ঈদের আনন্দযাত্রা সড়কেই শেষ, পরিবারের ৫ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু
Published: 3rd, April 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম শামীম ও লুৎফুন নাহার দম্পতি। ঈদের ছুটিতে তিন মেয়ে প্রেমা, আনিশা ও লিয়ানাকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছিলেন কক্সবাজারে। এই যাত্রায় সঙ্গে ছিলেন তাঁদের ভাগনি তানিফা ইয়াসমিনও। পরিকল্পনা ছিল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে সবাইকে নিয়ে ঘুরবেন এবং ঈদের আনন্দ উপভোগ করবেন।
কিন্তু তাঁদের এই আনন্দভ্রমণ পরিণত হয়েছে বিষাদে। কক্সবাজার যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন রফিকুল ইসলামসহ তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য। আরেকজন মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বজনেরা বলছেন, ঈদের আনন্দ যে মৃত্যুর মিছিল হয়ে উঠবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে কক্সবাজারগামী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মাইক্রোবাসে থাকা রফিকুল ইসলাম (৪৮), তাঁর স্ত্রী লুৎফুন নাহার (৩৭), ছোট মেয়ে লিয়ানা ও ভাগনি তানিফা ইয়াসমিন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় মেজ মেয়ে আনিশাও। এখন টিকে আছেন শুধু বড় মেয়ে প্রেমা। প্রেমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে আছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কথা হয় রফিকুল ইসলামের শ্যালক রবিউল হাসানের (লুৎফুন নাহারের ছোট ভাই) সঙ্গে। তিনি জানান, রাতে চট্টগ্রাম থেকে নিহত স্বজনদের লাশ নিয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা ওই হাসপাতালে পৌঁছেছেন। এখন লাশ গোসল করিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রবিউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বোনের পরিবার ঈদের পরদিন (গত মঙ্গলবার) রাতে ঢাকা থেকে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসে কক্সবাজারে রওনা দিয়েছিল। সেখানে তাঁর বড় বোন, ভগ্নিপতি, তিন ভাগনি ও ভগ্নিপতির ভাগনি ছিলেন।
রবিউল হাসান বলেন, ‘গতকাল দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখি। কিন্তু প্রথমে শনাক্ত করতে পারছিলাম না। পরে আরও কিছু ছবি ও ভিডিও দেখতে পাই। বেলা দুইটার দিকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হতে পারি।’
রফিকুল ইসলাম একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন আর বোন ছিলেন গৃহিণী। মেজ ভাগনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। ছোটটি স্কুলে ভর্তি হয়নি।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত বেড়ে ১০০২ এপ্রিল ২০২৫সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রফিকুল ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
শিবগঞ্জ সীমান্তে পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বড় চালান আটক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে বিস্ফোরকের একটি বড় চালান আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চোরাইপথে ভারত থেকে আনা উপকরণ দিয়ে বানানো এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবির।
সীমান্ত বাহিনীটির দাবি, বোমাগুলো দেশীয়ভাবে তৈরির পর তা বন্দর এলাকা থেকে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে পাচার হওয়ার আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তা আটকে দেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চকপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৯টি ককটেল এবং ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের একটি আভিযানিক দল। রাত ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।
তিনি জানান, দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ চকপাড়া সীমান্তের ১৮৪ মেইন পিলার হতে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে কয়লাবাড়ি ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ দুই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় বিজিবির একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেলে একটি ক্যারেটে তল্লাশি চালিয়ে লাল স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৯৯টি ককটেল এবং অপর ক্যারেট থেকে ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, পেট্রোল বোমাগুলো কোকাকোলা বা এ ধরনের কাঁচের বোতলে বানানো হয়েছে এবং ককটেলগুলো জর্দ্দার কোটায় দেশীয় প্রযুক্তিতে বানানো হয়েছে।
অধিনায়কের দাবি, এসব বিস্ফোরক ভারত থেকে না আনলেও গান পাউডারসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক উপকরণ সীমান্ত দিয়ে আনার পর সন্ত্রাসীরা সীমান্ত এলাকায় বোমা তৈরির পর সেগুলো সোনামসজিদ বন্দর রুট ব্যবসার করে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্রাকে করে দেশের অভ্যন্তরে পাচারের চেষ্টা করছিল। তবে গোয়েন্দা নজরদারির কারণে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এসব কাজে জড়িতদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। এ ঘটনায় জব্দকৃত বোমাগুলো শিবগঞ্জ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।