সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ২ থেকে ৪ বছর ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর-দক্ষিণ কোরিয়ার মতো হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এতবড় জনমত-জনসমর্থন নিয়ে কোনদিন কেউ আবির্ভূত হননি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরে সবচেয়ে সফল সরকার হবেন অধাপক ইউনূস।

তিনি আরও বলেন, সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন একটার সঙ্গে আরেকটা সাংঘর্ষিক নয়, পুরোটা মিলে হলো অন্তবর্তী সরকার, একাত্তরের মুক্তির লড়াই, আমার ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। সংস্কার আমরা সবাই চাই।

ফুয়াদ বলেন, তরুণদের যে আকাংক্ষাগুলো দেখেন; সেগুলো সেপারেট। কিন্তু দুটি মর্যাদার জায়গায় সমান। রাজনৈতিক দলের যে আকাক্ষা; সেটা ন্যায্য। আবার তরুণরা সংস্কারের যে আওয়াজ তুলছেন, সেটাও ন্যায্য। দেশের জনসংখ্যার ৬৫ ভাগের বয়স ৩৫-৪০-এর নিচে। তারা কখনোই ভোট দেননি। আবার রাজনৈতিক দলগুলোর বিশাল জনসংখ্যার সমর্থন আছে।

সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন সবগুলো মিলিয়ে সম্মিলিত রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনটাই হলো একটি সংস্কার, সংস্কার মানে হলো নির্বাচন। বিচার হলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্ত হলো শত্রু শ্রেণির বিচার করতে হবে। এগুলোর একটার সঙ্গে আরেকটার সম্পর্ক রয়েছে।

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক মতবিনিময়ের শুরুতে বলেন, তিনি প্রায় ২৫ বছর পর নিজ এলাকা বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ঈদ উদযাপন করেছেন। তিনি গত কয়েকদিন বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন। দুটি উপজেলাতেই সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থা খুব খারাপ। স্বাস্থ্যসেবা বলতে কিছু নেই। গ্রামীণ সড়কগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। এসবের উন্নয়নে তিনি সরকারের উচ্চমহলে দেনদরবার করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স বর শ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইবলিস জিন না ফেরেশতা

মানুষ সৃষ্টির আগে আল্লাহর সৃষ্টিতে ছিল ফেরেশতা ও জিন। ইবলিস আগুনের তৈরি। থাকত ফেরেশতাদের সঙ্গে। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করত। ফলে ইবলিস জিন নাকি ফেরেশতা—এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো; তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল ও অহংকার করল । তাই সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৪)

 ইবলিসকে সেজদা করতে বলার কারণ

ইবলিসকে কেন ফেরেশতাদের সঙ্গে সেজদা করতে আদেশ করা হলো, সে কি ফেরেশতা? আল্লাহতায়ালা আদমকে সৃষ্টির আগেই ফেরেশতাদের আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন।

আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আমি যখন আদমের সৃষ্টি সম্পন্ন করব এবং তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেও’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৭২)। তখন ইবলিস সেই মজলিশেই উপস্থিত ছিল। তাই ইবলিস ফেরেশতা না হলেও সে ওই আদেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

ইবলিস জিন হওয়ার প্রমাণ

ইমাম রাজি (রহ.) বলেন, ইবলিস জিনদের একজন, তার মৌলিক উপাদান আগুন। এ জন্য তিনি তিনটি দলিল উপস্থাপন করেছেন।

এক. ইবলিসের সৃষ্টি আগুন থেকে। কোরআনে এসেছে, ইবলিস বলেছে, ‘তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ আর তাকে (আদমকে) সৃষ্টি করেছ কাদা মাটি দিয়ে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১২)

দুই. ইবলিসের ছেলেমেয়ে আছে, সে বংশবিস্তার করে। ফেরেশতারা এর থেকে মুক্ত। তাদের স্ত্রী-সন্তান নেই। তাদের মধ্যে নেই নারী-পুরুষের বিভাজনও। অথচ আল্লাহ ইবলিস সম্পর্কে বলেছেন, ‘তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে ওকে ও ওর বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ?’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৫০)

তিন. ফেরেশতারা আল্লাহর সব আদেশ মেনে চলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাদের (ফেরেশতাদের) যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই করে।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬) আল্লাহ কোরআনে অধিকাংশ স্থানে ইবলিসকে ‘শয়তান’ বলে সম্বোধন করেছেন। শয়তান শব্দটি দিয়ে কট্টরভাবে অবাধ্য হওয়াকে বোঝায়। (আত-তাফসিরুল কাবির, ফখরুদ্দিন রাজি, ২/৪২৯-৩০)

আরও পড়ুনসুরা আর রাহমানে জিন ও মানবজাতি উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে১০ নভেম্বর ২০২৩

তা ছাড়া ‘আল্লাহতায়ালা জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুন থেকে’ (সুরা রহমান, আয়াত: ১৫), আর ফেরেশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নুর বা আলো থেকে (মুসলিম, হাদিস: ২,৯৯৬)।

ইবলিস কোন শ্রেণির জিন

ইবনে আব্দিল বার (রহ.) বলেছেন, জিনদের বিভিন্ন শ্রেণি রয়েছে, ১. সাধারণ জিনদের বলা হয় জিন্নি। ২. যেসব জিন মানুষের সঙ্গে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে, তাদের বলা হয় আমির। ৩. যেসব জিন বাচ্চাদের সামনে আবির্ভূত হয়, তারা আরওয়াহ। এটি রুহ শব্দের বহু বচন। ৪. যেসব জিন খারাপ হয়ে যায় এবং মানুষের ক্ষতি করতে চায়, তারা শয়তান। ৫. যেসব শয়তানের দুষ্কৃতি খুব বেড়ে যায়, তাদের বলে মারিদ। ৬. যারা শক্তিশালী ও দুশ্চরিত্র হয়ে ওঠে, তাদের বলা হয় ইফরিত। (আত-তামহিদ, ইবনে আবদিল বার, ১১/১১৭-১১৮)

আরও পড়ুনইবলিসের কাহিনি১২ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ