যশোর শহরের পুলেরহাট এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলে থাকা বাবা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই পরিবারের আরও দুজনসহ তিনজন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পুলেরহাট চৌরাস্তা মোড়ে এ দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ লোকজন দুর্ঘটনাকবলিত বাসে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

নিহত দুজন হলেন খুলনার খালিশপুর মুজগুন্নী বাস্তুহারা এলাকার মিল্লাত গাজীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৫) ও তাঁর মেয়ে ঐশী (১০)। ওই মোটরসাইকেলে থাকা রুবেলের স্ত্রী জেসমিন (২৮) ও আরেক মেয়ে তায়েবা (৪) এবং পথচারী ওসমান আলী (১৯) গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত দুজনের লাশ একই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রুবেল হোসেন একটি মোটরসাইকেলে করে তাঁর স্ত্রী–কন্যাদের নিয়ে খুলনা থেকে যশোরের শার্শা উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। শহরের পুলেরহাট চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছালে ঝিকরগাছা থেকে ছেড়ে যশোরগামী একটি বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী চারজনই পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই রুবেল হোসেনের মেয়ে ঐশী মারা যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রুবেল হোসেনও মারা যান। রুবেলের স্ত্রী জেসমিন ও আরেক মেয়ে তায়েবাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় পথচারী ওসমান আলীও আহত হন। বিক্ষুব্ধ লোকজন বাসটিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের নাভারন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকন-উজ-জামান বলেন, বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। ওই পরিবারের আরও দুজনসহ তিনজন আহত হয়েছেন। নিহত দুজনের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বিক্ষুব্ধ লোকজন বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনদের খবর পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কেউ এখনো যশোরে পৌঁছাননি বলেও ওসি জানান।

ওসি জানান, বাসটিতে কোনো যাত্রী ছিল না। চালক তাঁর পরিবারের স্বজনদের নিয়ে গদখালীতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে মোটরসাইকেলের সঙ্গে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি

কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার পর এবার ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

ভারতের সামরিক সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানায়, রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের এলওসি বরাবর পাকিস্তানি সেনারা ভারতের কয়েকটি পোস্টে গুলি চালায়। এর জবাবে ভারতও গুলি চালায়।

নিরাপত্তা বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সঠিক জবাব দিয়েছে জানিয়েছে সূত্র আরও জানায়, ছোট অস্ত্র দিয়ে কিছু জায়গায় গুলি চালানো হয়েছিল। এ গোলাগুলিতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গত ২২ এপ্রিলের হামলায় পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা দাবি করে ওই ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও ‘শক্ত ও স্পষ্ট জবাব’-এর কথা বলেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে শক্ত জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিবেশী দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছে। চলছে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ