নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার ছাত্রলীগ নেতা, মুচলেকা দিয়ে মুক্তি
Published: 3rd, April 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে গণধোলাইয়ে শিকার হয়েছেন শরীফ মাহমুদ সান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। বিয়ের শেরওয়ানী আগুনে পুড়িয়ে ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর রেখে মুচলেকা নিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দিয়েছে এলাকাবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকেলে উপজেলার বাশতৈল ইউনিয়নের কটামারা গ্রামে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সান উপজেলার উত্তর পেকুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাশতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম। জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সানের কটামারা গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে এক বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে রেজিস্ট্রিও হয়। অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক থাকায় বিয়ে না করতে নানভাবে টালবাহানা করতে থাকেন তিনি। একপর্যায় গতকাল বুধবার শরীফের বিয়ের দিন ধার্য হয়। তিনি গোপনে বিয়ে ভাঙার ফন্দি করেন। দুপুরে বরযাত্রী কনের বাড়িতে যায়। খাওয়া শেষে শরীফ মাহমুদ সান মোবাইল ফোনে কাকে যেন বলেন, খাওয়া শেষ, প্রশাসনের লোকজন আসে না কেন? কনেপক্ষের এক লোক এ কথা শুনে ফেলেন। তিনি বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হৈচৈ পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বরসহ কয়েকজনকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখে এবং বরের পড়নের শেরওয়ানী খুলে আগুনে পুড়ে ফেলে ক্ষুব্ধ লোকজন।
পরে স্থানীয় মাতব্বর এবং দু’পক্ষের লোকজন সন্ধায় বিষয়টি নিয়ে সালিশে বসেন। সালিশে আলোচনা সাপেক্ষে দুই পক্ষই বিয়ে না হওয়ার ব্যাপারে একমত হন। বিয়ের দেনমোহর ও খোরপোশ বাবদ কনেকে ৯ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য ১৮ লাখ টাকার একটি চেকে শরীফের বাবা সাইফুল ইসলামের স্বাক্ষর রাখা হয়। ৯ লাখ দেওয়ার পর ওই চেক ফেরত দেওয়া হবে বরে জানা গেছে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাত্রলীগ নেতা শরীফ মাহমুদ সান।
কনের বাবার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা হয়েছে, তাতে আমরা খুবই মর্মাহত। এমন ঘটনা যাতে আর কারোর সঙ্গে না ঘটে।
বাশতৈল ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন খানের বলেন, ছাত্রলীগ নেতা নিজের বিয়ে ভাঙতে গিয়ে এ ধরনর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। স্থানীয়রা দু’পক্ষ নিয়ে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বরপক্ষকে ৯ লাখ জরিমানা করা হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান ছাত্রলীগ নেতা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা শুল্ক স্থগিত করায় ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ
যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাত ১২টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিশিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট মেনশন করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘৯০ দিনের শুল্ক স্থগিত করতে আমরা যে অনুরোধ করেছিলাম, তাতে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার বাণিজ্য এজেন্ডার সমর্থনে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রাখব আমরা।’
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিল, বুধবার রাতে তা তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, এই সময় দেশগুলোর পণ্যে পাল্টা শুল্ক ন্যূনতম ১০ শতাংশ কার্যকর হবে। তবে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ করে সোমবার ট্রাম্পকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন অধ্যাপক ইউনূস। চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশে শুল্ক-সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেন। এ ছাড়া গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসাসামগ্রীর মতো বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুনপাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প, এ সময় এই শুল্ক থাকছে ১০ শতাংশ৫১ মিনিট আগেট্রাম্পকে পাঠানো চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা আগামী প্রান্তিকের মধ্যে আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শেষ করব। এসব কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক সভার জন্য দয়া করে প্রয়োজনীয় সময় দেবেন। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করতে চাই যে বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করুন। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি আমাদের অনুরোধ রাখবেন।’
আরও পড়ুনপাল্টা শুল্ক তিন মাস স্থগিতের অনুরোধ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিলেন প্রধান উপদেষ্টা০৭ এপ্রিল ২০২৫চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এজেন্ডায় বাংলাদেশ পুরোপুরি সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে পুরো বিষয়টি দেখভাল করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। আমাদের প্রধান কর্মপন্থা হলো তুলা, গম, ভুট্টা, সয়াবিনসহ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য আমদানি বৃদ্ধি করা; যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের আয় ও জীবনযাত্রায় ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলার বাজারের প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করছি, যা পুরোপুরি শুল্কমুক্ত সুবিধা।’