটিতে জনপ্রিয়তা পাওয়া ভারতীয় পাঁচটি ওয়েব সিরিজ ও সিনেমার কথা চলুন জেনে নিই, যেগুলো কোরিয়ান ড্রামা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

‘গেয়ারাহ গেয়ারাহ’
জিফাইভে ২০২৪ সালে মুক্তি পাওয়া ফ্যান্টাসি থ্রিলার সিরিজটি কোরিয়ান শো ‘সিগন্যাল’-এর রিমেক। এতে আকাশ দীক্ষিত, ধাইরা কারওয়া, রাঘব জুয়েল, কৃতিকা কর্মা প্রমুখ অভিনয় করেছেন। এটি একটি গোয়েন্দা থ্রিলার, যেখানে রহস্য সমাধানে বিজ্ঞানেরও সাহায্য নেওয়া হয়। এটি পরিচালনা করেছেন উমেশ বিস্ট।

‘দুরঙ্গা’
জনপ্রিয় কোরিয়ান ড্রামা ‘ফ্লাওয়ার অব এভিল’-এর ভারতীয় সংস্করণ ‘দুরঙ্গা’। প্রদীপ সরকার ও আইজাজ খান পরিচালিত সিরিজটির প্রথম সিজন ২০২২ সালে ১৯ আগস্ট জিফাইভে মুক্তি পায়। গুলশান দেবাইয়া ও দ্রাষ্টি ধামি এতে অভিনয় করেন। প্রথম সিজন মুক্তির পর জনপ্রিয়তার কারণে দ্বিতীয় সিজনও নির্মাণ করা হয় এবং একই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর মুক্তি দেওয়া হয়।

‘আ লিগ্যাল অ্যাফেয়ার’
জি চ্যাং-উক ও নাম জি-হিউন অভিনীত দর্শকপ্রিয় কোরিয়ান সিরিজ ‘সাসপিসিয়াস পার্টনার’-এর অফিশিয়াল সংস্করণ ‘আ লিগ্যাল অ্যাফেয়ার’। জিও সিনেমায় প্রচারিত হিন্দি সিরিজটিতে অঙ্গদ বেদির বিপরীতে অভিনয় করেছেন বারখা সিং।

‘ধামাকা’

হিন্দি থ্রিলার সিনেমা ‘ধামাকা’র লেখক ও পরিচালক রাম মাধবানি। ২০২১ সালে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে কার্তিক আরিয়ান একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মুম্বাইয়ের একজন সন্ত্রাসীর বিশেষ সাক্ষাৎকার নেওয়ার কারণে যেখানে আরিয়ানকে হুমকির মুখে পড়তে হয়। ‘ধামাকা’ ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া কোরিয়ান সিনেমা ‘দ্য টেরর লাইভ’-এর অফিশিয়াল সংস্করণ।

‘ব্লাইন্ড’

২০২৩ সালে জিও সিনেমায় মুক্তি পাওয়া ‘ব্লাইন্ড’-এর পরিচালক সোম মাখিজা। প্রযোজক হিসেবে ছিলেন সুজয় ঘোষ। ক্রিমিনাল থ্রিলার সিনেমাটিতে সোনম কাপুর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এ ছাড়া পূরব কোহলি, বিনয় পাঠক, লিলেত দুবে প্রমুখ আছেন সিনেমাটিতে। একই নামে ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া কোরিয়ান সিনেমার রিমেক ‘ব্লাইন্ড’। এতে সোনম কাপুর একজন অন্ধ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে অভিনয় করেছেন, যিনি একজন সিরিয়াল কিলারকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব পান।সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জনপ র য় পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সফটওয়্যার পাইরেসি বন্ধে দরকার সমন্বিত পদক্ষেপ

অধিকার হরণ ও অধিকার আদায় উভয়ের মাঝেই দুনিয়ার বহু কর্মকাণ্ড ঘটেছে। সামাজিক ভারসাম্য ও ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানুষের তৎপরতাও কম নয়। কিন্তু তার বিপরীত চেষ্টাও কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। এ জন্য আধুনিক বিশ্বে কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব আইনের উদ্ভব ঘটে। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় সমাজের দুষ্টচক্র শুধু মেধাজাত সম্পদের অধিকারই হরণ করছে না, বরং পরিসর 
বাড়িয়ে পাইরেসির মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে পুনরুৎপাদন করে মেধাসম্পদ, সৃজনশীলতা ও অর্থনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। সাম্প্রতিক বিশ্বে কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর সফটওয়্যার খাতেও পাইরেসি জেঁকে বসেছে।

মোটাদাগে, সফটওয়্যার হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম বা নির্দেশনার সমষ্টি, যা কম্পিউটার হার্ডওয়্যারকে বিভিন্ন কাজ করতে নির্দেশ দেয়। বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে মানুষ হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র, সংগীতসহ নানা ক্ষেত্রে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৃজন প্রতিভার প্রসার ঘটিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ২০২৩ সালে প্রণীত কপিরাইটে পূর্বতন আইনের সীমাবদ্ধতা কাটাতে আর্থসামাজিক অবস্থা আমলে নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সফটওয়্যার পাইরেসির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। কপিরাইট আইন ২০২৩-এর প্রথম অধ্যায়ের ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। 
সফটওয়্যার বানাতে সোর্স কোড লাগে, ভাষা লাগে। সোর্স কোডের মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপিত হয়। এ জন্য এর সুরক্ষায় কপিরাইট প্রয়োজন। যে কোনো ধরনের সফটওয়্যার চাহিদার প্রয়োজনে উন্নত ভার্সনের দরকার পড়ে। আপগ্রেড করে নতুন সংযোজিত মেধার জন্য নবায়নকৃত সফটওয়্যারও কপিরাইট করা যেতে পারে। তবে পুরোনো সফটওয়্যার মোটাদাগে ৫০ শতাংশের বেশি নতুন সংযোজন না হলে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারে।

সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে সোর্স কোড বিন্যাস করে নতুন নামে সামনে আসে। তখন এর সুরক্ষার জন্যও কপিরাইট আবশ্যক। সফটওয়্যারের সুরক্ষার জন্যও ন্যারেটিভের কপিরাইট প্রয়োজন, পাশাপাশি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য ব্র্যান্ড হিসেবে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এই দুই সুরক্ষা কবচ সফটওয়্যারের সুরক্ষা দেয়। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর সফটওয়্যার তৈরিতে প্রযুক্তিবিদরা যেমন মেধার কর্ষণে সৃজনের আনন্দ পান, বিপরীতক্রমে পর্দার আড়ালে থাকে পাইরেসি চক্র। তারাও প্রযুক্তির সহায়তায় পাইরেসির মাধ্যমে কপিরাইট লঙ্ঘন করে। 

সফটওয়্যার পাইরেসির ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নতুন কৌশল নেওয়া হচ্ছে। তাই আইনের মোটাদাগের পরিধির ভেতর সরল ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের কপিরাইট অফিস সফটওয়্যার পাইরেসির ক্ষেত্রে আইনের বিধির মান্যতার অনুশাসন ও অনুসরণ রক্ষা ছাড়াও কপিরাইট বোর্ড এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ইতোপূর্বে বিরোধ নিষ্পত্তির নজির রয়েছে। সফটওয়্যার পাইরেসির ক্ষেত্রে স্রষ্টা কিংবা বাণিজ্যিক ব্যবহারের স্বত্ব গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের জনতুষ্টির বিষয় অনেক সময় লোভী পাইরেট চক্রকে আরও প্রলুব্ধ করে।
উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় কিছু কোম্পানি অনেক সফটওয়্যার পাবলিক ডোমেন হিসেবে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। সেই সুযোগে সাধারণ গ্রাহক তুষ্ট হলেও অতিলোভী চক্র সংরক্ষিত সফটওয়্যার অবৈধ উপায়ে পাইরেসি করে আয় করতে চায়। বাংলাদেশে এই প্রবণতা এখন বেশ তীব্র। এ জন্য বর্তমান আইনের বুনন বেশ মজবুত ও প্রতিকার রক্ষায় সাজা ও দণ্ড পূর্বতন অবস্থার চেয়ে ঢের বেশি। কপিরাইট আইন ২০২৩-এর ষোড়শ অধ্যায়ে অনুচ্ছেদ ৭৮-এ দেওয়ানি, সপ্তদশ অধ্যায়ে ফৌজদারি প্রতিকারের বিধান আছে। ৮৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি চলচ্চিত্রের কপিরাইট বা এই আইনে বর্ণিত অন্য কোনো অধিকার ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’ 

বর্তমানে সফটওয়্যার পাইরেসির ফলে প্রযুক্তিবিদদের সৃজনের বিনিময়ে আনন্দ, স্বস্তি, স্বীকৃতি ও যথার্থ বিনিময়মূল্য দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে শুধু মেধাস্বত্বের স্রষ্টা নয়; পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপাতদৃষ্টিতে ব্যবহারকারী সুবিধা ভোগ করে, কিন্তু তারা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন। অনেক ক্ষেত্রে সামান্য অর্থ প্রদান করে অরিজিনাল সফটওয়্যার পাওয়া গেলেও পাইরেটেড কপির প্রতি নজর বাড়ছে। 
ব্যক্তিগত কাজে ড্রপবক্স অ্যাকাউন্ট খুলে তথ্য, ছবি, নথি ইত্যাদি ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা অনেকাংশে গুগল ড্রাইভের চেয়ে সহজতর। ধারণা করা হচ্ছে, সফটওয়্যারের ওপর নির্ভরতা আমাদের যাপিত জীবনে আরও থিতু হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে শুধু কপিরাইট আইনের বিধিবিধানের কঠোরতা নয়; জনসমাজে কপিরাইট আইনের ফাঁকফোকর না খুঁজে বরং তা মেনে চলা জরুরি।
এ জন্য বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ব্যাপারে পাঠ্যক্রম ও আলাদা বিভাগের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদবিষয়ক পাঠদানে তত্ত্বীয় দিকের চেয়ে প্রায়োগিক দিককে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক বিষয়টির গুরুত্ব থাকে। তবেই পাইরেসি প্রতিরোধে জাগরণ ঘটবে জনসমাজে। 

খান মাহবুব: কপিরাইট বিশেষজ্ঞ ও প্রাবন্ধিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামাসকে ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়, এমন গালি দিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস
  • ফিনটেক ও ই-কমার্স ইকোসিস্টেম: বাংলাদেশের নতুন বাণিজ্যবিপ্লব
  • মুনাফা কমলেও রেকর্ড লভ্যাংশের ঘোষণা বাটা শুর
  • বিসিসি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে জাপা প্রার্থী
  • ১০৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করল বাটা
  • কোহলি–আনুশকা থেকে পন্ত–ইশা: ভারতীয় ক্রিকেটারদের ‘লাভ স্টোরি’
  • সফটওয়্যার পাইরেসি বন্ধে দরকার সমন্বিত পদক্ষেপ
  • বিমানবন্দরে ৫৫ কেজি সোনা চুরির মামলাটি পিবিআই থেকে দুদকে হস্তান্তর
  • মেধাস্বত্ত্ব ফিরে পেতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ সিনেমার প্রযোজকরা
  • মাটি, পানি, খাবার থেকে দেহে ঢুকছে প্লাস্টিক